ঢাকাকে বাসযোগ্য-উন্নত করতে চাই : তাপস

ছবি : সংগৃহীত

 

রাজধানী ঢাকাকে বাসযোগ্য ও উন্নত সিটিতে পরিণত করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

 

রোববার (৪ জুন) রাজধানীর শ্যামপুরে অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।

 

মেয়র তাপস বলেন, আমরা চাই ঢাকাকে পরিকল্পিত বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে। পুরান ঢাকার রাসায়নিক দ্রব্যগুলো স্থানান্তর করতে এই গুদাম ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি আশা করব রাসায়নিক দ্রব্য নিয়ে দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন হবে। ব্যবসায়ীদের মতামত এখানে নিতে হবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে একটি নীতিমালা দ্রুত করতে হবে। রাসায়নিক গুদামগুলো দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে।

 

তিনি বলেন, একটি সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রাসায়নিক পণ্যর সব দোকানের মালামালগুলো দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে। তবে এই নীতিমালা যেন ব্যবসায়ী বান্ধব হয়। এখানে তারা গুদামে আসবেন সেক্ষেত্রে কিন্তু তাদের এখানেও বিনিয়োগ করতে হবে। তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তারা যেন উৎসাহী হোন। ‍কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও যেন তাদের এখানে আসতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এমনভাবে যেন কোনও নীতিমালা করা না হয়, যেন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হোন। এখন এখানে ৫৪টি গুদামের মালামাল স্থানান্তর করা যাবে। পরবর্তী সময়ে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এছাড়া আরও যেখানে স্থানান্তর করা হবে সেখানেও যেন ব্যবসায়ীরা উৎসাহের সঙ্গে স্থানান্তর হয়, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরান ঢাকার অনেক ঐতিহ্য আছে, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা আছে। এসবকে ঘিরেই পুরান ঢাকার অংশকে একটি পর্যটন নগরীর রূপ দিতে পারি। আমরা একটি ঐতিহ্যের বলয় তৈরি করতে চাই। এখানে যেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এসে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে পারেন, পাশাপাশি দেখতে পারে পুরান ঢাকাকে। তারা পুরান ঢাকার ঐতিহ্যকে উপভোগ করবেন, খাওয়া দাওয়া করবেন। এতে ঢাকার বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। সেই লক্ষ্যে পুরান ঢাকার রাসায়নিক কারখানাগুলো শ্যামপুরের গুদামে স্থানান্তর হয়ে যাবে। আমরা চাই অগ্নিকাণ্ডমুক্ত, দুর্যোগ ও দুর্ঘটনামুক্ত একটি নগরী। এই লক্ষ্যে আমরা শ্যামপুর গুদামে এসব স্থানান্তর করার কাজ করছি।

 

জানা গেছে, পুরান ঢাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রাসায়নিক কারখানা ও গুদামগুলো নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরের উদ্যোগ হিসেবে রাজধানীর পুরান ঢাকার শ্যামপুরে ৬ দশমিক ১৭ একর জমির ওপর ৭১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫৪টি অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। গুদামগুলো উদ্বোধন হলো আজ রোববার (৪ জুন)।

 

মূলত শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) উদ্যোগে ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম’ প্রকল্পের মাধ্যমে পুরাতন ঢাকার শ্যামপুরে অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ করা হয়।

 

২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিক পদার্থের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হন। পরবর্তী সময়ে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। সেদিনের ঘটনায় ৭৮ জন প্রাণ হারান। এ দুটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সরকারের টনক নড়ে। ভবিষ্যতে রাসায়নিক কারখানা ও গুদামে বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে লক্ষ্যে সরকার পুরান ঢাকায় অবস্থিত রাসায়নিক পদার্থ-মজুদের গুদাম ও কারখানাগুলো নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়।

 

দ্রুততম সময়ের মধ্যে বৈধ ব্যবসায়ীদের বিপজ্জনক কেমিক্যাল সাময়িকভাবে সংরক্ষণের জন্য রাজধানীর শ্যামপুরে বিসিআইসির আওতাধীন উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরির পরিত্যক্ত জায়গায় গুদাম নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ ২০১৯ সালের মার্চে শুরু হয়। চার বছরের মাথায় সম্প্রতি এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ৫৪টি গুদাম এবং তিনতলা বিশিষ্ট দুটি অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

সূএ :ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জাতি হিসেবে আমাদের সকল প্রাপ্তির দ্বার উন্মোচন করে গেছে মুজিব নগর সরকার-ধর্মমন্ত্রী

» ইসলামপুরে হিট স্ট্রোকে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

» ব্র্যাক ব্যাংক ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের দুই মাসে ২,৫০০ কোটি টাকা নিট ডিপোজিট প্রবৃদ্ধি অর্জন

» চলমান বিডিএস এর আওতায় গ্রাউন্ড পয়েন্ট স্থাপনের কাজ শেষ, শীঘ্রই ম্যাপ তোরির কাজ শুরু

» ৬১ বিজিবি তিস্তা ব্যাটালিয়ন-২ কর্তৃক হাতীবান্ধায় অর্ধকোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস

» লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বৃষ্টি জন্য বিশেষ নামাজ আদায়

» পলাশে প্রেমিকাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে প্রেমিক গ্রেপ্তার

» আরো কর্মী নিতে কাতারের আমিরের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান

» সোনার দাম ভ‌রিতে কমলো ৩১৩৮ টাকা

» বান্দরবানের তিন উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ঢাকাকে বাসযোগ্য-উন্নত করতে চাই : তাপস

ছবি : সংগৃহীত

 

রাজধানী ঢাকাকে বাসযোগ্য ও উন্নত সিটিতে পরিণত করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

 

রোববার (৪ জুন) রাজধানীর শ্যামপুরে অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।

 

মেয়র তাপস বলেন, আমরা চাই ঢাকাকে পরিকল্পিত বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে। পুরান ঢাকার রাসায়নিক দ্রব্যগুলো স্থানান্তর করতে এই গুদাম ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি আশা করব রাসায়নিক দ্রব্য নিয়ে দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন হবে। ব্যবসায়ীদের মতামত এখানে নিতে হবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে একটি নীতিমালা দ্রুত করতে হবে। রাসায়নিক গুদামগুলো দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে।

 

তিনি বলেন, একটি সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রাসায়নিক পণ্যর সব দোকানের মালামালগুলো দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে। তবে এই নীতিমালা যেন ব্যবসায়ী বান্ধব হয়। এখানে তারা গুদামে আসবেন সেক্ষেত্রে কিন্তু তাদের এখানেও বিনিয়োগ করতে হবে। তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তারা যেন উৎসাহী হোন। ‍কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও যেন তাদের এখানে আসতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এমনভাবে যেন কোনও নীতিমালা করা না হয়, যেন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হোন। এখন এখানে ৫৪টি গুদামের মালামাল স্থানান্তর করা যাবে। পরবর্তী সময়ে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এছাড়া আরও যেখানে স্থানান্তর করা হবে সেখানেও যেন ব্যবসায়ীরা উৎসাহের সঙ্গে স্থানান্তর হয়, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরান ঢাকার অনেক ঐতিহ্য আছে, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা আছে। এসবকে ঘিরেই পুরান ঢাকার অংশকে একটি পর্যটন নগরীর রূপ দিতে পারি। আমরা একটি ঐতিহ্যের বলয় তৈরি করতে চাই। এখানে যেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এসে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে পারেন, পাশাপাশি দেখতে পারে পুরান ঢাকাকে। তারা পুরান ঢাকার ঐতিহ্যকে উপভোগ করবেন, খাওয়া দাওয়া করবেন। এতে ঢাকার বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। সেই লক্ষ্যে পুরান ঢাকার রাসায়নিক কারখানাগুলো শ্যামপুরের গুদামে স্থানান্তর হয়ে যাবে। আমরা চাই অগ্নিকাণ্ডমুক্ত, দুর্যোগ ও দুর্ঘটনামুক্ত একটি নগরী। এই লক্ষ্যে আমরা শ্যামপুর গুদামে এসব স্থানান্তর করার কাজ করছি।

 

জানা গেছে, পুরান ঢাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রাসায়নিক কারখানা ও গুদামগুলো নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরের উদ্যোগ হিসেবে রাজধানীর পুরান ঢাকার শ্যামপুরে ৬ দশমিক ১৭ একর জমির ওপর ৭১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫৪টি অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। গুদামগুলো উদ্বোধন হলো আজ রোববার (৪ জুন)।

 

মূলত শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) উদ্যোগে ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম’ প্রকল্পের মাধ্যমে পুরাতন ঢাকার শ্যামপুরে অস্থায়ী রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ করা হয়।

 

২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিক পদার্থের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হন। পরবর্তী সময়ে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। সেদিনের ঘটনায় ৭৮ জন প্রাণ হারান। এ দুটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সরকারের টনক নড়ে। ভবিষ্যতে রাসায়নিক কারখানা ও গুদামে বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে লক্ষ্যে সরকার পুরান ঢাকায় অবস্থিত রাসায়নিক পদার্থ-মজুদের গুদাম ও কারখানাগুলো নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়।

 

দ্রুততম সময়ের মধ্যে বৈধ ব্যবসায়ীদের বিপজ্জনক কেমিক্যাল সাময়িকভাবে সংরক্ষণের জন্য রাজধানীর শ্যামপুরে বিসিআইসির আওতাধীন উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরির পরিত্যক্ত জায়গায় গুদাম নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ ২০১৯ সালের মার্চে শুরু হয়। চার বছরের মাথায় সম্প্রতি এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ৫৪টি গুদাম এবং তিনতলা বিশিষ্ট দুটি অফিস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

সূএ :ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com