আইজ শুক্রবার জুমার দিন আর রাতে শবে বরাত। হাজার হাজার মানুষ আজ বাবা-মা, ভাই-বোন, বন্ধু ও স্বজনদের কবর জিয়ারত করতে কবরস্থানে আইবো। যারা আইবো তারা ফকির-মিসকিনদের টাকা পয়সা দান খয়রাত করবো। প্রতি বছর দেরিতে আসায় বসার জন্য ভালো জায়গা পাই না। এ কারণে আজ ফজরের নামাজের পরপর গেটের সামনে আইয়া পড়ছি।’
শুক্রবার (১৮ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানের দক্ষিণ গেটের পাশে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলছিলেন নরসিংদীর রায়পুরার বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ্ব মকবুল মিয়া।
প্রতি বছরের মতো এ বছরও মকবুল শবে বরাত উপলক্ষে ঢাকায় এসেছেন। বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে ঢাকায় এসেছেন তিনি। আজ (শুক্রবার) সকাল থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত দান খয়রাত হিসেবে যা আয় হবে তা নিয়ে গ্রামে ফিরে যাবেন।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মকবুল মিয়া জানান, তার এক আত্মীয় সারাবছরই আজিমপুর কবরস্থান গেটে ভিক্ষা করেন। গত কয়েক বছর ধরে তার মাধ্যমেই শবে বরাত ও ঈদসহ বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে এখানে আসেন মকবুল। যা আয় হয় তার একটা অংশ ওই আত্মীয়কে দিয়ে যান।
শুধু মকবুল মিয়া একা নন, তার মতো অসংখ্য হতদরিদ্র মৌসুমি ভিক্ষুক আজ সকাল থেকে আজিমপুর কবরস্থানে ছুটে আসছেন। তাদের কেউ পুরাতন কবরস্থানের উত্তর ও দক্ষিণ গেটের বাইরে আবার কেউ কবরস্থানের ভেতরে আবার কেউবা রাস্তায় জায়গা দখল করছেন।
মৌসুমি ভিক্ষুকদের কয়েকজন জানান, গত দুই বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে আয় খুব একটা ভালো হয়নি। করোনার আগের তুলনায় গত দুইবছর মানুষের উপস্থিতি এখানে কম ছিল। তাছাড়া করোনা সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই ভিক্ষুকদের সমাগম বেশি এমন স্থান এড়িয়ে গেছেন। তবে এ বছর করোনা সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে কম থাকায় আয় রোজগার ভালো হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, আজিমপুর কবরস্থানের উত্তর ও দক্ষিণ গেটের সামনে ভিক্ষুকরা জায়গা দখল করে বসে আছেন। উত্তর দিকের গেটের পাশে স্থানীয় একটি মসজিদের জন্য অর্থ সংগ্রহে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে।
আজিমপুর কবরস্থানের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন ভিক্ষুকের সংখ্যা কম হলেও বিকেল নাগাদ রাসস্তাঘাট ভরে যাবে।
পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জের এক বাসিন্দা সকাল সাড়ে ৭টায় মা-বাবার কবর জিয়ারত করে ফিরে যাচ্চিলেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আজ জুমার দিন ও শবে বরাতের রাত হওয়ায় দুপুর ও বিকেলে কবর জিয়ারত করতে আসতে সাহস পাচ্ছিলাম না। কারণ ওই সময় প্রচণ্ড ভিড় হবে। তাই সকালে এসে মা-বাবার কবর জিয়ারত করে গেলাম। সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম