হলুদ তরমুজ চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলার ডোমাবাড়ি গ্রামের খোরশেদ আলমের ইউটিউব দেখে হলুদ তরমুজ চাষের শখ জাগে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো চাষ করেই সফল হয়েছেন তিনি। জানা যায়, ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে হলুদ তরমুজের চাষ শুরু করেন। প্রথমবারের চাষেই ভালো ফলন হয়েছে। হলুদ তরমুজ দেখতে আশেপাশের এলাকা থেকে মানুষ তার ক্ষেতে ছুটে আসছেন। অনেকেই আগামিতে এই তরমুজ চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করে খোরশেদ আলমের কাছে থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। নতুন এই প্রজাতির তরমুজ দেখতে সুন্দর, আবার স্বাদ ও সুগন্ধিও বেশ। একারণে এই তরমুজের চাহিদাও ভাল। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় ১৬ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। তার মধ্যে ১ হেক্টর জমিতে এই হলুদ তরমুজের চাষ হয়েছে।

 

তরমুজ চাষকারী খোরশেদ আলম বলেন, ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই হলুদ তরমুজের চাষ শুরু করি। ইউটিউবে এই তরমুজের ফলন দেখে খুব শখ জাগলো। তাই চিন্তা করলাম একবার পরীক্ষা করেই দেখি। এরপর সাহস করে বীজ ক্রয় করি। ৬ শতাংশ জায়গায় বীজ বপন করি। ফলনও ভালো হয়। ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২১৬টির মতো হলুদ তরমুজ আসে।

যার গড় ওজন প্রায় ৯ শত কেজি। তিনি বলেন, এই ফসল চাষ করতে সব মিলিয়ে ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার টাকার মতো। ফল থেকে আয় এসেছে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো। এটি শীত মৌসুমের ফসল। মাত্র ৩ মাসেই এর ফলন পাওয়া যায়। জুড়ী উপজেলার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এখানে এর ভালো ফলন হচ্ছে। এই তরমুজ চাষে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ারও সুযোগ আছে।

 

তিনি আরও বলেন, যারা বেকার রয়েছেন তারা এই ফল চাষ করে তাদের বেকারত্ব দূর করতে পারেন। মাত্র ৩ মাস সময় সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে ১ বিঘা জমিতে ৫ লাখ টাকার মতো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমি এই ফল চাষ করি আমার পারিবারিক চাহিদার জন্য। ফলন হবার পর এর চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। যার জন্য অনেককেই ফলটি দেওয়া যায়নি। তবে তিনি আগামীতে এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করবো।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জসিম উদ্দিন বলেন, হলুদ তরমুজ উচ্চমূল্যের ফসল। এটি হাইব্রিড জাতীয়। উৎপাদন ব্যবস্থা দেশি তরমুজের মত। হলুদ তরমুজে পুষ্টি উপাদান বেশি। এটির ভিতরটা কম্প্রেসড বা ঠাসা থাকে। এটিতে ভিটামিন এ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ফলটি অনেক মিষ্টি। জুড়ীর মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় ফলটি চাষের সম্ভাবনা অনেক। আগামীতে হলুদ তরমুজ চাষ সম্প্রসারণে‌কাজ করবে

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বলেন, ফলটি ভিন্ন কালারের হওয়ায় দেখতে আকর্ষণ করে। স্বাদে খুবই মিষ্টি। দেখলেই খেতে ইচ্ছে করে। উচ্চফলনশীল এ হলুদ তরমুজে ভিটামিন-এ ও সি রয়েছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় ব্যবস্থা নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» জঙ্গিবাদের সন্দেহে বাংলাদেশি নাগরিকদের তদন্তে সহযোগিতা করবে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ

» এবার মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখলেন সাকিব

» মিটফোর্ডে ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় ৪জন গ্রেফতার

» ভাতিজার ছুরিকাঘাতে চাচা নিহত

» সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

» ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এক ব্যক্তিকে পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে হত্যা

» কখনো বিবর্তন

» সন্ত্রাস দমনে সরকারকে সহযোগিতায় সর্বদা প্রস্তুত বিএনপি : মাহদী আমিন

» সিরিয়ার বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে আগুন ধরিয়ে দিল ইসরায়েলি বাহিনী

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হলুদ তরমুজ চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলার ডোমাবাড়ি গ্রামের খোরশেদ আলমের ইউটিউব দেখে হলুদ তরমুজ চাষের শখ জাগে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো চাষ করেই সফল হয়েছেন তিনি। জানা যায়, ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে হলুদ তরমুজের চাষ শুরু করেন। প্রথমবারের চাষেই ভালো ফলন হয়েছে। হলুদ তরমুজ দেখতে আশেপাশের এলাকা থেকে মানুষ তার ক্ষেতে ছুটে আসছেন। অনেকেই আগামিতে এই তরমুজ চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করে খোরশেদ আলমের কাছে থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। নতুন এই প্রজাতির তরমুজ দেখতে সুন্দর, আবার স্বাদ ও সুগন্ধিও বেশ। একারণে এই তরমুজের চাহিদাও ভাল। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় ১৬ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। তার মধ্যে ১ হেক্টর জমিতে এই হলুদ তরমুজের চাষ হয়েছে।

 

তরমুজ চাষকারী খোরশেদ আলম বলেন, ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই হলুদ তরমুজের চাষ শুরু করি। ইউটিউবে এই তরমুজের ফলন দেখে খুব শখ জাগলো। তাই চিন্তা করলাম একবার পরীক্ষা করেই দেখি। এরপর সাহস করে বীজ ক্রয় করি। ৬ শতাংশ জায়গায় বীজ বপন করি। ফলনও ভালো হয়। ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২১৬টির মতো হলুদ তরমুজ আসে।

যার গড় ওজন প্রায় ৯ শত কেজি। তিনি বলেন, এই ফসল চাষ করতে সব মিলিয়ে ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার টাকার মতো। ফল থেকে আয় এসেছে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো। এটি শীত মৌসুমের ফসল। মাত্র ৩ মাসেই এর ফলন পাওয়া যায়। জুড়ী উপজেলার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এখানে এর ভালো ফলন হচ্ছে। এই তরমুজ চাষে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ারও সুযোগ আছে।

 

তিনি আরও বলেন, যারা বেকার রয়েছেন তারা এই ফল চাষ করে তাদের বেকারত্ব দূর করতে পারেন। মাত্র ৩ মাস সময় সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে ১ বিঘা জমিতে ৫ লাখ টাকার মতো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমি এই ফল চাষ করি আমার পারিবারিক চাহিদার জন্য। ফলন হবার পর এর চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। যার জন্য অনেককেই ফলটি দেওয়া যায়নি। তবে তিনি আগামীতে এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করবো।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জসিম উদ্দিন বলেন, হলুদ তরমুজ উচ্চমূল্যের ফসল। এটি হাইব্রিড জাতীয়। উৎপাদন ব্যবস্থা দেশি তরমুজের মত। হলুদ তরমুজে পুষ্টি উপাদান বেশি। এটির ভিতরটা কম্প্রেসড বা ঠাসা থাকে। এটিতে ভিটামিন এ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ফলটি অনেক মিষ্টি। জুড়ীর মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় ফলটি চাষের সম্ভাবনা অনেক। আগামীতে হলুদ তরমুজ চাষ সম্প্রসারণে‌কাজ করবে

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বলেন, ফলটি ভিন্ন কালারের হওয়ায় দেখতে আকর্ষণ করে। স্বাদে খুবই মিষ্টি। দেখলেই খেতে ইচ্ছে করে। উচ্চফলনশীল এ হলুদ তরমুজে ভিটামিন-এ ও সি রয়েছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com