জোড়া কলা খেলে সত্যিই কি যমজ বাচ্চা হয়?

সমাজের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে এমন সব লোকাবিশ্বাস, যা সত্য বলে মনে করেন অনেকেই। তেমনই একটি কথা প্রচলিত রয়েছে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে- কোনো নারী জোড়া কলা খেলে নাকি যমজ সন্তানের মা হন তিনি। 

 

বিজ্ঞান কিন্তু সাফ বলছে, কলা খাওয়ার সঙ্গে আদৌ যমজ সন্তান হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। বিষয়টি একেবারেই গুজব। কুসংস্কার ছাড়া কিছুই নয়।

যমজ সন্তান কীভাবে হয়?
যমজ সাধারণত দুই প্রকার। বিজ্ঞানের ভাষায়, ‘আইডেন্টিকাল’ ও ‘নন-আইডেন্টিকাল’। সাধারণত আইডেন্টিকাল যমজ সন্তান একই ‘জাইগোট’ থেকে জন্ম নেয়। আর নন-আইডেন্টিকাল যমজের জন্ম হয় আলাদা ‘জাইগোট’ থেকে।

জাইগোট কি?
সহজ করে বললে, পুরুষের শুক্রাণু যখন স্ত্রীর ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে, তখন দুইটি কোষ এক হয়ে তৈরি করে একটি একক কোষ। একেই জাইগোট বলা হয়। অর্থাৎ প্রাণের সূচনা যে কোষ থেকে হয়, তাকেই জাইগোট বলে। এই জাইগোটটি এরপর বার বার বিভাজিত হয়ে এক ধরনের কোষগুচ্ছ তৈরি করে। যা ক্রমশ আরো বিভাজিত হয়ে তৈরি করে ভ্রূণ। এই ভ্রূণ থেকেই জন্ম হয় শিশুর।

যমজ সন্তানের ক্ষেত্রে
সাধারণত একই জাইগোট থেকে একটি শিশুরই জন্ম হয়। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে একটি জাইগোট বিভাজিত হয়ে জরায়ুর অন্য কোনো স্থানে গিয়ে বসে যেতে পারে। তখনই দুই আলাদা অংশ থেকে দুইটি আলাদা ভ্রূণ তৈরি হয়। এ ভাবে আইডেন্টিক্যাল যমজ তৈরি হয়। কারণ এদের মূল জাইগোট একটিই। অর্থাৎ, কোনো জিনগত উপাদানে কোনো ভেদ নেই। সাধারণ ভাবে এ ক্ষেত্রে হুবহু একই রকম দেখতে এক জোড়া সন্তানের জন্ম হয়।

 

নন-আইডেন্টিকাল যমজ
যমজ অন্য ভাবেও হতে পারে। সাধারণত প্রতি মাসে মাত্র একটি ডিম্বাণু ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বনালি-তে আসে। কিন্তু, কখনো কখনো মাসে দুইটি ডিম্বনালি-তে দুইটি আলাদা ডিম্বাণু হাজির হয়। এই দুইটি ডিম্বাণু একই সঙ্গে নিষিক্ত হলেও যমজ সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু যেহেতু এরা আলাদা কোষ তাই এরা একই জাইগোট থেকে তৈরি নয়, পুরোপুরি এক নয় এদের জিনগত উপাদানও। এ ভাবেই পৃথিবীর আলো দেখে নন-আইডেন্টিকাল যমজেরা।

তবে কলা খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। কোনো অ্যালার্জি না থাকলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হবু মায়েদের কলা খাওয়ানো যেতেই পারে। কিন্তু জোড়া কলা খাওয়ার সঙ্গে যমজ সন্তানের কোনো যোগ নেই।   সূত্র: আনন্দবাজার

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির লালবাগ উপশাখা উদ্বোধন

» পাঁচবিবিতে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

» বৃষ্টি কামনায় বায়তুল মোকাররমে ইসতিসকার নামাজ আদায়

» মেটার স্মার্ট সানগ্লাসে দিয়ে করা যাবে ভিডিও কল

» গরমে ট্রাফিক পুলিশ কীভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে?

» জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরু থেকে কেন খেলবেন না, জানালেন সাকিব

» পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলের চালক নিহত

» বাস-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংর্ঘষে ইজিবাইক চালক নিহত,আহত ৩

» বিএনপি নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া: কাদের

» শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে আ.লীগের কর্মসূচি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জোড়া কলা খেলে সত্যিই কি যমজ বাচ্চা হয়?

সমাজের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে এমন সব লোকাবিশ্বাস, যা সত্য বলে মনে করেন অনেকেই। তেমনই একটি কথা প্রচলিত রয়েছে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে- কোনো নারী জোড়া কলা খেলে নাকি যমজ সন্তানের মা হন তিনি। 

 

বিজ্ঞান কিন্তু সাফ বলছে, কলা খাওয়ার সঙ্গে আদৌ যমজ সন্তান হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। বিষয়টি একেবারেই গুজব। কুসংস্কার ছাড়া কিছুই নয়।

যমজ সন্তান কীভাবে হয়?
যমজ সাধারণত দুই প্রকার। বিজ্ঞানের ভাষায়, ‘আইডেন্টিকাল’ ও ‘নন-আইডেন্টিকাল’। সাধারণত আইডেন্টিকাল যমজ সন্তান একই ‘জাইগোট’ থেকে জন্ম নেয়। আর নন-আইডেন্টিকাল যমজের জন্ম হয় আলাদা ‘জাইগোট’ থেকে।

জাইগোট কি?
সহজ করে বললে, পুরুষের শুক্রাণু যখন স্ত্রীর ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে, তখন দুইটি কোষ এক হয়ে তৈরি করে একটি একক কোষ। একেই জাইগোট বলা হয়। অর্থাৎ প্রাণের সূচনা যে কোষ থেকে হয়, তাকেই জাইগোট বলে। এই জাইগোটটি এরপর বার বার বিভাজিত হয়ে এক ধরনের কোষগুচ্ছ তৈরি করে। যা ক্রমশ আরো বিভাজিত হয়ে তৈরি করে ভ্রূণ। এই ভ্রূণ থেকেই জন্ম হয় শিশুর।

যমজ সন্তানের ক্ষেত্রে
সাধারণত একই জাইগোট থেকে একটি শিশুরই জন্ম হয়। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে একটি জাইগোট বিভাজিত হয়ে জরায়ুর অন্য কোনো স্থানে গিয়ে বসে যেতে পারে। তখনই দুই আলাদা অংশ থেকে দুইটি আলাদা ভ্রূণ তৈরি হয়। এ ভাবে আইডেন্টিক্যাল যমজ তৈরি হয়। কারণ এদের মূল জাইগোট একটিই। অর্থাৎ, কোনো জিনগত উপাদানে কোনো ভেদ নেই। সাধারণ ভাবে এ ক্ষেত্রে হুবহু একই রকম দেখতে এক জোড়া সন্তানের জন্ম হয়।

 

নন-আইডেন্টিকাল যমজ
যমজ অন্য ভাবেও হতে পারে। সাধারণত প্রতি মাসে মাত্র একটি ডিম্বাণু ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বনালি-তে আসে। কিন্তু, কখনো কখনো মাসে দুইটি ডিম্বনালি-তে দুইটি আলাদা ডিম্বাণু হাজির হয়। এই দুইটি ডিম্বাণু একই সঙ্গে নিষিক্ত হলেও যমজ সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু যেহেতু এরা আলাদা কোষ তাই এরা একই জাইগোট থেকে তৈরি নয়, পুরোপুরি এক নয় এদের জিনগত উপাদানও। এ ভাবেই পৃথিবীর আলো দেখে নন-আইডেন্টিকাল যমজেরা।

তবে কলা খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। কোনো অ্যালার্জি না থাকলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হবু মায়েদের কলা খাওয়ানো যেতেই পারে। কিন্তু জোড়া কলা খাওয়ার সঙ্গে যমজ সন্তানের কোনো যোগ নেই।   সূত্র: আনন্দবাজার

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com