ব্রাহ্মবাড়িয়ার আখাউড়ায় হাট বাজারে শীত মৌসুমের মরিচ, বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ নানা জাতের সবজির চারা বিক্রি বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে। উৎকৃষ্ট বীজ থেকে চারা উৎপাদনে ফলন ভালো হওয়ায় স্থানীয় পর্যায়ে এর চাহিদা রয়েছে বেশ। সৌখিন লোকজনরা চারা ক্রয় করে পারিবারিক সবজির পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছেন।
এরইমধ্যে মৌসুমী সবজির চারা বিক্রি করে ভাগ্য বদল করেছেন ফরিদ মিয়া নামে এক কৃষক। তিনি সবজি চারা বিক্রি করে বছরে আয় ৪ লাখ টাকা। তিনি গত ৫ বছর ধরে দেশীয় পদ্ধতিতে উৎপাদিত সবজির চারা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। পাশাপাশি করছেন সবজির আবাদও। তিনি সদর উপজেলার সুহিলপুর গ্রামের সুরজ মিয়ার ছেলে। পরিবারে দুই ছেলে ১ মেয়েসহ ৬ জন সদস্য রয়েছে।
ফরিদ মিয়া বলেন, বাড়ির সংলগ্ন তার ১২ শতাংশ জায়গা রয়েছে। ওই জায়গায় বছরের ৮ মাস নানা প্রজাতির সবজির চারা উৎপাদন করে তিনি হাট বাজারে বিক্রি করছেন। বাকী সময় তিনি সবজি আবাদ করছেন।
তিনি বলেন, সবজি চারা উৎপাদনে সময় এবং খরচ কম লাভ বেশী। বীজ রোপণের মাত্র ২২দিনের মাথায় চারা বিক্রয়যোগ্য হয়ে উঠে। এ মৌসুমে তার ১২ শতাংশ জায়গায় প্রায় দুই লাখের উপর চারা উৎপাদন করেন। চারা রক্ষায় রাখছেন বাড়তি নজর। চারাগুলো প্রখর রোদ থেকে রক্ষার জন্য সকালে ঢেকে দেয়া হয়, আবার বৃষ্টি হলেও ঢেকে রাখা হয়। একই জমিতে বছরে ৪ বার বীজ উৎপাদন করে চারা বিক্রি করছেন। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে যাবতীয় খরচ বাদে বছরে চারা ও সবজি বিক্রি করে বছরে তার ৪ লাখ টাকার উপর আয় হয়।
সরেজমিন পৌর শহরের সড়ক বাজার গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে ফুটপাতে নানা জাতের সবজি চারা নিয়ে বসে আছেন। বাজারে আগত অনেক সৌখিন ক্রেতারা দেখে এসব চারা ক্রয় করছেন।
পৌর শহরের তারাগন এলাকার আশরাফুল আলম বলেন, নতুন জায়গা ক্রয় করে বাড়ি করা হয়। বাড়ির সামনে অনেক জায়গা খালি পড়ে আছে। তাই সবজি চারা কেনা হয়েছে। গত বছর চারা নেওয়া হয়েছিল সেগুলো ভালো ফলন হয়েছে।
গৃহিণী মোছেনা আক্তার বলেন, গত দুই বছর ধরে এই লোকের কাছ থেকে মৌসমী নানা জাতের সবজি চারা ক্রয় করেন। এই চারাগুলো খুবই ভালো পড়েছে। তাছাড়া দেখার মতো ফলন ও হয়েছে। তাই বেগুন, চমেটো আর মরিচের বেশ কয়েকটি চারা কেনা হয়েছে।
সড়ক বাজারের ব্যবসায়ী মামুন মিয়া বলেন, বাড়ির ছাদে সবজি আবাদ করতে বেগুন, টমেটো আর মেিরচের চারা কেনা হয়েছে। আসলে যত্ন নিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
চারা বিক্রেতা ফরিদ মিয়া বলেন, এক সময় তিনি সবজি আবাদ করতেন। কিন্তু এতে ভালো আয় না হওয়ায় চারা উৎপাদন শুরু করেন। কারণ এ চাষে সময় কম লাভ বেশী।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, সরকার কৃষকের মাঝে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা হিসেবে সবজি বীজ বিতরণ করছেন। এছাড়া সবজি চাষে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সবজির চারা একটি লাভজনক ব্যবসা। আমরা কৃষকদের চারার গুণগতমান বজায় রাখতে ও নতুন নতুন জাত ও আগাম সবজির চারা উৎপাদনে পরামর্শ দিয়ে থাকি।
সূএ: ডেইলি-বাংলাদেশ