বিএনপিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরম সুরে কথা বলছেন মন্তব্য করে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) চায়ের দাওয়াত দিচ্ছেন, এসব স্বাভাবিক বিষয় না। এর ভেতর নতুন ষড়যন্ত্র রয়েছে।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে এলে বিএনপিকে চা খাওয়াব’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, আপনার চায়ের দাওয়াত, সেই চায়ের মধ্যে কি থাকবে এটা জনগণের মধ্যে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শেখ হাসিনার সেই চায়ের দাওয়াতের মধ্যে মানুষের প্রশ্ন। যে বিরোধী দলকে ডেকে উনি কি খাওয়াবে? এর মধ্যে কি দেবে? ধুতুরার ফুল থাকবে নাকি হ্যামলোকের রস থাকবে। এটা মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ঘেরাও কর্মসূচি করলে চায়ের দাওয়াত দেব। হঠাৎ আপনার গলার সুর এত নরম হলো কেন? এটাতো অদ্ভুত ব্যাপার। আপনার গলার সুর যখন ক্ষীণ হয় তখন বুঝতে হয় বিরোধীদলের ওপর মনে হয় আরও কিছু ভয়ংকর নির্যাতন নেমে আসছে।
রিজভী বলেন, আপনি এর আগেও বলেছেন বিএনপিকে আপনারা মামলার কাগজগুলো পাঠান। তখন আমরা দেখেছি আরও ব্যাপকভাবে মামলা দিয়েছেন। বিএনপির যেই নেতা মারা গেছেন সেই লাশের নামে, যিনি হজ করতে গেছেন তার নামে, জেনে হাসপাতালে চিকিৎসারত আছেন তার নামে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আপনি লুটপাট করছেন। আপনার রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি জনগণের টাকা। আপনার কোনো মায়া-মমতা নেই। আপনার সাধারণ সম্পাদককে দিয়ে বলাচ্ছেন যে দেশে কোনো সংকট নেই।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার কী এটা জানার জন্য দেশের জনগণের কোনো ইউনিভার্সিটি থেকে ডিগ্রি নেওয়ার দরকার নেই, কোনো ইউনিক ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার দরকার নেই। ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনারা যে দৃষ্টান্ত দিয়েছেন এই দৃষ্টান্তই হচ্ছে বিরাট শিক্ষা।
রিজভী বলেন, কাদের সাহেবরা প্রায়ই বলে থাকেন এটা (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) সংবিধানে নেই। ‘৯৫-৯৬ সালে এটা সংবিধানের আসলো কি করে। এটার দৃষ্টান্ত তো আপনারাই দেখিয়েছেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এমপি-মন্ত্রীরা বলছেন এটা সংবিধানে নেই দেওয়া যাবে না। কি করে দেওয়া যাবে সেটা আপনাদের কাছ থেকে আমরা শিখেছি। প্রধানমন্ত্রী আপনি সাবধান থাকবেন। এই সংকটের পরিণতিতে আপনার আশপাশের লোকেরা, আপনার যে চামচারা তারাই আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবে। কারা মেগা প্রজেক্টের টাকা বিদেশে পাচার করেছে, কারা ব্যাংকের টাকা লোপাট করেছে, উচ্চমূল্য সুদে ঋণ নিয়ে যে পদ্মা সেতু তৈরি করেছেন। এটা করতে গিয়ে জনগণের যে টাকা হরিলুট হয়েছে এটা জনগণ জানতে চাইবেই।
‘প্রধানমন্ত্রী আপনি বলেন আমি গণতন্ত্র দিয়েছি। তাহলে জনগণ যে গণতন্ত্রের ওপর আস্থাশীল সেই জায়গায় আপনি যান না কেন। আপনি নির্বাচন কেউ জাদু করে পাঠিয়েছেন ভোটকেও জাদুঘরে পাঠিয়েছেন)।-বলেন রিজভী।
লোডশেডিংয়ের পূর্বে আপনার মন্ত্রীরা অনেক বলেছে আমরা লোডশেডিংকে জাদুঘরে পাঠিয়েছি। কিন্তু এখন কাঁচের দেয়াল ভেঙে সেই লোডশেডিং সারা বাংলাদেশ আধিপত্য বজায় রেখেছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, তাঁতি দল নেতা কাজী মনিরুজ্জামান ও নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।