রাবি ছাত্র নিহতের প্রতিবাদে রামপুরায় শিক্ষার্থীদের অবস্থান

ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে এবার ট্রাকচাপায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্র মাহবুব হাবিব হিমেল নিহতের ঘটনায় রাজধানীর রামপুরায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি থেকে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করাসহ ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে।

 

শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রামপুরা ব্রিজে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

এসময় ব্রাশ আর রঙ দিয়ে সড়কে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ লিখতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। তাদের কেউ কেউ হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সড়কেই বসে পড়েন। প্ল্যাকার্ডে ‘বিনা শর্তে সারাদেশে বাসে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস দিতে হবে,’ ‘নিরাপদ সড়ক চাই, সড়কের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন, লড়াই করুন, সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করুন,’ ‘সড়কে শৃঙ্খলা ফেরান’ এসব স্লোগান লেখা ছিল।

 

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেত্রী খিলগাঁও মডেল কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, আমাদের ১১ দফা দাবি যখন পরিপূর্ণভাবে মানা হবে, ঠিক তখনই সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। আমাদের ১১ দফায় চালকদের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও মজুরির ব্যবস্থা করা, চালকবান্ধব সড়ক নিশ্চিত করা, সড়কের অবকাঠামো উন্নয়নসহ সব ধরনের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।

 

তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি, এর ফলাফল নির্ভর করছে সরকারের ওপর। আমরা দাবি জানিয়ে আসছি, সরকার কতটুকু সাড়া দেবেন তার ওপরই নির্ভর করছে।

 

আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি দাবি করে সোহাগী বলেন, একটা দেশের সড়ক ব্যবস্থাপনার নাজেহাল অবস্থা। শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ দেশের মেধাবী মানুষেরা অনবরত সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন। অথচ সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রীদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। কারণ, তারা দামি গাড়িতে ভিআইপি সুবিধা নিয়ে রাস্তায় চলাচল করেন। তাদের তো কোনো ভোগান্তি নেই। এ কারণে জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।

 

আপনারা সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করেই হুটহাট সড়কে নামছেন কি না, জানতে চাইলে এ শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আন্দোলন করছি। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। আলোচনা তো একপাক্ষিক হয় না। দুই পক্ষেরই উদ্যোগ থাকতে হবে। সরকার যদি আমাদের সঙ্গে বসতে চায়, আমরা বসবো।

 

শিক্ষার্থীরা বলছেন, সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর আমাদের নিরাপদ সড়কের দাবি আরও জোরালোভাবে আমরা জানাচ্ছি। সড়কে আমরা কেউ নিরাপদ নই, তাই গুরুত্ব সহকারে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো খুবই জরুরি।

 

গত মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের সামনে নির্মাণাধীন বিজ্ঞান ভবনের পাশে ট্রাকচাপায় নিহত হন শিক্ষার্থী মাহবুব হাবিব হিমেল। এ ঘটনায় রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি ট্রাকে আগুন দেন হিমেলের বিক্ষুদ্ধ সহপাঠীরা। একইসঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি তুলে আন্দোলনে নামে তারা। রাতভর অবরোধ করে রাখে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক। ওই রাতেই রাবি প্রক্টর ড. লিয়াকত আলীকে প্রত্যাহার করা হয়। সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জেলের জালে ধরা পড়েছে ২২ কেজি ওজনের বিশাল কাতল মাছ,বিক্রি ৪৬ হাজার ২০০ টাকা

» ‘আগামীর নির্বাচন হবে পুলিশ বাহিনীর কলঙ্ক মুছার নির্বাচন’

» ইসির ছয় কর্মকর্তাকে বদলি

» সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নবীন কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

» নতুন বোঝা বইতে রাজি নই, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে স্থায়ী হতে পারবে না : প্রধান উপদেষ্টা

» তরুণ নৌ কর্মকর্তাদের কুচকাওয়াজে মুগ্ধ সেনাপ্রধান

» একটু ছাড় দেওয়ার জায়গায় আসুন, রাজনৈতিক দলগুলোকে আলী রীয়াজ

» জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক

» শাপলা-কলম-মোবাইল প্রতীক চায় এনসিপি

» আজও তালাবদ্ধ ডিএসসিসির নগর ভবন

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

রাবি ছাত্র নিহতের প্রতিবাদে রামপুরায় শিক্ষার্থীদের অবস্থান

ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে এবার ট্রাকচাপায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্র মাহবুব হাবিব হিমেল নিহতের ঘটনায় রাজধানীর রামপুরায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি থেকে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করাসহ ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে।

 

শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রামপুরা ব্রিজে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

এসময় ব্রাশ আর রঙ দিয়ে সড়কে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ লিখতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। তাদের কেউ কেউ হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সড়কেই বসে পড়েন। প্ল্যাকার্ডে ‘বিনা শর্তে সারাদেশে বাসে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস দিতে হবে,’ ‘নিরাপদ সড়ক চাই, সড়কের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন, লড়াই করুন, সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করুন,’ ‘সড়কে শৃঙ্খলা ফেরান’ এসব স্লোগান লেখা ছিল।

 

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেত্রী খিলগাঁও মডেল কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, আমাদের ১১ দফা দাবি যখন পরিপূর্ণভাবে মানা হবে, ঠিক তখনই সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। আমাদের ১১ দফায় চালকদের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও মজুরির ব্যবস্থা করা, চালকবান্ধব সড়ক নিশ্চিত করা, সড়কের অবকাঠামো উন্নয়নসহ সব ধরনের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।

 

তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি, এর ফলাফল নির্ভর করছে সরকারের ওপর। আমরা দাবি জানিয়ে আসছি, সরকার কতটুকু সাড়া দেবেন তার ওপরই নির্ভর করছে।

 

আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি দাবি করে সোহাগী বলেন, একটা দেশের সড়ক ব্যবস্থাপনার নাজেহাল অবস্থা। শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ দেশের মেধাবী মানুষেরা অনবরত সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন। অথচ সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রীদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। কারণ, তারা দামি গাড়িতে ভিআইপি সুবিধা নিয়ে রাস্তায় চলাচল করেন। তাদের তো কোনো ভোগান্তি নেই। এ কারণে জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।

 

আপনারা সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করেই হুটহাট সড়কে নামছেন কি না, জানতে চাইলে এ শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আন্দোলন করছি। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। আলোচনা তো একপাক্ষিক হয় না। দুই পক্ষেরই উদ্যোগ থাকতে হবে। সরকার যদি আমাদের সঙ্গে বসতে চায়, আমরা বসবো।

 

শিক্ষার্থীরা বলছেন, সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর আমাদের নিরাপদ সড়কের দাবি আরও জোরালোভাবে আমরা জানাচ্ছি। সড়কে আমরা কেউ নিরাপদ নই, তাই গুরুত্ব সহকারে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো খুবই জরুরি।

 

গত মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের সামনে নির্মাণাধীন বিজ্ঞান ভবনের পাশে ট্রাকচাপায় নিহত হন শিক্ষার্থী মাহবুব হাবিব হিমেল। এ ঘটনায় রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি ট্রাকে আগুন দেন হিমেলের বিক্ষুদ্ধ সহপাঠীরা। একইসঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি তুলে আন্দোলনে নামে তারা। রাতভর অবরোধ করে রাখে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক। ওই রাতেই রাবি প্রক্টর ড. লিয়াকত আলীকে প্রত্যাহার করা হয়। সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com