পৃথিবীর গতি বেড়ে দিনের দৈর্ঘ্য হ্রাস পাচ্ছে। গত ২৯ জুন পৃথিবীর গতি এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে ২৪ ঘণ্টার চেয়ে ১.৫৯ মিলিসেকেন্ড কম সময়েই এক পাক ঘুরেছে পৃথিবী, সম্পূর্ণ হয়েছে এক দিন! অথচ, ভূগোল বইতে পড়ানো হয় যে ২৪ ঘণ্টায় একবার পাক খায় পৃথিবী।
১৯৭৩ সাল থেকে পারমাণবিক ঘড়ির মাধ্যমে পৃথিবীর ঘূর্ণনে কতটা সময় লাগছে তা পর্যবেক্ষণ করছেন বিজ্ঞানীরা। ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল আর্থ রোটেশন অ্যান্ড রেফারেন্স সিস্টেম সার্ভিস’ বা ‘আইইআরএস’ নামক সংস্থার নেতৃত্বেই মূলত এ গবেষণা চলে। কয়েক বছর আগেও ‘আইইআরএস’-এর বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিলো পৃথিবীর গতি ক্রমেই ধীর হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, সম্প্রতি বদল আসতে শুরু করে ওই ধারণায়। কারণ, বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছেন যে দিনের দৈর্ঘ্য ক্রমশ ছোট হচ্ছে। ২০২২-এর ২৯ জুন দ্রুততম গতিতে এক পাক সম্পন্ন করে পৃথিবী। এর আগে গত ২৬ জুলাই তারিখেও ২৪ ঘণ্টার থেকে ১.৫০ মিলি সেকেন্ড কম সময়ে একবার পাক খেয়েছে পৃথিবী।
কেন পৃথিবীর গতি বেড়েছে?
পৃথিবীর গতি বাড়ার কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন। কারও মতে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়ার ফলে এমনটা হয়েছে। কেউ কেউ আবার বলছেন, পৃথিবীর অভ্যন্তরের গলিত পদার্থ সরে যাওয়াই এর কারণ।
পরিণাম হবে ভয়াবহ
ভৌগোলিকভাবে পৃথিবীর গতিবেগ বৃদ্ধির ফলে কী কী সমস্যা হতে পারে তা নিয়ে কেউই নিশ্চিত নয়। তবে প্রযুক্তিগত দিক থেকে এর পরিণাম হবে ভয়াবহ। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যে কৃত্রিম উপগ্রহগুলো পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে, পৃথিবীর গতিবেগ বৃদ্ধির ফলে তারা বিগড়ে যেতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, পৃথিবীর গতি আধ মিলিসেকেন্ড বদলে গেলে, নিরক্ষীয় অঞ্চলে উপগ্রহগুলোর অবস্থান সরে যেতে পারে প্রায় ১০ ইঞ্চি। ইন্টারনেট ব্যবস্থা থেকে জিপিএস প্রযুক্তি, আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেকটাই নির্ভর করছে এ উপগ্রহগুলোর ওপর। তাই উপগ্রহগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেখা দিতে পারে বড় ধরনের সমস্যা।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা