যত্নে থাকুক ডায়াবেটিক ফুট

ছবি সংগৃহীত

 

ডা. শাহজাদা সেলিম :ডায়াবেটিক রোগীর অন্যতম অবহেলিত কিন্তু বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে পা। ডায়াবেটিকের একজন রোগীর পা কাটা পড়ার ঝুঁকি নন-ডায়াবেটিক রোগীর তুলনায় ২৫ গুণ বেশি।

 

আর এ জন্য যে শুধু সংক্রমণ দায়ী তা নয়, স্নায়ু দৌর্বল্যের কারণে পায়ে অনুভূতিহীনতা, ধমনিতে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হওয়া, সহজে জখম ও সংক্রমণ, ক্ষত ও গঠন বিকৃতি- সব কিছু মিলিয়ে ডায়াবেটিক রোগীর পা দুটি খুবই নাজুক অবস্থায় থাকে। তাই তাদের পায়ের একটি আলাদা নামও আছে চিকিৎসাবিজ্ঞানে আর সেটি হচ্ছে ‘ডায়াবেটিক ফুট’।

ঝুঁকিসমূহ : 

পায়ের ত্বক ফাটা, শালগড়া, পুড়ে যাওয়া, আঁটসাঁট জুতার জন্য পা ছিলে যাওয়া বা ধারালো কিছুতে কেটে যাওয়ার কারণে জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে এবং অনিয়ন্ত্রিত রক্ত শর্করার কারণে দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। ব্যথাহীনতার কারণে এসব রোগী চিকিৎসকের কাছে অনেক দেরিতে যায়।

 

কখনো রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে গিয়ে জীবনাশঙ্কা পর্যন্ত দেখা দিতে পারে। বয়স বৃদ্ধি, দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস, অপুষ্টি, দারিদ্র্য, একাকিত্ব, ধূমপান, দৃষ্টিক্ষীণতা ও কিডনি রোগ থেকে থাকলে তাদের ডায়াবেটিক ফুটের ঝুঁকি আরো বেশি।

করণীয় : 

ডায়াবেটিক ফুটের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত পায়ের যত্ন নিন। যেমন : পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও তেল বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার, কখনোই খালি পায়ে না হাঁটা, নখ কাটা ও জুতা নির্বাচনে সাবধানতা, কড়া বা উঠে যাওয়া চামড়া নিজে নিজে না তোলা ইত্যাদি বিষয়ে সতর্ক থাকুন।

 

নিয়মিত আপনার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পায়ের রক্ত চলাচল কিংবা অনুভূতি সম্পর্কে ধারণা নিন। যেকোনো সামান্য পা ফাটা, রঙের পরিবর্তন, কাটা বা পোড়া বা ছত্রাক সংক্রমণ, ঘা ইত্যাদিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিন ও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

চিকিৎসা : 

রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে পায়ের ধমনি পরীক্ষা করে বা কালার ডপলার আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়। কিছু ওষুধের মাধ্যমে ব্যাহত রক্ত চলাচলের কিছুটা উন্নতি করা যায়। তবে এনজিওগ্রাফি, বেলুন এনজিওপ্লাস্টি, স্টেন্টিং বা রিং বসানো, বাইপাস অপারেশনের মাধ্যমে অনেক সময় পা কাটার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।

 

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। সূএ : বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন শেখ হাসিনা : কর্নেল অলি

» অ্যাটর্নি জেনারেল-পিপি-বিচারপতি বিএনপির হাতে, এটা ওপেন সিক্রেট: হান্নান মাসউদ

» অবশেষে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মাঠে নেমেছে ইশরাক

» এবার রাজপথে নামার ঘোষণা দিলেন ইশরাক

» আগামী মাসে রিজার্ভ পৌঁছাবে ৩০ বিলিয়ন ডলারে: আসিফ মাহমুদ

» ‘সন্ধান মিলল জাফর ইকবালের পূর্ব পুরুষ “ক্যাপুচিন প্রজাতির” বানরদের’ : ইলিয়াস হোসেন

» অপসারণ নয়, নিজ থেকেই সরে যেতে চান পররাষ্ট্রসচিব : উপদেষ্টা

» আমি বিদেশি হলে তারেক রহমানকেও বিদেশি নাগরিক বলতে হয় : নিরাপত্তা উপদেষ্টা

» সুন্দরবনের দুয়ার তিন মাসের জন্য বন্ধ: জেলেদের জীবন-জীবিকার সংকটে সরকারি সহায়তার দাবি

» মাদক সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিমুক্ত উপজেলা গড়তে চান ওসি মোঃ মতলুবর রহমান

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যত্নে থাকুক ডায়াবেটিক ফুট

ছবি সংগৃহীত

 

ডা. শাহজাদা সেলিম :ডায়াবেটিক রোগীর অন্যতম অবহেলিত কিন্তু বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে পা। ডায়াবেটিকের একজন রোগীর পা কাটা পড়ার ঝুঁকি নন-ডায়াবেটিক রোগীর তুলনায় ২৫ গুণ বেশি।

 

আর এ জন্য যে শুধু সংক্রমণ দায়ী তা নয়, স্নায়ু দৌর্বল্যের কারণে পায়ে অনুভূতিহীনতা, ধমনিতে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হওয়া, সহজে জখম ও সংক্রমণ, ক্ষত ও গঠন বিকৃতি- সব কিছু মিলিয়ে ডায়াবেটিক রোগীর পা দুটি খুবই নাজুক অবস্থায় থাকে। তাই তাদের পায়ের একটি আলাদা নামও আছে চিকিৎসাবিজ্ঞানে আর সেটি হচ্ছে ‘ডায়াবেটিক ফুট’।

ঝুঁকিসমূহ : 

পায়ের ত্বক ফাটা, শালগড়া, পুড়ে যাওয়া, আঁটসাঁট জুতার জন্য পা ছিলে যাওয়া বা ধারালো কিছুতে কেটে যাওয়ার কারণে জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে এবং অনিয়ন্ত্রিত রক্ত শর্করার কারণে দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। ব্যথাহীনতার কারণে এসব রোগী চিকিৎসকের কাছে অনেক দেরিতে যায়।

 

কখনো রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে গিয়ে জীবনাশঙ্কা পর্যন্ত দেখা দিতে পারে। বয়স বৃদ্ধি, দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস, অপুষ্টি, দারিদ্র্য, একাকিত্ব, ধূমপান, দৃষ্টিক্ষীণতা ও কিডনি রোগ থেকে থাকলে তাদের ডায়াবেটিক ফুটের ঝুঁকি আরো বেশি।

করণীয় : 

ডায়াবেটিক ফুটের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত পায়ের যত্ন নিন। যেমন : পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও তেল বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার, কখনোই খালি পায়ে না হাঁটা, নখ কাটা ও জুতা নির্বাচনে সাবধানতা, কড়া বা উঠে যাওয়া চামড়া নিজে নিজে না তোলা ইত্যাদি বিষয়ে সতর্ক থাকুন।

 

নিয়মিত আপনার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পায়ের রক্ত চলাচল কিংবা অনুভূতি সম্পর্কে ধারণা নিন। যেকোনো সামান্য পা ফাটা, রঙের পরিবর্তন, কাটা বা পোড়া বা ছত্রাক সংক্রমণ, ঘা ইত্যাদিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিন ও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

চিকিৎসা : 

রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে পায়ের ধমনি পরীক্ষা করে বা কালার ডপলার আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়। কিছু ওষুধের মাধ্যমে ব্যাহত রক্ত চলাচলের কিছুটা উন্নতি করা যায়। তবে এনজিওগ্রাফি, বেলুন এনজিওপ্লাস্টি, স্টেন্টিং বা রিং বসানো, বাইপাস অপারেশনের মাধ্যমে অনেক সময় পা কাটার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।

 

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। সূএ : বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com