রিকশাযাত্রীদের কাছ থেকে ব্যাগ বা মুঠোফোন ছোঁ মেরে নিয়ে যান তারা। এ কাজে ব্যবহার হয় দামি একটি মোটরসাইকেল। এই ছিনতাই চক্রের যিনি মোটরসাইকেল চালক, তিনি পথঘাট চেনাসহ মোটরসাইকেল চালনোয় বেশ দক্ষ। তাকে বলা হয় ‘পাইলট’। আর ক্ষিপ্রতার সঙ্গে ব্যাগ ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন বলে পেছনের আরোহীকে ডাকা হয় ‘ইগল’ নামে। এই ছিনতাই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
জানা গেছে, পাইলট ও ঈগল ছিনতাইয়ের জন্য রিকশা আরোহীদের টার্গেট করে মোটরসাইকেলে অনুসরণ করত। এরপর সুবিধামতো জায়গায় গেলেই আচমকা পেছন থেকে এসে রিকশা আরোহীর ব্যাগ ছোঁ মেরে নিয়ে পালিয়ে যেত তারা।
গ্রেপ্তাকৃতরা ওই চার সদস্য হলেন- লেলিন শেখ, আশরাফুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান খান ও সাইফুল ইসলাম শাওন। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি মোটরসাইকেল, ছিনতাই করা ৩৪ লাখ টাকা, চার হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে।
এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গত ১৪ ডিসেম্বর মিরপুর এলাকায় এক সরকারি কর্মকর্তার ১১ লাখ টাকা ছিনতাই করা হয়। ঘটনার তদন্তে ডিবি জানতে পারে এ ছিনতাইয়ে লেলিন শেখ ও আশরাফুল ইসলাম জড়িত ছিলেন। এরপর ৪ মার্চ মিরপুর ১১ নম্বরে আরেক ব্যক্তির ৪ লাখ টাকা ছিনতাই করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ ছিনতাইয়ে জিল্লুর রহমান ও সাইফুল ইসলাম শাওনকে শনাক্ত করা হয়।
পৃথক দুটি ঘটনায় পল্লবী থানায় মামলা করার পর রোববার (১ মে) পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুটি ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেন। তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ে ১৫ লাখ টাকাসহ ৩৪ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট-বড় শতাধিক ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেছে বলেও জানান হাফিজ আক্তার।
ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, আশরাফুল ইসলাম ওরফে ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি ধানমন্ডির একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে টেক্সটাইল কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কোম্পানির মিনি ট্রাক চালক লেলিন শেখের সঙ্গে পরিচয় সূত্রে তিনি ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়েন।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে আশরাফ ও জিল্লুর পাইলট এবং লেলিন ও শাওন ঈগল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশরাফ ছাড়া বাকি তিনজনই বিভিন্ন সময় চালক হিসেবে কাজ করেছেন। মাদক সেবন ও ফুর্তি করতে বেশি টাকার আশায় সুযোগ পেলেই তারা নিয়মিত ছিনতাই করেন।