বিশ্ব ভালবাসা দিবসে মণিরামপুরের ঝাঁপা বাঁওড়ের দৃশ্যমান দুই ভাসমান সেতুতে ঘুরতে মানুষের ঢল

উত্তম চক্রবর্তী,মণিরামপুর॥ ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাঁওড়ের দৃশ্যমান দুই ভাসমান সেতু দুটিতে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে।

 

কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেতুতে ভীড় জমছে শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা। জানা যায়, রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাঁওড়ে প্রায় হাফ কিলোমিটার দৈর্ঘের বাজার সংলগ্ন ঘাটে জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু ও বাজারের হাফ কিলোমিটার দক্ষিনে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু তৈরী করা হয়েছে। ভাসমান সেতু তৈরীর শুরু থেকে স্থানীয় প্রিন্ট মিডিয়া ও দেশের বিভিন্ন ইলেকট্রিক মিডিয়ার ব্যপক প্রচার করাই বিশ্বব্যাপী সাড়া জেগে ওঠে। সেতু দুটির মধ্যে জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উদ্বোধন করেন তৎকালীন যশোরের জেলা প্রশাসক আবু আওয়াল চৌধুরী। পরের বছর ২০১৮ সালের মাঝের দিকে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতুটি উদ্বোধন করেন তৎসময়ের মণিরামপুরের এমপি ও বর্তমান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। সেই থেকে আলোচনায় মুখপাত্র হয়ে ওঠে এই ভাসমান সেতু দুটি। দৃশ্যমান সেতু দেখতে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার নারী পুরুষের ভীড় জমতে থাকে। দেখা গেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে সেতুতে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। দেশের রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন নামী দামী লোক এই সেতু পরিদর্শনে। এদিকে দুই ভাসমান সেতুর মাঝখানের ঝাঁপা গ্রাম পাড়ে তৈরী করা হয়েছে মিনি পার্ক ও পিকনিক স্পট। সেখানে রয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা, শিশুদের আনন্দ দেবার জন্য রয়েছে হরেক রকমের দোলনা। বড়দের জন্য রয়েছে চরকা ও দোলনা। রয়েছে ভাসমান টি স্টল, পিকনিক স্পটে রয়েছে চটপটি হাউজ, রকমারী কসমেটিক সহ হরেক রকমের প্রসাদনী খাবারের দোকান।

 

শিক্ষা সফর ও পিকনিক মৌসুম, তাই অনেক দুর দুরান্ত থেকে বিভিন্ন অফিস, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখানে পিকনিকে আসছে। স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যারা দুরের কোথাও শিক্ষা সফরে যায় তারা ফেরার পথে রাত হলেও একবার ঘুরে যাচ্ছে এই ভাসমান সেতু দুটিতে। যতদুর জানা গেছে, গত দু-বছর ধরে ভাসমান সেতু পরিদর্শনে হাইকোটের কয়েকজন বিচারপতি, কয়েকজন মন্ত্রী ও উপদেষ্টা এসেছেন। এসেছেন চলচিত্রের ও বিভিন্ন কৌতুকের শিল্পীরা। দেখতে এসেছেন আইন ও প্রশাসনের অনেক উদ্ধোর্তন কর্মকর্তা। সম্প্রতি দেখা গেছে, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান সহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা সেতুতে সফরে এসে ভুরিভোজ করেছেন। এ ভুরিভোজের প্রধান অতিথি ছিলেন, স্থানীয় সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য্য এমপি। এ ছাড়া প্রতিদিন কোন না কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এই ভাসমান সেতুতে পিকনিকে আসছে। কথা হয় জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতুর সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন ও বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতুর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ এর সাথে তারা এ প্রতিনিধিকে জানান, আমাদের ছেলে মেয়েদের নৌকায় পারাপারের ভোগান্তি লাঘবের জন্য আমরা স্থানীয় কিছু যুব সমাজ নিজেদের অর্থ দিয়ে ভাসমান সেতু তৈরী করেছি। কোন ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াই স্থানীয় হোল্ডিং মিস্ত্রি দিয়ে আমরা সেতু দুটি তৈরী করেছি। সেতু দুটি তৈরীর পর এত দৃশ্যমান হবে তা আমরা কোন দিন ভাবতে পারেনি। শুধু দেশ নয় সমস্ত বিশ্বব্যাপী সাড়া পড়েছে এই ভাসমান সেতু দুটি। তাই আমরা ধন্য দেশবাসীর কাছে।

 

আমরা আসা করছি দেশের যে সব জায়গায় এই ধরনের জলাকার রয়েছে এবং নৌকা পারাপারে ভুগান্তি পেতে হচ্ছে সেই সকল স্থানে স্থানীয় যুব সমাজ মিলে এমন উদ্যোগ গ্রহন করি। তাহলে আমাদের উদ্যোগটা সফল ও সার্থক হবে বলে আমরা মনে করছি। এদিকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে পারখাজুরা নলতা ঘাটে বাঁওড়ের ওপর তৃতীয় ভাসমান সেতু নির্মাণকাজ শুরু করেছেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জুলাই-আগস্টের চেতনা হারিয়ে যাচ্ছে: উপদেষ্টা নাহিদ

» পূজায় অপ্রীতিকর ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: আইজিপি

» সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ : ইশরাক

» ধর্মের উপর আঘাত সহ্য করা হবে না

» কুচক্রী মহলের হীন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে : র‍্যাব মহাপরিচালক

» গণহত্যার বিচার শুরু হলে অনেক দ্বিধা-প্রশ্ন দূর হবে : আসিফ নজরুল

» ১৩ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

» মঙ্গলবার ফল প্রকাশ যেভাবে জানবেন এইচএসসি ও সমমানের রেজাল্ট

» জামালপুরে সেফটিক ট্যাংক থেকে নৈশ্যপ্রহরীর মরদেহ উদ্ধার

» এভারকেয়ার হসপিটালে কালেকশন সার্ভিস দেবে ব্র্যাক ব্যাংক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বিশ্ব ভালবাসা দিবসে মণিরামপুরের ঝাঁপা বাঁওড়ের দৃশ্যমান দুই ভাসমান সেতুতে ঘুরতে মানুষের ঢল

উত্তম চক্রবর্তী,মণিরামপুর॥ ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাঁওড়ের দৃশ্যমান দুই ভাসমান সেতু দুটিতে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে।

 

কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেতুতে ভীড় জমছে শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা। জানা যায়, রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাঁওড়ে প্রায় হাফ কিলোমিটার দৈর্ঘের বাজার সংলগ্ন ঘাটে জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু ও বাজারের হাফ কিলোমিটার দক্ষিনে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতু তৈরী করা হয়েছে। ভাসমান সেতু তৈরীর শুরু থেকে স্থানীয় প্রিন্ট মিডিয়া ও দেশের বিভিন্ন ইলেকট্রিক মিডিয়ার ব্যপক প্রচার করাই বিশ্বব্যাপী সাড়া জেগে ওঠে। সেতু দুটির মধ্যে জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতু ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উদ্বোধন করেন তৎকালীন যশোরের জেলা প্রশাসক আবু আওয়াল চৌধুরী। পরের বছর ২০১৮ সালের মাঝের দিকে বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতুটি উদ্বোধন করেন তৎসময়ের মণিরামপুরের এমপি ও বর্তমান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। সেই থেকে আলোচনায় মুখপাত্র হয়ে ওঠে এই ভাসমান সেতু দুটি। দৃশ্যমান সেতু দেখতে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার নারী পুরুষের ভীড় জমতে থাকে। দেখা গেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে সেতুতে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। দেশের রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন নামী দামী লোক এই সেতু পরিদর্শনে। এদিকে দুই ভাসমান সেতুর মাঝখানের ঝাঁপা গ্রাম পাড়ে তৈরী করা হয়েছে মিনি পার্ক ও পিকনিক স্পট। সেখানে রয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা, শিশুদের আনন্দ দেবার জন্য রয়েছে হরেক রকমের দোলনা। বড়দের জন্য রয়েছে চরকা ও দোলনা। রয়েছে ভাসমান টি স্টল, পিকনিক স্পটে রয়েছে চটপটি হাউজ, রকমারী কসমেটিক সহ হরেক রকমের প্রসাদনী খাবারের দোকান।

 

শিক্ষা সফর ও পিকনিক মৌসুম, তাই অনেক দুর দুরান্ত থেকে বিভিন্ন অফিস, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখানে পিকনিকে আসছে। স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যারা দুরের কোথাও শিক্ষা সফরে যায় তারা ফেরার পথে রাত হলেও একবার ঘুরে যাচ্ছে এই ভাসমান সেতু দুটিতে। যতদুর জানা গেছে, গত দু-বছর ধরে ভাসমান সেতু পরিদর্শনে হাইকোটের কয়েকজন বিচারপতি, কয়েকজন মন্ত্রী ও উপদেষ্টা এসেছেন। এসেছেন চলচিত্রের ও বিভিন্ন কৌতুকের শিল্পীরা। দেখতে এসেছেন আইন ও প্রশাসনের অনেক উদ্ধোর্তন কর্মকর্তা। সম্প্রতি দেখা গেছে, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান সহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা সেতুতে সফরে এসে ভুরিভোজ করেছেন। এ ভুরিভোজের প্রধান অতিথি ছিলেন, স্থানীয় সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য্য এমপি। এ ছাড়া প্রতিদিন কোন না কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এই ভাসমান সেতুতে পিকনিকে আসছে। কথা হয় জেলা প্রশাসক ভাসমান সেতুর সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন ও বঙ্গবন্ধু ভাসমান সেতুর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ এর সাথে তারা এ প্রতিনিধিকে জানান, আমাদের ছেলে মেয়েদের নৌকায় পারাপারের ভোগান্তি লাঘবের জন্য আমরা স্থানীয় কিছু যুব সমাজ নিজেদের অর্থ দিয়ে ভাসমান সেতু তৈরী করেছি। কোন ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াই স্থানীয় হোল্ডিং মিস্ত্রি দিয়ে আমরা সেতু দুটি তৈরী করেছি। সেতু দুটি তৈরীর পর এত দৃশ্যমান হবে তা আমরা কোন দিন ভাবতে পারেনি। শুধু দেশ নয় সমস্ত বিশ্বব্যাপী সাড়া পড়েছে এই ভাসমান সেতু দুটি। তাই আমরা ধন্য দেশবাসীর কাছে।

 

আমরা আসা করছি দেশের যে সব জায়গায় এই ধরনের জলাকার রয়েছে এবং নৌকা পারাপারে ভুগান্তি পেতে হচ্ছে সেই সকল স্থানে স্থানীয় যুব সমাজ মিলে এমন উদ্যোগ গ্রহন করি। তাহলে আমাদের উদ্যোগটা সফল ও সার্থক হবে বলে আমরা মনে করছি। এদিকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে পারখাজুরা নলতা ঘাটে বাঁওড়ের ওপর তৃতীয় ভাসমান সেতু নির্মাণকাজ শুরু করেছেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com