কীভাবে বুঝবেন কিডনিতে সিস্ট? করণীয় কী?

ছবি সংগৃহীত

 

নানা কারণে কিডনিতে সিস্ট হতে পারে। চিকিৎসকরাও সিস্ট হওয়ার সঠিক কারণ নিশ্চিত করতে পারেন না। কিডনিতে সিস্ট হলে প্রথমেই তা বোঝা যায় না নিত্য জীবনযাপনে। আর ক্যান্সারাস সিস্ট হলে আরও চিন্তার।

 

এ বিষয়ে কথা বলেছেন কলকাতার অন্যতম নেফ্রোলজিস্ট ডা. প্রতিম সেনগুপ্ত।

 

পলিসিস্টিক ওভারি। এই অসুখটার সঙ্গে আমরা যতটা পরিচিত, পলিসিস্টিক কিডনি ততটাই অপরিচিত আমাদের কাছে। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে এই সমস্যা কিন্তু বাড়ছে। কিডনির নানা অসুখের মধ্যে অন্যতম কিডনিতে সিস্ট।

ঠিক কী হয়?

কিডনি সারা দিনে শরীরে ১৭৮ লিটার ইউরিন তৈরি করে। তার থেকে রিপ্রসেস করে মাত্র দেড় থেকে দুলিটার ইউরিন আমরা ত্যাগ করি। এই পুরো কাজটা প্রতিনিয়ত করতে করতে কখনো কখনো কিডনির দেয়ালে ফ্লুয়িড সমৃদ্ধ ছোট ছোট থলি তৈরি হয়। এটাকেই আমরা সিস্ট বলি। যা নানাভাবে কিডনির কার্যকারিতাকে ব্যাহত করে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে প্রকাশ থাকে না বলে রোগ ধরাও পড়ে দেরিতে। ফলে সমস্যা গুরুতর হয়।

 

সিস্টের নানা প্রকার রয়েছে

১. কিডনিতে সাধারণত যে সিস্ট অধিকাংশের দেখা যায় তা হলো সিম্পল সিস্ট। এক্ষেত্রে কোনোরকম লক্ষণ থাকে না। এই সিস্ট তেমনভাবে কোনো সমস্যাও তৈরি করে না। তবে চিকিৎসা না করালে তখন কিন্তু নানারকম কষ্ট প্রকাশ পায়। সাধারণত যাদের দীর্ঘদিন উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের এই ধরনের সিস্টের সম্ভাবনা বেশি। সিস্ট দুটি কিডনিতে একসঙ্গে হবে তা নয়। একটি কিডনিতেও সিস্ট হতে পারে।
২. পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ। এক্ষেত্রে দুটি কিডনিতেই অসংখ্য ছোট-ছোট সিস্ট দেখা যায়। এই রোগ সাধারণত বংশ পরম্পরায় কোনো একজন রোগীর শরীরে আসে। এ ধরনের সিস্ট হলে একটু চিন্তার। এই রোগের নাম অটোসোমাল পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ।
৩. তবে সবচেয়ে খারাপ ধরনের সিস্ট হলো যেগুলিতে ম্যালিগন্যান্সি থাকে। এ ধরনের সিস্ট একপ্রকার কিডনি টিউমার। পরিসংখ্যানগত দিক থেকে দেখা গেছে, এ ধরনের সিস্টে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম। মূলত সাধারণ সিস্টের সমস্যাতেই বেশিরভাগ ভোগেন। তাই অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সিস্ট হলে আগে কী ধরনের সিস্ট সেটা জানা খুব দরকার।

 

কোন লক্ষণ থাকবে?

১. সাধারণত সিস্টের কোনো লক্ষণ থাকেই না। তবে সিস্টের আকার বড় হয়ে গেলে কিডনিতে চাপ পড়তে শুরু করলে পেটে ব্যথা হয়। কোমরের দিকে ব্যথা বা পেটের দুই পাশে ব্যথা হতে থাকে।
২. কারও কারও জ্বর আসতে পারে।
৩. প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত হতে পারে।
৪. প্রস্রাবের গতি ঠিক থাকে না।
৫. কিডনির কার্যক্ষমতা ব্যাহত হয়।
৬. আর একটা সমস্যা হলো সিস্টের ভেতরে সংক্রমণ হয়ে গেলে ব্যথার সৃষ্টি হয়। কিছু কিছু সিস্ট ফেটে গিয়ে বিপদ বাড়াতে পারে। তখনই ইউরিনের সঙ্গে রক্তপাত হতে শুরু করে।

 

ওষুধেই কাজ হয়?

এখন অনেক রকমের ওষুধ রয়েছে যেগুলোর দিয়ে সিস্টের সমস্যা ঠিক করা সম্ভব। তবে প্রয়োজনে সিস্ট অপারেশনের দরকার পড়ে। ক্যান্সারাস সিস্ট হলে তার চিকিৎসা আবার অন্যরকম। তবে কার কোন পথে চিকিৎসা হবে সেটা চিকিৎসকই সিদ্ধান্ত নেবেন। সিস্ট ধরতে সিটি স্ক্যান, পাওয়ারফুল এক্সরে, এমআরআই করার দরকার পড়ে।  সূএ:ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিডিএস বাস্তবায়িত হলে ম্যাপ সংযুক্ত মালিকানা ভিত্তিক খতিয়ান চালু করা সম্ভব হবে – ভূমিমন্ত্রী

» বিএটি বাংলাদেশের ৫১তম এজিএম অনুষ্ঠিত

» ইসলামপুরে কৃষকরা পেল উন্নত মানের বীজ

» ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের সাথে ব্র্যাক ব্যাংকের কাস্টোডিয়াল সার্ভিস চুক্তি

» এপেক্স ইন্টারন্যাশনাল জার্নালিস্ট কাউন্সিল”এর বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের কমিটি গঠিত

» ২ লাখ টাকার ফ্যামিলি ট্রিপের সেরা ঈদ অফার দিচ্ছে রিয়েলমি

» ঘূর্ণিঝড়ে আলফাডাঙ্গার ২২ গ্রাম বিধ্বস্ত

» প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা আগামীকাল

» আইপিইউর এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের চেয়ারম্যান হলেন স্পিকার

» এক শহরের মধ্যে দুই দেশ

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কীভাবে বুঝবেন কিডনিতে সিস্ট? করণীয় কী?

ছবি সংগৃহীত

 

নানা কারণে কিডনিতে সিস্ট হতে পারে। চিকিৎসকরাও সিস্ট হওয়ার সঠিক কারণ নিশ্চিত করতে পারেন না। কিডনিতে সিস্ট হলে প্রথমেই তা বোঝা যায় না নিত্য জীবনযাপনে। আর ক্যান্সারাস সিস্ট হলে আরও চিন্তার।

 

এ বিষয়ে কথা বলেছেন কলকাতার অন্যতম নেফ্রোলজিস্ট ডা. প্রতিম সেনগুপ্ত।

 

পলিসিস্টিক ওভারি। এই অসুখটার সঙ্গে আমরা যতটা পরিচিত, পলিসিস্টিক কিডনি ততটাই অপরিচিত আমাদের কাছে। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে এই সমস্যা কিন্তু বাড়ছে। কিডনির নানা অসুখের মধ্যে অন্যতম কিডনিতে সিস্ট।

ঠিক কী হয়?

কিডনি সারা দিনে শরীরে ১৭৮ লিটার ইউরিন তৈরি করে। তার থেকে রিপ্রসেস করে মাত্র দেড় থেকে দুলিটার ইউরিন আমরা ত্যাগ করি। এই পুরো কাজটা প্রতিনিয়ত করতে করতে কখনো কখনো কিডনির দেয়ালে ফ্লুয়িড সমৃদ্ধ ছোট ছোট থলি তৈরি হয়। এটাকেই আমরা সিস্ট বলি। যা নানাভাবে কিডনির কার্যকারিতাকে ব্যাহত করে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে প্রকাশ থাকে না বলে রোগ ধরাও পড়ে দেরিতে। ফলে সমস্যা গুরুতর হয়।

 

সিস্টের নানা প্রকার রয়েছে

১. কিডনিতে সাধারণত যে সিস্ট অধিকাংশের দেখা যায় তা হলো সিম্পল সিস্ট। এক্ষেত্রে কোনোরকম লক্ষণ থাকে না। এই সিস্ট তেমনভাবে কোনো সমস্যাও তৈরি করে না। তবে চিকিৎসা না করালে তখন কিন্তু নানারকম কষ্ট প্রকাশ পায়। সাধারণত যাদের দীর্ঘদিন উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের এই ধরনের সিস্টের সম্ভাবনা বেশি। সিস্ট দুটি কিডনিতে একসঙ্গে হবে তা নয়। একটি কিডনিতেও সিস্ট হতে পারে।
২. পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ। এক্ষেত্রে দুটি কিডনিতেই অসংখ্য ছোট-ছোট সিস্ট দেখা যায়। এই রোগ সাধারণত বংশ পরম্পরায় কোনো একজন রোগীর শরীরে আসে। এ ধরনের সিস্ট হলে একটু চিন্তার। এই রোগের নাম অটোসোমাল পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ।
৩. তবে সবচেয়ে খারাপ ধরনের সিস্ট হলো যেগুলিতে ম্যালিগন্যান্সি থাকে। এ ধরনের সিস্ট একপ্রকার কিডনি টিউমার। পরিসংখ্যানগত দিক থেকে দেখা গেছে, এ ধরনের সিস্টে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম। মূলত সাধারণ সিস্টের সমস্যাতেই বেশিরভাগ ভোগেন। তাই অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সিস্ট হলে আগে কী ধরনের সিস্ট সেটা জানা খুব দরকার।

 

কোন লক্ষণ থাকবে?

১. সাধারণত সিস্টের কোনো লক্ষণ থাকেই না। তবে সিস্টের আকার বড় হয়ে গেলে কিডনিতে চাপ পড়তে শুরু করলে পেটে ব্যথা হয়। কোমরের দিকে ব্যথা বা পেটের দুই পাশে ব্যথা হতে থাকে।
২. কারও কারও জ্বর আসতে পারে।
৩. প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত হতে পারে।
৪. প্রস্রাবের গতি ঠিক থাকে না।
৫. কিডনির কার্যক্ষমতা ব্যাহত হয়।
৬. আর একটা সমস্যা হলো সিস্টের ভেতরে সংক্রমণ হয়ে গেলে ব্যথার সৃষ্টি হয়। কিছু কিছু সিস্ট ফেটে গিয়ে বিপদ বাড়াতে পারে। তখনই ইউরিনের সঙ্গে রক্তপাত হতে শুরু করে।

 

ওষুধেই কাজ হয়?

এখন অনেক রকমের ওষুধ রয়েছে যেগুলোর দিয়ে সিস্টের সমস্যা ঠিক করা সম্ভব। তবে প্রয়োজনে সিস্ট অপারেশনের দরকার পড়ে। ক্যান্সারাস সিস্ট হলে তার চিকিৎসা আবার অন্যরকম। তবে কার কোন পথে চিকিৎসা হবে সেটা চিকিৎসকই সিদ্ধান্ত নেবেন। সিস্ট ধরতে সিটি স্ক্যান, পাওয়ারফুল এক্সরে, এমআরআই করার দরকার পড়ে।  সূএ:ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com