লকডাউনে সাংহাই: দ্রুত ফুরিয়ে আসছে খাবার, ঘরে ঘরে হাহাকার

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বড় সংকটে পড়েছে চীনের বৃহত্তম শহর সাংহাই। সংক্রমণ মোকাবিলায় পুরো শহরে জারি করা হয়েছে কঠোর লকডাউন। জরুরি খাবার-দাবার কিনতে বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না বাসিন্দাদের। সরকারি সহায়তাও হয়ে উঠেছে অপ্রচুল। ফলে দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বাসিন্দাদের ঘরের খাবার। খবর বিবিসির।

 

বৃহস্পতিবার  সাংহাইয়ে প্রায় ২০ হাজার নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, শহরটি ‘সমস্যায়’ রয়েছে, তবে তারা পরিস্থিতি উন্নতির চেষ্টা করছেন।

করোনা মোকাবিলায় চীনা কর্তৃপক্ষের কিছু পদক্ষেপ নিয়ে এরই মধ্যে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। যেমন- করোনা পজিটিভ শনাক্ত হলে ছোট ছোট শিশুদের বাবা-মা থেকে আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে।

 

সমালোচনার মুখে পরে করোনা পজিটিভ বাবা-মাকে আইসোলেশন সেন্টারে সন্তানদের সঙ্গে থাকতে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু করোনা নেগেটিভ হলে তাদের আলাদাই থাকতে হচ্ছে।

 

শহরটির বাসিন্দাদের মধ্যে যারা করোনা পজিটিভ শনাক্ত হচ্ছেন, তাদের নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। এ ধরনের রোগীদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যাওয়া বাধ্যতামূলক।

 

সমালোচকদের অভিযোগ, এসব কোয়ারেন্টাইন সেন্টারও লোকারণ্য হয়ে উঠেছে এবং পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে।

খাদ্য সংকট কেন?
করোনার প্রকোপ মোকাবিলায় গত সোমবার (৪ এপ্রিল) গোটা সাংহাইয়ে লকডাউন জারি করা হয়। এরপর থেকে অনেকটা ‘বন্দি’ জীবনযাপন করছেন শহরটির আড়াই কোটি বাসিন্দা।

সেখানকার বেশিরভাগ লোককে খাবার ও পানির জন্য আগাম অর্ডার দিতে এবং শাকসবজি, মাংস, ডিম পেতে সরকারি গাড়ি কখন আসবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

 

তবে লকডাউনের মধ্যে বাড়তি চাপের কারণে ডেলিভারি সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে অনেকেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন।

 

একজন নগর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, দয়া করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপ্রতুল ডেলিভারি সমস্যার সমাধান করুন। আরেক ব্যক্তি লিখেছেন, জীবনে প্রথমবার আমি ক্ষুধার্ত থাকলাম।

 

শহরের কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে চাল, নুডুলস, শস্য, তেল ও মাংসের মজুত রয়েছে। শুধু সেগুলো বিতরণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।

 

সাংহাই মিউনিসিপ্যাল কমিশন অব কমার্সের ডেপুটি ডিরেক্টর লিউ মিন বুধবার বলেছেন, এটি সত্য যে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ নিশ্চিত করতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।

 

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সাংহাইয়ের ভাইস মেয়র ঘোষণা দিয়েছেন, শহরের কিছু পাইকারি বাজার ও খাবারের দোকান ফের খুলে দেওয়া হবে এবং আরও বেশি ডেলিভারিকর্মীকে লকডাউন এলাকার বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেবে কর্তৃপক্ষ।

সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ঐকমত্য জরুরি : মান্না

» আরএসএফের হামলায় পালিয়েছে সুদানের এক গ্রামের ৮ হাজার পরিবার

» সাবেক এমপি মজিদ খান গ্রেফতার

» ‘দেশে যেন সহিংসতা ও হানাহানি না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে’

» ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ সারাদেশে আরও ৩৪৩ জন গ্রেফতার

» রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক ১৫ ফেব্রুয়ারি

» অভ্যুত্থানের পক্ষে হলে মব করা বন্ধ করুন : মাহফুজ আলম

» ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার : মির্জা ফখরুল

» ইসলামপুরে ছাত্রদলের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল

» বিঞ্জে আসছে ভিকি জাহেদের ‘নীল সুখ’

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

লকডাউনে সাংহাই: দ্রুত ফুরিয়ে আসছে খাবার, ঘরে ঘরে হাহাকার

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বড় সংকটে পড়েছে চীনের বৃহত্তম শহর সাংহাই। সংক্রমণ মোকাবিলায় পুরো শহরে জারি করা হয়েছে কঠোর লকডাউন। জরুরি খাবার-দাবার কিনতে বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না বাসিন্দাদের। সরকারি সহায়তাও হয়ে উঠেছে অপ্রচুল। ফলে দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বাসিন্দাদের ঘরের খাবার। খবর বিবিসির।

 

বৃহস্পতিবার  সাংহাইয়ে প্রায় ২০ হাজার নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। স্থানীয় কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, শহরটি ‘সমস্যায়’ রয়েছে, তবে তারা পরিস্থিতি উন্নতির চেষ্টা করছেন।

করোনা মোকাবিলায় চীনা কর্তৃপক্ষের কিছু পদক্ষেপ নিয়ে এরই মধ্যে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। যেমন- করোনা পজিটিভ শনাক্ত হলে ছোট ছোট শিশুদের বাবা-মা থেকে আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে।

 

সমালোচনার মুখে পরে করোনা পজিটিভ বাবা-মাকে আইসোলেশন সেন্টারে সন্তানদের সঙ্গে থাকতে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু করোনা নেগেটিভ হলে তাদের আলাদাই থাকতে হচ্ছে।

 

শহরটির বাসিন্দাদের মধ্যে যারা করোনা পজিটিভ শনাক্ত হচ্ছেন, তাদের নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। এ ধরনের রোগীদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যাওয়া বাধ্যতামূলক।

 

সমালোচকদের অভিযোগ, এসব কোয়ারেন্টাইন সেন্টারও লোকারণ্য হয়ে উঠেছে এবং পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে।

খাদ্য সংকট কেন?
করোনার প্রকোপ মোকাবিলায় গত সোমবার (৪ এপ্রিল) গোটা সাংহাইয়ে লকডাউন জারি করা হয়। এরপর থেকে অনেকটা ‘বন্দি’ জীবনযাপন করছেন শহরটির আড়াই কোটি বাসিন্দা।

সেখানকার বেশিরভাগ লোককে খাবার ও পানির জন্য আগাম অর্ডার দিতে এবং শাকসবজি, মাংস, ডিম পেতে সরকারি গাড়ি কখন আসবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

 

তবে লকডাউনের মধ্যে বাড়তি চাপের কারণে ডেলিভারি সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে অনেকেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন।

 

একজন নগর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, দয়া করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপ্রতুল ডেলিভারি সমস্যার সমাধান করুন। আরেক ব্যক্তি লিখেছেন, জীবনে প্রথমবার আমি ক্ষুধার্ত থাকলাম।

 

শহরের কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে চাল, নুডুলস, শস্য, তেল ও মাংসের মজুত রয়েছে। শুধু সেগুলো বিতরণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।

 

সাংহাই মিউনিসিপ্যাল কমিশন অব কমার্সের ডেপুটি ডিরেক্টর লিউ মিন বুধবার বলেছেন, এটি সত্য যে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ নিশ্চিত করতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।

 

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সাংহাইয়ের ভাইস মেয়র ঘোষণা দিয়েছেন, শহরের কিছু পাইকারি বাজার ও খাবারের দোকান ফের খুলে দেওয়া হবে এবং আরও বেশি ডেলিভারিকর্মীকে লকডাউন এলাকার বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেবে কর্তৃপক্ষ।

সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com