বিএনপি’র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘করোনা মোকাবেলায় যেমন এই সরকারের অবহেলা ও দুর্নীতি গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে ঠেলে দিয়েছিল, ঠিক তেমনি এই ভয়াবহ বন্যা নিয়েও সরকারের নির্লিপ্ততা-নিষ্ক্রিয়তা মানুষকে আতঙ্কগ্রস্ত করেছে। প্রতিটি দুর্যোগের সময়ে, জনগণের কষ্টের সময়ে, সরকার ব্যস্ত হয়ে যায় উৎসব নিয়ে আনন্দে। করোনায় যখন মানুষের জীবন-মরণ লড়াই চলছিল তখন জন্মশতবার্ষিকীর উৎসবে মত্ত ছিল তারা। এখন মৌজ মাস্তি করছে পদ্মা সেতু নিয়ে।’
আজ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতুর মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সারাদেশে একযোগে বিগ স্ক্রিনে দেখাতে হবে। সরকার সারাদেশের মানুষকে নির্দেশ দিয়েছে আনন্দ উৎসব করতে। আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পদ্মার দুই প্রান্তের সমাবেশে লাখ লাখ লোক জমায়েত ঘটাতে। কয়েক হাজার বাস রিকুইজিশন করা হয়েছে। তিন শ’ লঞ্চ রিকুইজিশন করা হয়েছে। জনসভাস্থলে পাঁচ শ’ টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে ৪০ ফুট উচ্চতার দুটি ম্যুরাল নির্মাণ করা হচ্ছে। যারা উৎসবে অংশ নিতে অনীহা দেখাবে তাদেরকে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। দুই প্রান্তে থানা করা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য হাজার হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে।
রিজভী বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধন উৎসবের নামে শত শত কোটি টাকা উড়ানো হচ্ছে। অথচ সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও উত্তরাঞ্চলসহ বন্যা উপদ্রুত এলাকাসমূহে প্রায় কোটি পানিবন্দি মানুষের সাহায্যের জন্য সরকারি বরাদ্দ একেবারেই অপ্রতুল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এর মধ্যে সিলেটে দুই শ’ টন চাল, নগদ ৩০ লাখ টাকা, আট হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি পদ্মা সেতু নিয়ে উৎসব বন্ধ করুন। এই লোক দেখানো ভোজবাজি বন্ধ করুন। আমরা দাবি করছি, বন্যা কবলিত অঞ্চলগুলোকে দুর্গত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হোক এবং কোনো বিলম্ব ছাড়া এই অঞ্চলগুলোর জনগণের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হোক। আমরা অবিলম্বে সরকারকে বন্যাকবলিত এলাকাগুলো গিয়ে দুর্গত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করে এবং বন্যা যেন না হয় সেটার ব্যবস্থা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’