পুলিশের সামনে কুপিয়ে হত্যা, ভিডিও ভাইরাল

শেরপুরের শ্রীবরদীতে ২৩ মার্চ সন্ধ্যার আগে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের পশু জবাইয়ের ছুরি দিয়ে শেখবর আলী (৪৫) নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা  হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত ছিল। নৃশংস এই হত্যার ভিডিও ১৮ দিন পর রবিবার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ঘটনায় আহত হয়েছে আরও দুজন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জাকির হোসেন জিকো ও তার ভাই সাইফুলের সঙ্গে শেখবর আলীর জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। তারা পরস্পর প্রতিবেশী। বছর চারেক আগে জমিসহ অন্যান্য ঘটনা নিয়ে শেখবর আলীর সঙ্গে প্রতিপক্ষের মারামারি হয়। তখন থেকেই শেখবর আলী স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এলাকা ছাড়েন এবং দীর্ঘদিন ঢাকায় অবস্থান করেন। ঘটনার আগের দিন পর্যন্ত অভিযুক্তদের ভয়ে এলাকায় আসেননি শেখবর। ঘটনার কদিন আগে জিকোরা মিলে শেখবর আলীদের কয়েকটি গাছ কেটে ফেলে। এ ঘটনায় ২২ মার্চ প্রতিপক্ষ জিকোসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন শেখবর আলীর মা মাহফুজা বেগম (৬৫)। মায়ের কাছে ঘটনা শুনে ২৩ মার্চ বুধবার সকালে স্ত্রী সন্তান নিয়ে শ্রীবরদীতে আসেন শেখবর। জিডির পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ মার্চ শ্রীবরদী থানার এসআই ওয়ারেছ যান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার সময় রাস্তা থেকে পুলিশের গাড়িতে ওঠেন শেখবর। মা মাহফুজার দাবি, পুলিশ গাড়ি থেকে নেমে ঘটনার বিষয়ে জানতে চায়। এতে প্রতিপক্ষের কেউ সাড়া দেয়নি। এক পর্যায়ে শেখবর পুলিশের গাড়ি থেকে নেমে এলে বদলাতে থাকে পরিস্থিতি। মুহূর্তের মধ্যেই দা-লাঠি ফলা নিয়ে শেখবরের দিকে  প্রতিপক্ষের লোকজন তেড়ে আসে। পুলিশ ও স্থানীয়রা ফিরাতে চেষ্টা করলেও ২-৩ জন এসে শেখবরের মাথায় ও পায়ে কুপিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এর মধ্যেই জিকোর ভাই সাইফুল ছুরি দিয়ে ফিল্মি স্টাইলে জবাই করে শেখবরকে। শেখবরের মা বলেন, ‘আল্লাহু আকবর বলে আমার কলিজার টুকরাকে আমার সামনেই জবাই করা হলো। পাষ-দের পায়ে ধরেও রক্ষা করতে পারিনি ছেলেকে।’ ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ ও শতাধিক মানুষের সামনেই জবাই করা হচ্ছে শেখবরকে। এ সময় পুলিশ ও স্থানীয়রা ফিরাতে চেষ্টা করলেও দমাতে পারেনি হত্যাকারীদের। এক পর্যায়ে ভয়ে পিছু হটে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শেখবরের হত্যার দৃশ্য এলাকার মানুষের কাছে এখনো দুঃস্বপ্নের মতো। নৃশংস এই হত্যাকান্ডের দৃশ্য যারা দেখেছেন তারা ঘুমাতে পারেন না, খাবার গলায় নামছে না। এলাকার মানুষ স্তব্ধ হয়ে গেছে।

 

শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রধান আসামি জিকো, তার ভাই জজ মিয়া ও সাইফুলসহ মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে জিকো ও সাইফুল। এ ছাড়াও এ ঘটনায় পুলিশের এসআই ওয়ারেছ আলীকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আমেরিকার ভিসানীতির পরে বিএনপির নেতৃত্ব ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে: হানিফ

» বিএনপি কি নির্বাচন চায়, তাদের নেতা কে: প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

» ‘সজাগ থাকুন, স্বাধীনতাবিরোধীরা যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে’

» কোনো দলকে পক্ষ করে ভিসা নীতি নয় : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

» রোডমার্চ বৃহত্তর আন্দোলনের প্রাক প্রস্তুতি: নজরুল ইসলাম

» বিশ্বের ‘সবচেয়ে দূরপাল্লার’ ড্রোন উন্মোচন করলো ইরান

» ভিসানীতি নিয়ে সরকার নয়, বিএনপি চাপে আছে: শিক্ষামন্ত্রী

» সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র আহত

» দেশীয় অস্ত্রসহ ৪ ডাকাত গ্রেফতার

» আমাদের ইলেকশন কমিশন শতভাগ স্বাধীন: সালমান এফ রহমান

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি।(দপ্তর সম্পাদক)  উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পুলিশের সামনে কুপিয়ে হত্যা, ভিডিও ভাইরাল

শেরপুরের শ্রীবরদীতে ২৩ মার্চ সন্ধ্যার আগে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের পশু জবাইয়ের ছুরি দিয়ে শেখবর আলী (৪৫) নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা  হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত ছিল। নৃশংস এই হত্যার ভিডিও ১৮ দিন পর রবিবার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ঘটনায় আহত হয়েছে আরও দুজন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জাকির হোসেন জিকো ও তার ভাই সাইফুলের সঙ্গে শেখবর আলীর জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। তারা পরস্পর প্রতিবেশী। বছর চারেক আগে জমিসহ অন্যান্য ঘটনা নিয়ে শেখবর আলীর সঙ্গে প্রতিপক্ষের মারামারি হয়। তখন থেকেই শেখবর আলী স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এলাকা ছাড়েন এবং দীর্ঘদিন ঢাকায় অবস্থান করেন। ঘটনার আগের দিন পর্যন্ত অভিযুক্তদের ভয়ে এলাকায় আসেননি শেখবর। ঘটনার কদিন আগে জিকোরা মিলে শেখবর আলীদের কয়েকটি গাছ কেটে ফেলে। এ ঘটনায় ২২ মার্চ প্রতিপক্ষ জিকোসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন শেখবর আলীর মা মাহফুজা বেগম (৬৫)। মায়ের কাছে ঘটনা শুনে ২৩ মার্চ বুধবার সকালে স্ত্রী সন্তান নিয়ে শ্রীবরদীতে আসেন শেখবর। জিডির পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ মার্চ শ্রীবরদী থানার এসআই ওয়ারেছ যান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার সময় রাস্তা থেকে পুলিশের গাড়িতে ওঠেন শেখবর। মা মাহফুজার দাবি, পুলিশ গাড়ি থেকে নেমে ঘটনার বিষয়ে জানতে চায়। এতে প্রতিপক্ষের কেউ সাড়া দেয়নি। এক পর্যায়ে শেখবর পুলিশের গাড়ি থেকে নেমে এলে বদলাতে থাকে পরিস্থিতি। মুহূর্তের মধ্যেই দা-লাঠি ফলা নিয়ে শেখবরের দিকে  প্রতিপক্ষের লোকজন তেড়ে আসে। পুলিশ ও স্থানীয়রা ফিরাতে চেষ্টা করলেও ২-৩ জন এসে শেখবরের মাথায় ও পায়ে কুপিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এর মধ্যেই জিকোর ভাই সাইফুল ছুরি দিয়ে ফিল্মি স্টাইলে জবাই করে শেখবরকে। শেখবরের মা বলেন, ‘আল্লাহু আকবর বলে আমার কলিজার টুকরাকে আমার সামনেই জবাই করা হলো। পাষ-দের পায়ে ধরেও রক্ষা করতে পারিনি ছেলেকে।’ ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ ও শতাধিক মানুষের সামনেই জবাই করা হচ্ছে শেখবরকে। এ সময় পুলিশ ও স্থানীয়রা ফিরাতে চেষ্টা করলেও দমাতে পারেনি হত্যাকারীদের। এক পর্যায়ে ভয়ে পিছু হটে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শেখবরের হত্যার দৃশ্য এলাকার মানুষের কাছে এখনো দুঃস্বপ্নের মতো। নৃশংস এই হত্যাকান্ডের দৃশ্য যারা দেখেছেন তারা ঘুমাতে পারেন না, খাবার গলায় নামছে না। এলাকার মানুষ স্তব্ধ হয়ে গেছে।

 

শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রধান আসামি জিকো, তার ভাই জজ মিয়া ও সাইফুলসহ মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে জিকো ও সাইফুল। এ ছাড়াও এ ঘটনায় পুলিশের এসআই ওয়ারেছ আলীকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি।(দপ্তর সম্পাদক)  উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com