জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী

ছবি: সংগৃহীত

 

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৮৯৯ সালের ২৫ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

 

জন্মবার্ষিকীতে অগণিত অনুরাগী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির কবরে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া নানা কর্মসূচি পালন ও অনুষ্ঠান করছে বিভিন্ন সংগঠন ও টিভি চ্যানেল।

কাজী নজরুল ইসলাম ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। তিনি প্রায় তিন হাজার গান রচনা এবং বেশির ভাগই সুরারোপ করেছেন। যেগুলো নজরুলসঙ্গীত নামে পরিচিত। বাংলা সাহিত্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের আগমন একজন বীরের মতোই। তার কবিতা, গান, উপন্যাস ও গল্পে বাঙালি জেনেছে বীরত্বের ভাষা, দ্রোহের মন্ত্র। তিনি আছেন মানবতায়, প্রেমে, সাম্যে।

 

কাজী নজরুল ইসলামের ডাকনাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। অল্প বয়স থেকেই তিনি লোকসঙ্গীত রচনা শুরু করেন। এর মধ্যে রয়েছে- চাষার সঙ, শকুনীবধ, রাজা যুধিষ্ঠিরের সঙ, দাতা কর্ণ, আকবর বাদশাহ, কবি কালিদাস, বিদ্যাভূতুম, রাজপুত্রের গান।

১৯১৭ সালের শেষভাগ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত কর্মজীবনে নজরুল যে রচনাগুলো লেখেন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাউন্ডুলের আত্মকাহিনী, মুক্তি, হেনা, ব্যথার দান, মেহের নিগার, ঘুমের ঘোরে, কবিতা সমাধি ইত্যাদি। পরে কলকাতায় এসে তিনি সাহিত্য-সাংবাদিকতা জীবনের মূল কাজগুলো শুরু করেন। তৎকালীন বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত কবির বাঁধনহারা, শাত-ইল-আরব, বাদল প্রাতের শরাব, আগমনী, কোরবানি, ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম সাহিত্যকর্মগুলো ব্যাপক সমাদৃত হয়।

 

১৯২১ সালের অক্টোবরে তিনি শান্তিনিকেতনে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর কুমিল্লার বিরজাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে আসেন নজরুল। আর এখানেই প্রমীলা দেবীর সঙ্গে প্রণয় থেকে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন কবি।

১৯২২ সালে ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটির মধ্য দিয়ে সারা ভারতে সাড়া ফেলেন কাজী নজরুল ইসলাম। ১৯২২ সালের ১২ আগস্ট নজরুল ধূমকেতু পত্রিকা প্রকাশ করেন। রাজনৈতিক কবিতা প্রকাশিত হওয়ায় ১৯২২ সালে পত্রিকাটির ৮ নভেম্বরের সংখ্যাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। একই বছরের ২৩ নভেম্বর তার যুগবাণী প্রবন্ধগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়। একইদিন তাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নেয়া হয়।

 

কাজী নজরুল ইসলাম মধ্যবয়সে পিকস্ ডিজিজে আক্রান্ত হন ও বাকশক্তি হারান। এর ফলে আমৃত্যু তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়।

১৯৭২ সালে ২৪ মে ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেন। ১৯৭৬ সালে কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব এবং ‘একুশে পদক’ দেওয়া হয়। ঐ বছরের ২৯ আগস্ট তিনি মারা যান।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» শুভ জন্মদিন ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’

» মন্ত্রী-এমপির স্বজন যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি, সময়মতো ব্যবস্থা: কাদের

» তিতাসের অভিযানে ৭৬টি গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

» ট্রাক ও ট্রাক্টরের সংঘর্ষে দুইজন নিহত

» আখাউড়া স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি বন্ধ

» ‘অনাহারে’ দিন কাটছে গাজার অর্ধেক জনসংখ্যার: জাতিসংঘ

» ট্রেন লাইনচ্যুত, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগ বন্ধ

» নারীর মরদেহ উদ্ধার, যুবক আটক

» রানা প্লাজায় নিহত শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা

» যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী

ছবি: সংগৃহীত

 

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৮৯৯ সালের ২৫ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

 

জন্মবার্ষিকীতে অগণিত অনুরাগী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির কবরে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া নানা কর্মসূচি পালন ও অনুষ্ঠান করছে বিভিন্ন সংগঠন ও টিভি চ্যানেল।

কাজী নজরুল ইসলাম ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। তিনি প্রায় তিন হাজার গান রচনা এবং বেশির ভাগই সুরারোপ করেছেন। যেগুলো নজরুলসঙ্গীত নামে পরিচিত। বাংলা সাহিত্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের আগমন একজন বীরের মতোই। তার কবিতা, গান, উপন্যাস ও গল্পে বাঙালি জেনেছে বীরত্বের ভাষা, দ্রোহের মন্ত্র। তিনি আছেন মানবতায়, প্রেমে, সাম্যে।

 

কাজী নজরুল ইসলামের ডাকনাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। অল্প বয়স থেকেই তিনি লোকসঙ্গীত রচনা শুরু করেন। এর মধ্যে রয়েছে- চাষার সঙ, শকুনীবধ, রাজা যুধিষ্ঠিরের সঙ, দাতা কর্ণ, আকবর বাদশাহ, কবি কালিদাস, বিদ্যাভূতুম, রাজপুত্রের গান।

১৯১৭ সালের শেষভাগ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত কর্মজীবনে নজরুল যে রচনাগুলো লেখেন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাউন্ডুলের আত্মকাহিনী, মুক্তি, হেনা, ব্যথার দান, মেহের নিগার, ঘুমের ঘোরে, কবিতা সমাধি ইত্যাদি। পরে কলকাতায় এসে তিনি সাহিত্য-সাংবাদিকতা জীবনের মূল কাজগুলো শুরু করেন। তৎকালীন বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত কবির বাঁধনহারা, শাত-ইল-আরব, বাদল প্রাতের শরাব, আগমনী, কোরবানি, ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম সাহিত্যকর্মগুলো ব্যাপক সমাদৃত হয়।

 

১৯২১ সালের অক্টোবরে তিনি শান্তিনিকেতনে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর কুমিল্লার বিরজাসুন্দরী দেবীর বাড়িতে আসেন নজরুল। আর এখানেই প্রমীলা দেবীর সঙ্গে প্রণয় থেকে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন কবি।

১৯২২ সালে ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটির মধ্য দিয়ে সারা ভারতে সাড়া ফেলেন কাজী নজরুল ইসলাম। ১৯২২ সালের ১২ আগস্ট নজরুল ধূমকেতু পত্রিকা প্রকাশ করেন। রাজনৈতিক কবিতা প্রকাশিত হওয়ায় ১৯২২ সালে পত্রিকাটির ৮ নভেম্বরের সংখ্যাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। একই বছরের ২৩ নভেম্বর তার যুগবাণী প্রবন্ধগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়। একইদিন তাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নেয়া হয়।

 

কাজী নজরুল ইসলাম মধ্যবয়সে পিকস্ ডিজিজে আক্রান্ত হন ও বাকশক্তি হারান। এর ফলে আমৃত্যু তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়।

১৯৭২ সালে ২৪ মে ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেন। ১৯৭৬ সালে কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব এবং ‘একুশে পদক’ দেওয়া হয়। ঐ বছরের ২৯ আগস্ট তিনি মারা যান।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com