ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়। শাহবাগ থেকে এই মোড়ে পৌঁছার একটু আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘেঁষে ময়লার ভাগাড়। নাক চেপেই এই পথ পার হতে হয় সবাইকে। সিটি করপোরেশন থেকে টবে ফুলগাছ দিয়েও ময়লা ফেলা বন্ধ করা যায়নি। আবর্জনার পচা দুর্গন্ধে চলাচলকারীদের দূর্ভোগ এখন নিত্যসঙ্গী।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে সড়কের এই জায়গায় আবর্জনার স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এর আশপাশে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থাপনা। এখান থেকে টিএসসি হয়ে দোয়েল চত্বরের পথে তিন নেতার মাজার, বাংলা একাডেমি, পরমানু শক্তি কমিশন। পশ্চিমে চারুকলা ইনস্টিটিউট, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ, পাবলিক লাইব্রেরি। তার থেকে আরেকটু উত্তরে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও বারডেম হাসপাতাল। দক্ষিণে ঢাকা মেডিকেলের পথ। এসব স্থাপনায় যাতায়াতকারীদের এই পথ ব্যবহার করতে হয়। আর এই পথেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে ময়লা ফেলে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ময়লা-আবর্জনার পচা দুর্গন্ধে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে পথচারীদের।
বিভিন্ন জায়গা থেকে যত্রতত্র প্লাস্টিকের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, রেস্তোরাঁর পচা ভাত, তরকারি এবং বাসাবাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হয় প্রতিদিনি। নাক-মুখ চেপে ধরে চলতে হচ্ছে পথচারীদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চলাফেরায় বেঘাত ঘটছে প্রতিনিয়ত। উপচেপড়া ময়লার ভাগাড় রাস্তাও দখল করে নিয়েছে। এতে যানজট তৈরি হয়ে যানবাহন চলাচলেও সমস্যা হচ্ছে।
বাসচালক আবিদুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এমনিতেই রাজধানীতে সব সময় জ্যাম লেগে থাকে। রাস্তার ওপর ময়লার ভাগাড় থাকার কারণে রাস্তায় আরও বেশি যানজট থাকে।
আবিদুর বলেন, ‘রাজধানীর আরও বিভিন্ন সড়কে এ রকম ময়লার ভাগাড় রয়েছে। সড়কের ওপর ময়লার ভাগার থাকার কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে।’
রাজিব আহমদ বলেন, ‘আমি প্রায় সময় টিএসসিতে এসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিই। রাজু ভাস্কর্যের কাছে সড়কের ওপর যে পরিমানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় তা একদমই অনুচিত কাজ। রাস্তার ওপরে আবর্জনা থাকার কারণে দেখতে খুবই খারাপ লাগে।
আকাশ সরকার নামে আরেকজন বলেন, ‘হোটেল, রেস্তোরাঁ থেকে আবর্জনা সড়কের ওপর ফেলে স্তূপ করে রেখেছে। এর ফলে রাস্তা সংকুচিত হয়ে গেছে। শাহবাগ-টিএসসি এলাকার কয়েকটি স্থানে দীর্ঘদিন ধরে এ রকম আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। সিটি করপোরশনের লোকজনও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই এলাকায় ময়লা আবর্জনা ফেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও সমস্যা হচ্ছে।
পথচারী সাব্বির হোসেন বলেন, ‘এই এলাকা পরিপাটি থাকার কথা। কিন্তু ময়লা আবর্জনায় ভড়পুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন হল রয়েছে। দেশেরে বাইরে থেকে মানুষ এলে এসব পরিস্থিতি দেখে সুনামের বদলে বদনাম করবে দেশের। আমার দাবি রাজু ভাস্কর্য এলাকাসহ রাজধানীর সব এলাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে পরিচ্ছন্ন রাখা হোক।
নাসির উদ্দিন নামে আরেকজন বলেন, ‘সড়কের ওপর আবর্জনার স্তূপ থাকায় স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠছে। সিটি করপোরেশনের মেয়র-কাউন্সিলর সচেতন হলে এ অবস্থার কিছুটা সুফল আসবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ময়লা না ফেলার আহ্বান জানিয়ে বড় করে সাইনবোর্ড লাগিয়েছি। তারপরও মানুষ ময়লার ভাগাড় করে রেখেছে। পরিষ্কার করলে আবার দ্রুত ময়লার ভাগাড় বানিয়ে ফেলে।
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এ ময়লা-আবর্জনা না ফেলার জন্য আমি কাটা ড্রামে বিভিন্ন জাতের ফুলের গাছ লাগিয়েছি। তারপরও কাজ হচ্ছে না। জনগণ সচেতন হতে হবে। আমরা এই সড়ক পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য যতটুকু দরকার ততটুকু করে যাবো। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনের সড়ক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উদ্যোগে সহযোগিতা চাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।
তবে শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, প্রশাসন তৎপর হয়ে ময়লা ফেলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব। সূএ: ঢাকাটাইমস ডটকম