পুতুল সন্তানকে লালন-পালন করেন যে দেশের মায়েরা

একটি শিশুর জন্য অনেক দম্পতিই নানা রকম পদ্ধতি অবলম্বন করে। তবুও অনেক নারীই মা হতে পারেন না, সন্তানের জন্য তারা এক সময় পাগলের মতো হয়ে যান। দুশ্চিন্তার কারণে মানসিক রোগী হয়ে ওঠেন।

 

পৃথিবীতে উর্বরতার হার নিম্নতম দেশগুলোর মধ্যে একটি হলো পোল্যান্ড। সেদেশের যেসব নারীরা মা হতে পারেন না, তারা বিকল্প এক পদ্ধতি বেছে নেন।

এমন নারীরা বাস্তবে শিশুর মা হতে না পারলেও পুতুল শিশুকে কিনে নেন লালন-পালনের জন্য। যা খুবই উদ্ভট এক ঘটনা। এসব পুতুলকে বলা হয় ‘রিবর্ন ডল’।

32

বাংলায় বলা যেতে পারে পুনর্জন্মপ্রাপ্ত পুতুল। এগুলো এতোটাই নিখুঁতভাবে তৈরি করা হয় যে, যে কেউ বাস্তবের শিশু ভেবে ভুল করবেন। এসব শিশু সত্যিকারের নবজাতকের মতোই দেখতে।

 

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, এসব পুতুলের দাম ২০-২২ হাজার ডলার। এতো দাম দিয়ে রিবর্ন ডল কিনে নিজের শিশুর মতোই লালন-পালন করেন সন্তানহীন নারীরা।

তারা পুতুলদের সন্তানকে আসল বাচ্চার মতোই যত্ন নেন, জন্ম উপলক্ষে অনুষ্ঠান করেন, অনেক পুতুলের হৃদস্পন্দনও থাকে। এই পুতুল-শিশুদের গ্রহণের পর এসব মায়েরা যে উপকার পেয়েছেন, তা সবাইকে বিস্মিত করেছে।

21

যে নারীদের জীবনে বন্ধ্যাত্ব, মিসক্যারেজ বা শিশুসন্তানের মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটেছে, তাদের দুশ্চিন্তা বা বিষণ্ণতা দূর করার ক্ষেত্রে চিকিৎসার মতো কাজ করে এই নকল শিশু।

পোলিশ শিল্পী বারবারা স্মলিনস্কা এ ধরনের পুতুল বানিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, ‘এই পুতুলগুলো ভিনাইল দিয়ে তৈরি করা হয় খুবই সুক্ষ্মভাবে।’

 

‘এই পুতুলগুলো তৈরির কাজ শুরু হয় ১৯৯০ সালের দিকে। অনেক নারীই মানসিকভাবে সুস্থ হতে এই পুতুল থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করেন।’

221

ওলগা নামের এক নারী, যিনি একজন কপিরাইটার ও শিক্ষিকা। তিনিও একটি পুতুল সন্তানের মা। তার মতে, ‘গর্ভধারণের ৬ সপ্তাহ পর আমার মিসক্যারেজ হয়।’

‘আমি এর ধকল সামলাতে পারিনি। মনোবিজ্ঞানী, মনোচিকিৎসকের কাছে যাই। নানা ধরনের ওষুধ খাই, তবুও কাজ হচ্ছিলো না।

 

‘যখনই এই পুতুলটা পেয়েছিলাম, আমার মনে যে কী আনন্দ হয়েছিলা তা বোঝাতে পারবো না। একেবারেই হবহু সত্যিকারের নবজাতকের মতো ছিলো দেখতে।’

/.;

‘আমার যে সন্তানের মিসক্যারেজ হয়েছিলো সেটিই এই শিশু- এই ভেবে নিজেকে শান্ত করেছিলাম। নিজের সন্তানের মতোই তার দেখভাল করতে শুরু করি।’

ওলগা আরও বলেন, ‘এর কয়েক মাস পর থেকে আমি পুতুলটিকে কোলে নেওয়া বন্ধ করে দেই। আসলে তখন আর সেগুলো করার প্রয়োজন অনুভব করছিলাম না।

 

‘ততদিনে মানসিকভাবে আমি অনেকটাই শক্ত হয়ে গিয়েছি। এরপর আমি পুতুলটিকে আরেকজনের উপকারের জন্য বিক্রি করে দেই।’

সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জাতি হিসেবে আমাদের সকল প্রাপ্তির দ্বার উন্মোচন করে গেছে মুজিব নগর সরকার-ধর্মমন্ত্রী

» ইসলামপুরে হিট স্ট্রোকে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

» ব্র্যাক ব্যাংক ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের দুই মাসে ২,৫০০ কোটি টাকা নিট ডিপোজিট প্রবৃদ্ধি অর্জন

» চলমান বিডিএস এর আওতায় গ্রাউন্ড পয়েন্ট স্থাপনের কাজ শেষ, শীঘ্রই ম্যাপ তোরির কাজ শুরু

» ৬১ বিজিবি তিস্তা ব্যাটালিয়ন-২ কর্তৃক হাতীবান্ধায় অর্ধকোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস

» লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বৃষ্টি জন্য বিশেষ নামাজ আদায়

» পলাশে প্রেমিকাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে প্রেমিক গ্রেপ্তার

» আরো কর্মী নিতে কাতারের আমিরের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান

» সোনার দাম ভ‌রিতে কমলো ৩১৩৮ টাকা

» বান্দরবানের তিন উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পুতুল সন্তানকে লালন-পালন করেন যে দেশের মায়েরা

একটি শিশুর জন্য অনেক দম্পতিই নানা রকম পদ্ধতি অবলম্বন করে। তবুও অনেক নারীই মা হতে পারেন না, সন্তানের জন্য তারা এক সময় পাগলের মতো হয়ে যান। দুশ্চিন্তার কারণে মানসিক রোগী হয়ে ওঠেন।

 

পৃথিবীতে উর্বরতার হার নিম্নতম দেশগুলোর মধ্যে একটি হলো পোল্যান্ড। সেদেশের যেসব নারীরা মা হতে পারেন না, তারা বিকল্প এক পদ্ধতি বেছে নেন।

এমন নারীরা বাস্তবে শিশুর মা হতে না পারলেও পুতুল শিশুকে কিনে নেন লালন-পালনের জন্য। যা খুবই উদ্ভট এক ঘটনা। এসব পুতুলকে বলা হয় ‘রিবর্ন ডল’।

32

বাংলায় বলা যেতে পারে পুনর্জন্মপ্রাপ্ত পুতুল। এগুলো এতোটাই নিখুঁতভাবে তৈরি করা হয় যে, যে কেউ বাস্তবের শিশু ভেবে ভুল করবেন। এসব শিশু সত্যিকারের নবজাতকের মতোই দেখতে।

 

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, এসব পুতুলের দাম ২০-২২ হাজার ডলার। এতো দাম দিয়ে রিবর্ন ডল কিনে নিজের শিশুর মতোই লালন-পালন করেন সন্তানহীন নারীরা।

তারা পুতুলদের সন্তানকে আসল বাচ্চার মতোই যত্ন নেন, জন্ম উপলক্ষে অনুষ্ঠান করেন, অনেক পুতুলের হৃদস্পন্দনও থাকে। এই পুতুল-শিশুদের গ্রহণের পর এসব মায়েরা যে উপকার পেয়েছেন, তা সবাইকে বিস্মিত করেছে।

21

যে নারীদের জীবনে বন্ধ্যাত্ব, মিসক্যারেজ বা শিশুসন্তানের মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটেছে, তাদের দুশ্চিন্তা বা বিষণ্ণতা দূর করার ক্ষেত্রে চিকিৎসার মতো কাজ করে এই নকল শিশু।

পোলিশ শিল্পী বারবারা স্মলিনস্কা এ ধরনের পুতুল বানিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, ‘এই পুতুলগুলো ভিনাইল দিয়ে তৈরি করা হয় খুবই সুক্ষ্মভাবে।’

 

‘এই পুতুলগুলো তৈরির কাজ শুরু হয় ১৯৯০ সালের দিকে। অনেক নারীই মানসিকভাবে সুস্থ হতে এই পুতুল থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করেন।’

221

ওলগা নামের এক নারী, যিনি একজন কপিরাইটার ও শিক্ষিকা। তিনিও একটি পুতুল সন্তানের মা। তার মতে, ‘গর্ভধারণের ৬ সপ্তাহ পর আমার মিসক্যারেজ হয়।’

‘আমি এর ধকল সামলাতে পারিনি। মনোবিজ্ঞানী, মনোচিকিৎসকের কাছে যাই। নানা ধরনের ওষুধ খাই, তবুও কাজ হচ্ছিলো না।

 

‘যখনই এই পুতুলটা পেয়েছিলাম, আমার মনে যে কী আনন্দ হয়েছিলা তা বোঝাতে পারবো না। একেবারেই হবহু সত্যিকারের নবজাতকের মতো ছিলো দেখতে।’

/.;

‘আমার যে সন্তানের মিসক্যারেজ হয়েছিলো সেটিই এই শিশু- এই ভেবে নিজেকে শান্ত করেছিলাম। নিজের সন্তানের মতোই তার দেখভাল করতে শুরু করি।’

ওলগা আরও বলেন, ‘এর কয়েক মাস পর থেকে আমি পুতুলটিকে কোলে নেওয়া বন্ধ করে দেই। আসলে তখন আর সেগুলো করার প্রয়োজন অনুভব করছিলাম না।

 

‘ততদিনে মানসিকভাবে আমি অনেকটাই শক্ত হয়ে গিয়েছি। এরপর আমি পুতুলটিকে আরেকজনের উপকারের জন্য বিক্রি করে দেই।’

সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com