১০ ধরনের মানুষের ওপর রোজা ফরজ নয়

রোজা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। মুসলমানদের জন্য হিজরী বছরের নবম মাস, রমজান মাস, যে মাসে পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছিল, সে মাসে রোজা রাখা ফরজ। রমজান ছাড়া অন্য কোনো মাসে ফরজ রোজা নেই।

 

রোজা ফরজ হওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। প্রথম শর্ত হলো- রোজাদারকে মুসলিম হতে হবে। অর্থাৎ কাফির, নাস্তিক কিংবা মুসলিম ছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপর রোজা ফরজ নয়।

এছাড়াও দশ প্রকার মানুষের ওপর রোজা পালন করা ফরজ নয়। তারা হলেন-

 

১.অমুসলিম : ইসলাম গ্রহণের পূর্বে কাফিরের ওপর রোজা ফরজ নয় এবং তার জন্য ইসলাম গ্রহণের পর কাজা করাও জরুরি নয়।

২. অপ্রাপ্ত বয়স : অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়ের ওপর রোজা ফরজ নয়। কিন্তু অভ্যাস গড়ার জন্য তাদেরকে রোজা পালনের আদেশ করা যাবে।

 

৩. পাগল : প্রাপ্ত বয়স্ক পাগলের ওপর রোজা ফরজ নয়। এমনকি তার জন্য রোজা করিয়ে নেয়ারও প্রয়োজন নেই। অনুরূপ বিধান যার জ্ঞান লোপ পেয়েছে এবং যে অতি মাত্রায় মতিভ্রম হওয়ার কারণে ভালো-মন্দ তারতম্য করতে পারে না।

 

৪. অশীতিপর বৃদ্ধ : বার্ধক্যে উপনীত এমন লোক যে ভালো-মন্দ পার্থক্য করতে পারে না, অতিমাত্রায় বার্ধক্যের কারণে ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে পারে না।

 

৫. চির রোগী ও অক্ষমে: বিশেষত এমন বৃদ্ধ ব্যক্তি যে রোজা রাখতে শারীরিকভাবে সক্ষম নয়; অসুস্থতার কারণে কিছুক্ষণ পর পর ওষুধ গ্রহণ জরুরি, অন্যথায় অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এমন রোগী যার রোগমুক্তির সম্ভাবনা নেই। এরূপ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফিদইয়া দেয়া ওয়াজিব।

 

৬. মুসাফির : মুসাফিরের জন্য সফরে রোজা রাখা বা না রাখার এখতিয়ার আছে। তবে যদি সফরে রোজা না রাখে তাহলে পরে এসব রোজা কাযা করে নেবে। উল্লে­খ্য, মুসাফির ইচ্ছে করলে যতদিন সফরে থাকবে (উক্ত সফর স্থায়ী বা স্বল্পকালীন হোক) ততদিন রোজা ছাড়তে পারবে।

 

৭. রোগাক্রান্ত ব্যক্তি : অস্থায়ীভাবে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে রোজা রাখা কঠিন হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত রোজা রাখবে না। আর রমজানেই সুস্থ হয়ে গেলে অবশিষ্ট রোজা তাকে অবশ্যই রাখতে হবে এবং যেসব রমজানের রোজা রাখতে সক্ষম হয়নি তা সুস্থ হওয়ার পর গাইরে রমজানে কাযা করে নেবে।

৮. ঋতুবতী মহিলা : হায়েজ তথা মাসিক ঋতুস্রাব অথবা নিফাস তথা সন্তান প্রসব জনিত স্রাব হলে উক্ত অবস্থায় রোজা না রেখে স্রাব চলে যাওয়ার পর কাযা করে নেবে।

 

৯. গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারী : গর্ভধারণ বা দুগ্ধপান করানোর কারণে যদি তাদের প্রতি রোজা রাখা কঠিন হয় বা স্বীয় সন্তানের অনিষ্টের আশঙ্কা থাকে তবে রোজা না রেখে যখন আশঙ্কামুক্ত হবে তখন সুবিধামত সময়ে কাযা করে নেবে।

 

১০. দুর্ঘটনা কবলিত লোককে রক্ষাকারী নিরুপায় ব্যক্তি : এমন ব্যক্তি যে রোজা ছেড়ে দিতে বাধ্য, যেমন কোন ছোট বাচ্চা পানিতে ডুবে গেছে অথবা আগুনে পুড়ে যাচ্ছে তাকে মুক্ত করার জন্য রোজা ছেড়ে দিতে হলে ছেড়ে দেবে কিন্তু পরবর্তীতে তাকে কাজা করে নিতে হবে।

বিনা উজরে সিয়াম ভঙ্গ করলে তার জন্য ভীষণ শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের ফলাফল ভালো কিছু বয়ে আনে না: গয়েশ্বর

» ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত

» শিল্পপতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কৃতি, প্রেম জল্পনা তুঙ্গে

» সোহেল তাজকে প্রধান উপদেষ্টার ফোন

» অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করতে ষড়যন্ত্র চলছে: এ জেড এম জাহিদ

» দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বেলায়েত বাহিনীর প্রধানসহ চার সক্রিয় সদস্য আটক

» যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১১৭জন আটক

» অস্ত্র ও গুলিসহ রোহিঙ্গা যুবক আটক

» মাতৃভাষা না হলেও বিশ্বে আরবি প্রতিযোগিতায় শিশুদের অর্জন গৌরবের: ধর্ম উপদেষ্টা

» জি কে শামীমের জামিন বাতিল

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

১০ ধরনের মানুষের ওপর রোজা ফরজ নয়

রোজা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। মুসলমানদের জন্য হিজরী বছরের নবম মাস, রমজান মাস, যে মাসে পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছিল, সে মাসে রোজা রাখা ফরজ। রমজান ছাড়া অন্য কোনো মাসে ফরজ রোজা নেই।

 

রোজা ফরজ হওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। প্রথম শর্ত হলো- রোজাদারকে মুসলিম হতে হবে। অর্থাৎ কাফির, নাস্তিক কিংবা মুসলিম ছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপর রোজা ফরজ নয়।

এছাড়াও দশ প্রকার মানুষের ওপর রোজা পালন করা ফরজ নয়। তারা হলেন-

 

১.অমুসলিম : ইসলাম গ্রহণের পূর্বে কাফিরের ওপর রোজা ফরজ নয় এবং তার জন্য ইসলাম গ্রহণের পর কাজা করাও জরুরি নয়।

২. অপ্রাপ্ত বয়স : অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়ের ওপর রোজা ফরজ নয়। কিন্তু অভ্যাস গড়ার জন্য তাদেরকে রোজা পালনের আদেশ করা যাবে।

 

৩. পাগল : প্রাপ্ত বয়স্ক পাগলের ওপর রোজা ফরজ নয়। এমনকি তার জন্য রোজা করিয়ে নেয়ারও প্রয়োজন নেই। অনুরূপ বিধান যার জ্ঞান লোপ পেয়েছে এবং যে অতি মাত্রায় মতিভ্রম হওয়ার কারণে ভালো-মন্দ তারতম্য করতে পারে না।

 

৪. অশীতিপর বৃদ্ধ : বার্ধক্যে উপনীত এমন লোক যে ভালো-মন্দ পার্থক্য করতে পারে না, অতিমাত্রায় বার্ধক্যের কারণে ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে পারে না।

 

৫. চির রোগী ও অক্ষমে: বিশেষত এমন বৃদ্ধ ব্যক্তি যে রোজা রাখতে শারীরিকভাবে সক্ষম নয়; অসুস্থতার কারণে কিছুক্ষণ পর পর ওষুধ গ্রহণ জরুরি, অন্যথায় অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এমন রোগী যার রোগমুক্তির সম্ভাবনা নেই। এরূপ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফিদইয়া দেয়া ওয়াজিব।

 

৬. মুসাফির : মুসাফিরের জন্য সফরে রোজা রাখা বা না রাখার এখতিয়ার আছে। তবে যদি সফরে রোজা না রাখে তাহলে পরে এসব রোজা কাযা করে নেবে। উল্লে­খ্য, মুসাফির ইচ্ছে করলে যতদিন সফরে থাকবে (উক্ত সফর স্থায়ী বা স্বল্পকালীন হোক) ততদিন রোজা ছাড়তে পারবে।

 

৭. রোগাক্রান্ত ব্যক্তি : অস্থায়ীভাবে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে রোজা রাখা কঠিন হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত রোজা রাখবে না। আর রমজানেই সুস্থ হয়ে গেলে অবশিষ্ট রোজা তাকে অবশ্যই রাখতে হবে এবং যেসব রমজানের রোজা রাখতে সক্ষম হয়নি তা সুস্থ হওয়ার পর গাইরে রমজানে কাযা করে নেবে।

৮. ঋতুবতী মহিলা : হায়েজ তথা মাসিক ঋতুস্রাব অথবা নিফাস তথা সন্তান প্রসব জনিত স্রাব হলে উক্ত অবস্থায় রোজা না রেখে স্রাব চলে যাওয়ার পর কাযা করে নেবে।

 

৯. গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারী : গর্ভধারণ বা দুগ্ধপান করানোর কারণে যদি তাদের প্রতি রোজা রাখা কঠিন হয় বা স্বীয় সন্তানের অনিষ্টের আশঙ্কা থাকে তবে রোজা না রেখে যখন আশঙ্কামুক্ত হবে তখন সুবিধামত সময়ে কাযা করে নেবে।

 

১০. দুর্ঘটনা কবলিত লোককে রক্ষাকারী নিরুপায় ব্যক্তি : এমন ব্যক্তি যে রোজা ছেড়ে দিতে বাধ্য, যেমন কোন ছোট বাচ্চা পানিতে ডুবে গেছে অথবা আগুনে পুড়ে যাচ্ছে তাকে মুক্ত করার জন্য রোজা ছেড়ে দিতে হলে ছেড়ে দেবে কিন্তু পরবর্তীতে তাকে কাজা করে নিতে হবে।

বিনা উজরে সিয়াম ভঙ্গ করলে তার জন্য ভীষণ শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com