কোরবানি কি ২-৪-৬ ভাগে করা যায়?

ফাইল ছবি

 

মুসলিম মিল্লাতের বড় দুই আনন্দের দিনের মধ্যে ঈদুল আজহা একটি। ঈদুল আজহার প্রধান আকর্ষণ ও বড় আমল হলো কোরবানি করা। এটি ইসলামের একটি শিয়ার বা মহান নিদর্শন। আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন— ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার: ২)

 

কোরবানিতে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যের শিক্ষা এবং আল্লাহর ভালোবাসায় নিজের সব চাহিদা ত্যাগ করার শিক্ষা রয়েছে। সামর্থ্য অনুযায়ী, একজন একটি পশু অথবা বড় পশুকে শরিকে (কয়েকজন মিলে ভাগাভাগির মাধ্যমে) কোরবানি করা জায়েজ। শরিক হয়ে কোরবানি করলে কিছু বিষয় জানা জরুরি। যেমন—

উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ। (মুসলিম: ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)

এভাবে একটি বড় পশুতে সর্বোচ্চ সাতজন শরীক হয়ে কোরবানি দিতে পারবে। জাবের বিন আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা হুদায়বিয়ার সনে উট সাতজনের পক্ষ থেকে এবং গরুও সাত জনের পক্ষ থেকে কোরবানি করেছিলাম।’ (সহিহ মুসলিম: ২৩২২, আবু দাউদ: ২৮০৯, তিরমিজি: ১৪২২, ইবনে মাজাহ: ৩১৩২)

 

অর্থাৎ আপনি চাইলে একটি গরু বা মহিষ দুই, চার বা ছয় ভাগেও কোরবানি করতে পারবেন। তবে মনে রাখতে হবে- কোরবানির পশুতে প্রত্যেক অংশীদারের অংশ সমান হতে হবে। কারো অংশ অন্যের অংশ থেকে কম হতে পারবে না। যেমন কারো আধা ভাগ, কারো দেড় ভাগ। এমন হলে কোনো শরিকের কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)

আরও মনে রাখতে হবে- হারাম উপার্জনকারী কোনো অংশীদার না নেওয়া জরুরি। কেননা হারাম অর্থের পশুতে কোরবানি শুদ্ধ হয় না। কোরবানি করতে হবে সম্পূর্ণ হালাল সম্পদ থেকে। হারাম টাকায় কোরবানি করা শুদ্ধ নয় এবং এক্ষেত্রে অন্য অংশীদারদের কোরবানিও শুদ্ধ হবে না। কেননা রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন,  ‘হে মুমিনগণ! আল্লাহ তাআলা পবিত্র, তিনি হালাল ও পবিত্র ব্যতীত কোনোকিছু গ্রহণ করেন না।’ (সহিহ মুসলিম: ২২১৫)

 

কেউ যদি গরু, মহিষ বা উট একা কোরবানি দেওয়ার নিয়তে ক্রয় করে, এ পশুতে অন্যকে অংশীদার করাও তার জন্য জায়েজ। তবে ধনী হলে এতে কাউকে শরিক না করে একা কোরবানি করাই শ্রেয়। শরিক করলে সে টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম।

আবার কোরবানি ওয়াজিব হয়নি—এমন কেউ যদি কোরবানির নিয়তে পশু ক্রয় করে থাকে, তাহলে যেহেতু কোরবানির নিয়তে পশুটি ক্রয় করে আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করেছে, তাই তার জন্য এ পশুতে অন্যকে শরিক করা জায়েজ নয়। যদি শরিক করে, তবে ওই টাকা সদকা করে দেওয়া জরুরি হবে। কোরবানির পশুতে কাউকে শরিক করতে চাইলে পশু ক্রয়ের সময়ই নিয়ত করে নিতে হবে। (ফতোয়া কাজিখান: ৩/৩৫০-৩৫১; বাদায়িউস সানায়ে: ৪/২১০)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সামর্থ্যবানদের বিশুদ্ধ নিয়ত ও হালাল উপার্জন দিয়ে সহিহ সুন্নাহ অনুযায়ী কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সূএ : ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জাতি হিসেবে আমাদের সকল প্রাপ্তির দ্বার উন্মোচন করে গেছে মুজিব নগর সরকার-ধর্মমন্ত্রী

» ইসলামপুরে হিট স্ট্রোকে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

» ব্র্যাক ব্যাংক ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের দুই মাসে ২,৫০০ কোটি টাকা নিট ডিপোজিট প্রবৃদ্ধি অর্জন

» চলমান বিডিএস এর আওতায় গ্রাউন্ড পয়েন্ট স্থাপনের কাজ শেষ, শীঘ্রই ম্যাপ তোরির কাজ শুরু

» ৬১ বিজিবি তিস্তা ব্যাটালিয়ন-২ কর্তৃক হাতীবান্ধায় অর্ধকোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস

» লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বৃষ্টি জন্য বিশেষ নামাজ আদায়

» পলাশে প্রেমিকাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে প্রেমিক গ্রেপ্তার

» আরো কর্মী নিতে কাতারের আমিরের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান

» সোনার দাম ভ‌রিতে কমলো ৩১৩৮ টাকা

» বান্দরবানের তিন উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কোরবানি কি ২-৪-৬ ভাগে করা যায়?

ফাইল ছবি

 

মুসলিম মিল্লাতের বড় দুই আনন্দের দিনের মধ্যে ঈদুল আজহা একটি। ঈদুল আজহার প্রধান আকর্ষণ ও বড় আমল হলো কোরবানি করা। এটি ইসলামের একটি শিয়ার বা মহান নিদর্শন। আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন— ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার: ২)

 

কোরবানিতে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যের শিক্ষা এবং আল্লাহর ভালোবাসায় নিজের সব চাহিদা ত্যাগ করার শিক্ষা রয়েছে। সামর্থ্য অনুযায়ী, একজন একটি পশু অথবা বড় পশুকে শরিকে (কয়েকজন মিলে ভাগাভাগির মাধ্যমে) কোরবানি করা জায়েজ। শরিক হয়ে কোরবানি করলে কিছু বিষয় জানা জরুরি। যেমন—

উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ। (মুসলিম: ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)

এভাবে একটি বড় পশুতে সর্বোচ্চ সাতজন শরীক হয়ে কোরবানি দিতে পারবে। জাবের বিন আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা হুদায়বিয়ার সনে উট সাতজনের পক্ষ থেকে এবং গরুও সাত জনের পক্ষ থেকে কোরবানি করেছিলাম।’ (সহিহ মুসলিম: ২৩২২, আবু দাউদ: ২৮০৯, তিরমিজি: ১৪২২, ইবনে মাজাহ: ৩১৩২)

 

অর্থাৎ আপনি চাইলে একটি গরু বা মহিষ দুই, চার বা ছয় ভাগেও কোরবানি করতে পারবেন। তবে মনে রাখতে হবে- কোরবানির পশুতে প্রত্যেক অংশীদারের অংশ সমান হতে হবে। কারো অংশ অন্যের অংশ থেকে কম হতে পারবে না। যেমন কারো আধা ভাগ, কারো দেড় ভাগ। এমন হলে কোনো শরিকের কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৭)

আরও মনে রাখতে হবে- হারাম উপার্জনকারী কোনো অংশীদার না নেওয়া জরুরি। কেননা হারাম অর্থের পশুতে কোরবানি শুদ্ধ হয় না। কোরবানি করতে হবে সম্পূর্ণ হালাল সম্পদ থেকে। হারাম টাকায় কোরবানি করা শুদ্ধ নয় এবং এক্ষেত্রে অন্য অংশীদারদের কোরবানিও শুদ্ধ হবে না। কেননা রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন,  ‘হে মুমিনগণ! আল্লাহ তাআলা পবিত্র, তিনি হালাল ও পবিত্র ব্যতীত কোনোকিছু গ্রহণ করেন না।’ (সহিহ মুসলিম: ২২১৫)

 

কেউ যদি গরু, মহিষ বা উট একা কোরবানি দেওয়ার নিয়তে ক্রয় করে, এ পশুতে অন্যকে অংশীদার করাও তার জন্য জায়েজ। তবে ধনী হলে এতে কাউকে শরিক না করে একা কোরবানি করাই শ্রেয়। শরিক করলে সে টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম।

আবার কোরবানি ওয়াজিব হয়নি—এমন কেউ যদি কোরবানির নিয়তে পশু ক্রয় করে থাকে, তাহলে যেহেতু কোরবানির নিয়তে পশুটি ক্রয় করে আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করেছে, তাই তার জন্য এ পশুতে অন্যকে শরিক করা জায়েজ নয়। যদি শরিক করে, তবে ওই টাকা সদকা করে দেওয়া জরুরি হবে। কোরবানির পশুতে কাউকে শরিক করতে চাইলে পশু ক্রয়ের সময়ই নিয়ত করে নিতে হবে। (ফতোয়া কাজিখান: ৩/৩৫০-৩৫১; বাদায়িউস সানায়ে: ৪/২১০)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সামর্থ্যবানদের বিশুদ্ধ নিয়ত ও হালাল উপার্জন দিয়ে সহিহ সুন্নাহ অনুযায়ী কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সূএ : ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com