গোপালগঞ্জে জাকিয়া বেগম নামে এক গৃহবধূ খুনের মামলায় স্বামীসহ চার জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে নিহতের স্বামীকে ৫ লাখ ও অন্য তিন আসামিকে ৩ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক জাকির হোসেনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রহিম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- জাকিয়ার স্বামী মোর্শেদায়ান নিশান, নিশানের ভাই এহসান সুশান, ভগ্নিপতি হাসান শেখ ও ম্যানেজার আনিছুর রহমান।
মোর্শেদায়ান নিশান মাছরাঙা টেলিভিশনের গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক আমাদের গোপালগঞ্জ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি পালাতক আছেন। অন্য তিন আসামি কারাগারে আটক আছেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে নিশানের সঙ্গে জাকিয়ার বিয়ে হয়। তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই নিশান ও তার পরিবারের সদস্যরা এক কোটি টাকা যৌতুকের জন্য জাকিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। তারা জাকিয়াকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে আসামিরা জাকিয়ার কাছে নিশানের নামে ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার জন্য এক কোটি টাকা দাবি করে। জাকিয়া যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিরা তাকে জোর করে শোয়ার ঘর থেকে রান্নার ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে আসামিরা জাকিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করে।
এ ঘটনায় জাকিয়ার বাবা জালাল উদ্দিন মল্লিক চারজনের নামে ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্ত করে ওই বছরের ৯ জুন গোপালগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিদর্শক সওগতুল আলম চারজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর গোপালগঞ্জ জেলা জজ আদালতে চার আসামির বিচার শুরু হয়।
মামলায় সাত জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ট্রাইব্যুনালে মামলাটি আসার পর আরও ১৩ জন সাক্ষ্য দেন। চার্জশিটভুক্ত ২০ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনেরই সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। বৃহস্পতিবার মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক।