জেনে নিন বিশেষজ্ঞরা ডিম খাওয়া নিয়ে কী বলছেন…
ডিম খেলে কি সত্যিই কোলেস্টেরল বাড়ে?
একটি ডিমের কুসুমে গড়ে ২৫০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে, যা কিনা ধমনীর রক্ত জমাট হয়ে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হয়। আর এ কথা ভেবে অনেকেই খাবারের তালিকা থেকে ডিম পুরোপুরি বাদ দিয়ে দেন। জার্মানির ডায়েবেটিস ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডা. মাটিয়াস রিডল জানান, ডিম খেলে প্রতিটি মানুষেরই যে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাবে তা ভাবা মোটেই ঠিক নয়।
ডিম ফিট রাখে : গত কয়েক বছরের গবেষণা থেকে বেরিয়ে এসেছে যে, একজন সুস্থ মানুষের শরীরে কোলেস্টেরল নিজে থেকে স্বাভাবিক হয়ে যায়। দিনে একটি ডিম খেলে শরীরের ক্ষতি তো হয়ই না, বরং ডিম শরীরকে ফিট রাখে, জানান ড. রিডল।
প্রতিদিন ডিম খান: প্রতিদিন একটি করে ডিম খেয়েছেন এ রকম এক হাজার পুরুষকে নিয়ে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে ইউনিভারসিটি অফ ইস্টার্ন ফিনল্যান্ডের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, তাদের কারোই হার্ট অ্যাটাক বা স্টোকের ঝুঁকি বাড়েনি।
আরো গবেষণা : প্রায় একই রকম তথ্য জানা যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা এপিডস্টারের কাছ থেকে। ১৯৮২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৫ লক্ষ ৫০,০০০ মানুষকে নিয়ে করা হয়েছিল গবেষণা এবং সে গবেষণা থেকে জানা গেছে, হৃদপিণ্ডে ডিম খাওয়ার নেতিবাচক কোনো প্রভাব তো পড়েইনি বরং তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি কমেছে শতকরা ১২ ভাগ।
উঁচু মানের প্রোটিন: ডিমে রয়েছে উঁচু মানের প্রোটিন, যা শক্তির জোগান দেয় এবং স্লিম রাখে। ডিম যেমন শরীরের পেশিকে শক্ত করে, তেমনি কোষগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করে।
স্লিম থাকতে ডিম খান : সকালে দুটো ডিম খেলে তা প্রায় পাঁচ ঘন্টা পেট ভরা রাখে। শুধু তা-ই নয়, ডিম মিষ্টি জাতীয় কোনো কিছু খাওয়ার আগ্রহকে দমন করে। তাই ডা. রিড বললেন, ওজন কমাতে আগ্রহীদের জন্য ডিম খুব উপকারী।
প্রয়োজনীয় মিনারেল : ডিমে রয়েছে জিঙ্ক, আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়ামের মতো জরুরি মিনারেল, যা প্রতিটি শরীরের জন্য প্রয়োজন। এই মিনারেলের একটি কম হলেই শরীর ক্লান্ত লাগে এবং মানুষ সহজে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাছাড়া এসবের অভাবে শরীরে নানা ইনফেকশন, চুল পড়া বা থাইরয়েডের মতো নানা সমস্যা দেখা দেয়।
ভিটামিন ভাণ্ডার: ডিমে একমাত্র ভিটামিন ‘সি’ ছাড়া সব ভিটামিনই রয়েছে। ডিমে থাকা ভিটামিন এ, ডি এবং ই শরীরের ইমিউন সিস্টেম ঠিক রাখার জন্য খুবই জরুরি। তবে যারা ডিমের পুরো ভিটামিন পেতে চান, তাদের জন্য খাঁচায় পোষা মুরগির চেয়ে খোলা ক্ষেতে ঘুরে বেড়ানো মুরগির ডিমই বেছে নেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞের।