চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় শিশু আবদুর রহমান আরাফ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন আরেক দফা পিছিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মামলাটির রায় ঘোষণার কথা থাকলেও তা পেছানোর আদেশ দেন চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত।
আদালতের এপিপি প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- হত্যার পরিকল্পনাকারী মো. ফরিদ, দারোয়ান মো. হাসান ও তার মা নাজমা বেগম। এদের মধ্যে হাসান জামিনে রয়েছেন। বাকি দুজন রয়েছেন কারাগারে।
প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু মোহাম্মদ হাসান নামে এক আসামির পক্ষে ‘শিশু আরাফ মামলার বাদী আবদুল কাইয়ুম ও গৃহিণী ফারহানা ইসলামের সন্তান নয়’ এ যুক্তিতে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করা হয়। এছাড়া আসামি মোহাম্মদ হাসান হাইকোর্ট থেকে ৬ মাসের জামিন নিয়েছিলেন, সেটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তার জামিন বাতিলের জন্য আবেদন করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষা ও জামিন বাতিলের আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১৮ মে দিন ধার্য করে আদালত।
এর আগে, ৩০ মার্চ মামলাটির রায় ঘোষণার কথা ছিল। তবে রায় পূর্ণাঙ্গ লেখা শেষ না হওয়ায় তা পিছিয়ে ২৮ এপ্রিল দিন ধার্য করেন চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মামলাটির রায় ঘোষণার দিন পেছানো হলো।
২০২০ সালের ৭ জুন বাকলিয়া থানার মিয়াখান নগরের মনসুর আলী রোডের নুরুল আলম মিয়ার বাড়ির ছাদের পানির ট্যাংক থেকে শিশু আরাফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আরাফ ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া আবদুল কাইয়ুমের ছেলে।
বাড়ির মালিক ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল আলম মিয়ার সঙ্গে পূর্ব বিরোধ ছিল ফরিদের। সেই বিরোধের জেরে নুরুল আলম মিয়াকে ফাঁসাতে নাজমা বেগমকে বেছে নেন ফরিদ। অর্থের বিনিময়ে শিশু আরাফকে হত্যার প্রস্তাব দেন। ঋণগ্রস্ত নাজমা বেগমও পারেননি অর্থের লোভ সামলাতে। হত্যা করেন শিশুটিকে।
ঘটনার দিন বিকেলে বাড়ির নিচতলায় খেলছিল শিশু আরাফ। নাজমার ছেলে হাসান ওই বাড়ির দারোয়ান। তার কাছ থেকে চাবি নিয়ে আরাফকে ছাদের পানির ট্যাংকে ফেলে হত্যা করেন নাজমা বেগম।
২০২১ সালের ১০ মার্চ এ মামলার চার্জ গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ২০ জন সাক্ষ্য দেন। আসামিপক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেন ১০ জন।