প্রধান শিক্ষিকার টিকটক ভিডিও নিয়ে তোলপাড়

কুষ্টিয়ায় দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দার নামে স্কুলের এক প্রধান শিক্ষিকার একাধিক টিকটক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। নারী প্রধান শিক্ষকের এমন কাণ্ডে হতবাক কুষ্টিয়া জেলার সচেতন মহলও।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দার কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। চার মাস আগে এ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন।

এর আগে তিনি ঝিনাইদহের শৈলকূপা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। ওই বিদ্যালয়ে থাকাকালে একটি অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ঘটনার তাকে প্রথমে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে চাকরি থেকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করা হয়।

 

প্রধান শিক্ষিকা ইয়াসমিনের ভাইরাল হওয়া একাধিক টিকটক ভিডিওতে দেখা গেছে, বিভিন্ন বাংলা ও হিন্দি গানের তালে নানান অঙ্গভঙ্গিতে নাচ করছেন তিনি। এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে কলকাতায় ভাইরাল হওয়া ভুবন বাদ্যকরের গাওয়া বাদাম-বাদাম গানের টিকটক ভিডিও রয়েছে।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের টিকটক করা একটি ভিডিও আমিও দেখেছি। স্কুলের এক শিক্ষার্থীই আমাকে ভিডিওটি দেখিয়েছেন। দেখে চরম বিব্রত হয়েছি। তিনি কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ করেছেন। শিক্ষার্থীদের সামনে লজ্জায় কোনো কথাই বলতে পারছি না। অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও আমাদের নিয়ে হাসাহাসি করছে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দার জাগো নিউজকে বলেন, আমার মতো অনেকেই তো টিকটক করে। তাদের টিকটক তো সামনে আসে না। তাহলে আমারটা নিয়ে এতো সমালোচনা কেন? এমনটি বলেই তিনি কলটি কেটে দেন। এরপর থেকে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে তালবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি অনুতপ্ত। তার ভুল নিজেই স্বীকার করেছেন। এরপর এমনটি আর হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে একজন শিক্ষক হয়ে এ ধরনের টিকটক ভিডিও বানানো তার উচিত হয়নি।

 

সচেতন নাগরিক কমিটির কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি রফিকুল আলম টুকু বলেন, শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। শিক্ষার্থী ও সমাজের মানুষ তাদের অনুসরণ করেন। মাধ্যমিক পর্যায়ের একজন প্রধান শিক্ষকের এমন টিকটক ভিডিও বানানোকে সমাজের অবক্ষয় ছাড়া আর কিছুই বলা যাবে না।

 

মিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার হায়দার জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি এখনো নজরে আসেনি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।

 

এ বিষয়ে মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাদের জাগো নিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» তারুণ্য সমৃদ্ধ দেশ গড়ার অঙ্গিকার জামায়াত আমিরের

» ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জামায়াতের অভিনন্দন

» সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে প্রেস সেক্রেটারি মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ সংক্রান্ত মামলা বাতিল হবে

» উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলে নীতিগত সিদ্ধান্ত

» ইউটিলিটি বিল কালেকশন সহজ করতে তিতাস গ্যাসের সাথে ব্র্যাক ব্যাংকের চুক্তি

» ইসলামপুরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত

» ময়নামতি ও বসুরহাটে ইউসিবির দুই নতুন শাখা উদ্বোধন

» প্রাইম ব্যাংক’র সাথে পেরোল চুক্তি করলো বিএস গ্রুপ

» বিমক্স ২০২৪ -এ অংশ নিয়ে অত্যাধুনিক সব পণ্য প্রদর্শন করছে এনার্জিপ্যাক

» চালককে হত্যার পর অটোরিকশা ছিনতাই যাদের নেশা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

প্রধান শিক্ষিকার টিকটক ভিডিও নিয়ে তোলপাড়

কুষ্টিয়ায় দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দার নামে স্কুলের এক প্রধান শিক্ষিকার একাধিক টিকটক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। নারী প্রধান শিক্ষকের এমন কাণ্ডে হতবাক কুষ্টিয়া জেলার সচেতন মহলও।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দার কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। চার মাস আগে এ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন।

এর আগে তিনি ঝিনাইদহের শৈলকূপা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। ওই বিদ্যালয়ে থাকাকালে একটি অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ঘটনার তাকে প্রথমে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে চাকরি থেকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করা হয়।

 

প্রধান শিক্ষিকা ইয়াসমিনের ভাইরাল হওয়া একাধিক টিকটক ভিডিওতে দেখা গেছে, বিভিন্ন বাংলা ও হিন্দি গানের তালে নানান অঙ্গভঙ্গিতে নাচ করছেন তিনি। এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে কলকাতায় ভাইরাল হওয়া ভুবন বাদ্যকরের গাওয়া বাদাম-বাদাম গানের টিকটক ভিডিও রয়েছে।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের টিকটক করা একটি ভিডিও আমিও দেখেছি। স্কুলের এক শিক্ষার্থীই আমাকে ভিডিওটি দেখিয়েছেন। দেখে চরম বিব্রত হয়েছি। তিনি কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ করেছেন। শিক্ষার্থীদের সামনে লজ্জায় কোনো কথাই বলতে পারছি না। অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও আমাদের নিয়ে হাসাহাসি করছে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দার জাগো নিউজকে বলেন, আমার মতো অনেকেই তো টিকটক করে। তাদের টিকটক তো সামনে আসে না। তাহলে আমারটা নিয়ে এতো সমালোচনা কেন? এমনটি বলেই তিনি কলটি কেটে দেন। এরপর থেকে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে তালবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি অনুতপ্ত। তার ভুল নিজেই স্বীকার করেছেন। এরপর এমনটি আর হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে একজন শিক্ষক হয়ে এ ধরনের টিকটক ভিডিও বানানো তার উচিত হয়নি।

 

সচেতন নাগরিক কমিটির কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি রফিকুল আলম টুকু বলেন, শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। শিক্ষার্থী ও সমাজের মানুষ তাদের অনুসরণ করেন। মাধ্যমিক পর্যায়ের একজন প্রধান শিক্ষকের এমন টিকটক ভিডিও বানানোকে সমাজের অবক্ষয় ছাড়া আর কিছুই বলা যাবে না।

 

মিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার হায়দার জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি এখনো নজরে আসেনি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।

 

এ বিষয়ে মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাদের জাগো নিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com