খোলা তেল নিয়ে কেন এই কারসাজি?

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার থেকে শুরু করে মহল্লা কিংবা অলিগলির কোথাও কোনো দোকানে মিলছে না খোলা সয়াবিন তেল। গত কয়েকদিন ধরে এমন সংকট দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। এতে চরম বিপাকে পড়েছে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। অনেককে তেল ছাড়াই বাজার থেকে ফিরে যেতে হয়েছে। সাধারণ ভোক্তাদের প্রশ্ন খোলা তেল নিয়ে কেন এই কারসাজি। আমাদের তো বোতলজাত এক লিটার তেল কেনার সামর্থ্য নেই। সারাদিনে যা কামাই হয় তার বেশির ভাগ তো তেল কিনতেই শেষ। তাহলে বাকি টাকা দিয়ে সংসার চলবে কীভাবে? রাজধানীর মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, তালতলা, বিএনপি বাজার ও কাওরান বাজার এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার খোলা তেল বিক্রি করতে নিষেধ করায় তারা খোলা তেল বিক্রি করছেন না। এ ছাড়া যে ডিলাররা আগে অর্ডার নিয়ে যেত, তাদেরকে এখন ফোন করেও পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তারা।

রাজধানীর তালতলায় বাজার করতে আসা শাহেদা আক্তার বলেন, একসঙ্গে এক লিটারের বোতলজাত তেল কেনার সামর্থ্য আমাদের নেই। এ জন্য আমরা রান্নায় খোলা তেল ব্যবহার করি। কিন্তু এখন কোথাও খোলা তেল পাচ্ছি না। এ ছাড়া বোতলের ৫০০ গ্রামের তেলও কোথাও পেলাম না। একটা দোকানে পেয়েছিলাম। কিন্তু তারা খুবই বেশি দাম চায়। তিনি জানান, ব্যবসায়ীরা বলছেন সরকার নাকি খোলা তেল বিক্রি করতে নিষেধ করেছে। সরকার কি গরিবের সঙ্গে মশকরা করছে? গরিবরা কি ১৯০ টাকা দিয়ে বোতলের তেল কিনে ব্যবহার করতে পারে?

বাবর রোডের একটি মুদি দোকানে খোলা তেল কিনতে আসা কলেজ শিক্ষার্থী সালেহ মাহমুদ বলেন, তেলের দাম অনেক বেশি হওয়ার কারণে আমরা মেসে খোলা তেল ব্যবহার করি। কিন্তু আজ কোথাও খোলা তেল পেলাম না। সব দোকানদারই বলছে তাদের কাছে কোনো খোলা তেল নেই। বোতলজাত তেল পাওয়া গেলেও গায়ের মূল্যের চেয়ে বেশি নিচ্ছে। এক লিটার তেলের দাম বলছে ১৮৫ টাকা। সালেহ মাহমুদ বলেন, বোতলের তেল কিনলে বেশিদিন চালানো সম্ভব হয় না। রান্নার খালা নিমিষেই তা শেষ করে ফেলে। এ জন্য আমরা দিনের তেল দিনে কিনে থাকি।

বিএনপি বাজারে আসা রেহেনা খাতুন বলেন, আমি দেখলাম বহু দোকানে তেল নেই। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানি সাপ্লাই বন্ধ রেখেছে। এ জন্য তারা তেল বিক্রি করতে পারছেন না। মূলত ব্যবসায়ীরা আবারো তেলের দাম বাড়ানোর ধান্ধায় রয়েছে। তারা দাম বাড়িয়েই ছাড়বে। আর সরকার শুধু দেখেই যাবে।

বিএনপি বাজারের ব্যবসায়ী মো. জসিম মিয়া বলেন, খোলা সয়াবিন তেল বাজার থেকে একেবারে উধাও হয়ে গেছে। সরকার নিজেই তো খোলা তেল বিক্রি করতে নিষেধ করেছে। এ জন্য আমরা আর খোলা তেল বিক্রি করছি না। তেল না পেলে আপনাদেরকে কীভাবে দেবো? গত দুই সপ্তাহ কোম্পানির কাছ থেকে আমরা তেল পাচ্ছি না। যে ডিলাররা আগে অর্ডার নিয়ে যেত তাদেরকে এখন ফোন করেও পাওয়া যাচ্ছে না। আজ আমাদের দোকানে খোলা তেল কিনতে এসে অনেক মানুষ ফিরে গেছে।

শান্তিনগর বাজারের মুদি দোকানি আবুল ফজল বলেন, সরকারের লোকেরা এসে আমাদের মতো ছোটখাটো খুচরা দোকানে অভিযান করে, জরিমানা করে। আমরা কী তেল মজুত করি? যারা তেল আমদানি-রপ্তানি করে, বড় বড় কোম্পানি আছে, তাদের গোডাউনে অভিযান চালাক। তারাই জানে তেল কোথায় রেখেছে।   সূএ:মানবজমিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির লালবাগ উপশাখা উদ্বোধন

» পাঁচবিবিতে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

» বৃষ্টি কামনায় বায়তুল মোকাররমে ইসতিসকার নামাজ আদায়

» মেটার স্মার্ট সানগ্লাসে দিয়ে করা যাবে ভিডিও কল

» গরমে ট্রাফিক পুলিশ কীভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে?

» জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরু থেকে কেন খেলবেন না, জানালেন সাকিব

» পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলের চালক নিহত

» বাস-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংর্ঘষে ইজিবাইক চালক নিহত,আহত ৩

» বিএনপি নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া: কাদের

» শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে আ.লীগের কর্মসূচি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

খোলা তেল নিয়ে কেন এই কারসাজি?

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার থেকে শুরু করে মহল্লা কিংবা অলিগলির কোথাও কোনো দোকানে মিলছে না খোলা সয়াবিন তেল। গত কয়েকদিন ধরে এমন সংকট দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। এতে চরম বিপাকে পড়েছে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। অনেককে তেল ছাড়াই বাজার থেকে ফিরে যেতে হয়েছে। সাধারণ ভোক্তাদের প্রশ্ন খোলা তেল নিয়ে কেন এই কারসাজি। আমাদের তো বোতলজাত এক লিটার তেল কেনার সামর্থ্য নেই। সারাদিনে যা কামাই হয় তার বেশির ভাগ তো তেল কিনতেই শেষ। তাহলে বাকি টাকা দিয়ে সংসার চলবে কীভাবে? রাজধানীর মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, তালতলা, বিএনপি বাজার ও কাওরান বাজার এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার খোলা তেল বিক্রি করতে নিষেধ করায় তারা খোলা তেল বিক্রি করছেন না। এ ছাড়া যে ডিলাররা আগে অর্ডার নিয়ে যেত, তাদেরকে এখন ফোন করেও পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তারা।

রাজধানীর তালতলায় বাজার করতে আসা শাহেদা আক্তার বলেন, একসঙ্গে এক লিটারের বোতলজাত তেল কেনার সামর্থ্য আমাদের নেই। এ জন্য আমরা রান্নায় খোলা তেল ব্যবহার করি। কিন্তু এখন কোথাও খোলা তেল পাচ্ছি না। এ ছাড়া বোতলের ৫০০ গ্রামের তেলও কোথাও পেলাম না। একটা দোকানে পেয়েছিলাম। কিন্তু তারা খুবই বেশি দাম চায়। তিনি জানান, ব্যবসায়ীরা বলছেন সরকার নাকি খোলা তেল বিক্রি করতে নিষেধ করেছে। সরকার কি গরিবের সঙ্গে মশকরা করছে? গরিবরা কি ১৯০ টাকা দিয়ে বোতলের তেল কিনে ব্যবহার করতে পারে?

বাবর রোডের একটি মুদি দোকানে খোলা তেল কিনতে আসা কলেজ শিক্ষার্থী সালেহ মাহমুদ বলেন, তেলের দাম অনেক বেশি হওয়ার কারণে আমরা মেসে খোলা তেল ব্যবহার করি। কিন্তু আজ কোথাও খোলা তেল পেলাম না। সব দোকানদারই বলছে তাদের কাছে কোনো খোলা তেল নেই। বোতলজাত তেল পাওয়া গেলেও গায়ের মূল্যের চেয়ে বেশি নিচ্ছে। এক লিটার তেলের দাম বলছে ১৮৫ টাকা। সালেহ মাহমুদ বলেন, বোতলের তেল কিনলে বেশিদিন চালানো সম্ভব হয় না। রান্নার খালা নিমিষেই তা শেষ করে ফেলে। এ জন্য আমরা দিনের তেল দিনে কিনে থাকি।

বিএনপি বাজারে আসা রেহেনা খাতুন বলেন, আমি দেখলাম বহু দোকানে তেল নেই। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানি সাপ্লাই বন্ধ রেখেছে। এ জন্য তারা তেল বিক্রি করতে পারছেন না। মূলত ব্যবসায়ীরা আবারো তেলের দাম বাড়ানোর ধান্ধায় রয়েছে। তারা দাম বাড়িয়েই ছাড়বে। আর সরকার শুধু দেখেই যাবে।

বিএনপি বাজারের ব্যবসায়ী মো. জসিম মিয়া বলেন, খোলা সয়াবিন তেল বাজার থেকে একেবারে উধাও হয়ে গেছে। সরকার নিজেই তো খোলা তেল বিক্রি করতে নিষেধ করেছে। এ জন্য আমরা আর খোলা তেল বিক্রি করছি না। তেল না পেলে আপনাদেরকে কীভাবে দেবো? গত দুই সপ্তাহ কোম্পানির কাছ থেকে আমরা তেল পাচ্ছি না। যে ডিলাররা আগে অর্ডার নিয়ে যেত তাদেরকে এখন ফোন করেও পাওয়া যাচ্ছে না। আজ আমাদের দোকানে খোলা তেল কিনতে এসে অনেক মানুষ ফিরে গেছে।

শান্তিনগর বাজারের মুদি দোকানি আবুল ফজল বলেন, সরকারের লোকেরা এসে আমাদের মতো ছোটখাটো খুচরা দোকানে অভিযান করে, জরিমানা করে। আমরা কী তেল মজুত করি? যারা তেল আমদানি-রপ্তানি করে, বড় বড় কোম্পানি আছে, তাদের গোডাউনে অভিযান চালাক। তারাই জানে তেল কোথায় রেখেছে।   সূএ:মানবজমিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com