পাঠ্যপুস্তকের অসঙ্গতিগুলো বাদ দিতে হবে: ফখরুল

ঐহিত্যগত সংস্কৃতি জীবনমান মূল্যবোধ বিরোধী কার্যক্রম পাঠ্যপুস্তকে মেনে নিতে পারি না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন- আপনারা কেউ ইস্যু তৈরি করবেন না; আমরা সংশোধনের ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের বক্তব্যে হচ্ছে অবিলম্বে পাঠ্যপুস্তকের অসঙ্গতিগুলো বাদ দিতে হবে। ইস্যু তো আমরা তৈরি করছি না, বরং আপনারা (শিক্ষামন্ত্রী) ইস্যু তৈরি করে দিয়েছেন।

 

আজ (২৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

 

ফখরুল বলেন, অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলতে বলতে অজ্ঞান হয়ে যায়। অথচ তাদেরকে ৭২-৭৫ সালে গণতন্ত্র হরণ করে কেন বাকশাল করতে হয়েছে জিজ্ঞাসা করলেই তাদের গায়ে আগুন লেগে যায়। আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে চাই- মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চাই, ভোটাধিকার চাই, গণতন্ত্র ফিরে পেতে চাই। নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে এখন কেউ ভোট দিতে যেতে চায় না। আজকে যে সংসদ আছে সেটা হলো একদলীয় ক্লাব অব আওয়ামী লীগ। তাই আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমাদেরকে গণতন্ত্র ভোটাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য রাজপথে রক্ত দিতে হচ্ছে, প্রাণ দিতে হচ্ছে। তারপরও আমরা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা, দেশের মানুষকে বাঁচাতে চাই।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা একটি অসম যুদ্ধ সংগ্রাম করছি। যেখানে আমাদের প্রতিপক্ষ অত্যন্ত প্রভাবশালী। যাদের হাতে রয়েছে রাষ্ট্রশক্তিসহ বন্দুক পিস্তল গ্রেনেড, যা তারা ছুড়ে মারে আর আমাদের নামে মামলা দেয়।

 

জনগণের উত্তাল তরঙ্গের ঢেউয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ভেসে যাবে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে চলছে এক ব্যক্তির শাসন, কিসের ভোট; তোমাদের ভোটও আমরা দেব। কথায় কথায় বলে গণতন্ত্র হবে আমাদের মতো করে। অথচ তাদের গণতন্ত্র তো বহুদলীয় গণতন্ত্র থেকে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা। স্পষ্ট কথা- বাংলাদেশের মানুষ না খেয়েও হাসে। তারা গণতান্ত্রিক দেশে কথা বলতে চায়, মৌলিক অধিকার আদায়ে তাদের কোনো কম্প্রোমাইজ নাই। সেই লক্ষ্যে বিএনপির ঘোষিত ১০ দফার প্রথম দাবি হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে তাদের অধীনে নির্বাচন হবে। জনগণের মধ্যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে আমরা সেই নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করব।

 

তিনি বলেন, আমাদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে হবে। আমাদেরকে বাঁচতে হবে, আমাদের এ রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখতে হবে স্বাধীনতা রাখতে হবে। মানুষগুলোর সমৃদ্ধি রাখতে হবে, কল্যাণ রাখতে হবে।

 

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন- গণতন্ত্র হবে তাদের মতো করে। তাদের মতো গণতন্ত্র হচ্ছে বাকশাল। বাংলাদেশের মানুষ কথা বলতে চায়, কথার বিষয়ে তারা কোনো ছাড় দেয় না। স্বাধীনতার ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয় না, তারা অধিকার আদায় কোনো ছাড় দেয় না। যে ঢেউ শুরু হয়েছে উত্তাল তরঙ্গের মতো, সমুদ্রের মতো এরা ভেসে যাবে। কারণ এদের কাছে কোনো নিরাপত্তা নেই।

 

অনুষ্ঠানে আমান উল্লাহ আমান বলেন, বিএনপি প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতি করবে না। আজকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ারকে কারাগারে রেখে যে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে এটা বিএনপি করবে না। আজকে প্রশাসন যে দমন-পীড়ন চালিয়েছেন তারা এমন করতে বাধ্য হচ্ছেন বিএনপি এরও কোনো পরিশোধ নেবে না।

 

তিনি বলেন, আজকে সরকার পাগলের প্রলাপ করছে। এখান থেকে বেরিয়ে এসে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাবস্থা করুন।

 

সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন— সাংবাদিক নেতা কামাল উদ্দিন সবুজ, শহিদুল ইসলাম, প্রফেসর শহিদুল হাসান, ড. বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» নরসিংদী পলাশে ছাত্রদলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

» সেনাপ্রধানের সঙ্গে ইউএস আর্মি অফিসারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

» আলোচনা ছাড়া স্ট্যাটাস দিতেও ‘মানা’ এনসিপি নেতাদের

» চাঁদাবাজির জন্ম দিয়েছে আওয়ামী লীগ : টুকু

» গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ওয়েবসাইট উদ্বোধন

» প্রধান উপদেষ্টার পূর্ণাঙ্গ ভাষণ

» চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক শুক্রবার

» অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» ফ্যাসিবাদের পতনে গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করার সুযোগ এসেছে : তারেক রহমান

» জামালপুরে পুলিশের দোয়া ও ইফতার মাহফিল

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পাঠ্যপুস্তকের অসঙ্গতিগুলো বাদ দিতে হবে: ফখরুল

ঐহিত্যগত সংস্কৃতি জীবনমান মূল্যবোধ বিরোধী কার্যক্রম পাঠ্যপুস্তকে মেনে নিতে পারি না উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন- আপনারা কেউ ইস্যু তৈরি করবেন না; আমরা সংশোধনের ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের বক্তব্যে হচ্ছে অবিলম্বে পাঠ্যপুস্তকের অসঙ্গতিগুলো বাদ দিতে হবে। ইস্যু তো আমরা তৈরি করছি না, বরং আপনারা (শিক্ষামন্ত্রী) ইস্যু তৈরি করে দিয়েছেন।

 

আজ (২৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

 

ফখরুল বলেন, অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলতে বলতে অজ্ঞান হয়ে যায়। অথচ তাদেরকে ৭২-৭৫ সালে গণতন্ত্র হরণ করে কেন বাকশাল করতে হয়েছে জিজ্ঞাসা করলেই তাদের গায়ে আগুন লেগে যায়। আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে চাই- মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চাই, ভোটাধিকার চাই, গণতন্ত্র ফিরে পেতে চাই। নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে এখন কেউ ভোট দিতে যেতে চায় না। আজকে যে সংসদ আছে সেটা হলো একদলীয় ক্লাব অব আওয়ামী লীগ। তাই আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমাদেরকে গণতন্ত্র ভোটাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য রাজপথে রক্ত দিতে হচ্ছে, প্রাণ দিতে হচ্ছে। তারপরও আমরা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা, দেশের মানুষকে বাঁচাতে চাই।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা একটি অসম যুদ্ধ সংগ্রাম করছি। যেখানে আমাদের প্রতিপক্ষ অত্যন্ত প্রভাবশালী। যাদের হাতে রয়েছে রাষ্ট্রশক্তিসহ বন্দুক পিস্তল গ্রেনেড, যা তারা ছুড়ে মারে আর আমাদের নামে মামলা দেয়।

 

জনগণের উত্তাল তরঙ্গের ঢেউয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ভেসে যাবে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে চলছে এক ব্যক্তির শাসন, কিসের ভোট; তোমাদের ভোটও আমরা দেব। কথায় কথায় বলে গণতন্ত্র হবে আমাদের মতো করে। অথচ তাদের গণতন্ত্র তো বহুদলীয় গণতন্ত্র থেকে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা। স্পষ্ট কথা- বাংলাদেশের মানুষ না খেয়েও হাসে। তারা গণতান্ত্রিক দেশে কথা বলতে চায়, মৌলিক অধিকার আদায়ে তাদের কোনো কম্প্রোমাইজ নাই। সেই লক্ষ্যে বিএনপির ঘোষিত ১০ দফার প্রথম দাবি হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে তাদের অধীনে নির্বাচন হবে। জনগণের মধ্যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে আমরা সেই নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করব।

 

তিনি বলেন, আমাদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে হবে। আমাদেরকে বাঁচতে হবে, আমাদের এ রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখতে হবে স্বাধীনতা রাখতে হবে। মানুষগুলোর সমৃদ্ধি রাখতে হবে, কল্যাণ রাখতে হবে।

 

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন- গণতন্ত্র হবে তাদের মতো করে। তাদের মতো গণতন্ত্র হচ্ছে বাকশাল। বাংলাদেশের মানুষ কথা বলতে চায়, কথার বিষয়ে তারা কোনো ছাড় দেয় না। স্বাধীনতার ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয় না, তারা অধিকার আদায় কোনো ছাড় দেয় না। যে ঢেউ শুরু হয়েছে উত্তাল তরঙ্গের মতো, সমুদ্রের মতো এরা ভেসে যাবে। কারণ এদের কাছে কোনো নিরাপত্তা নেই।

 

অনুষ্ঠানে আমান উল্লাহ আমান বলেন, বিএনপি প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতি করবে না। আজকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ারকে কারাগারে রেখে যে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে এটা বিএনপি করবে না। আজকে প্রশাসন যে দমন-পীড়ন চালিয়েছেন তারা এমন করতে বাধ্য হচ্ছেন বিএনপি এরও কোনো পরিশোধ নেবে না।

 

তিনি বলেন, আজকে সরকার পাগলের প্রলাপ করছে। এখান থেকে বেরিয়ে এসে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাবস্থা করুন।

 

সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন— সাংবাদিক নেতা কামাল উদ্দিন সবুজ, শহিদুল ইসলাম, প্রফেসর শহিদুল হাসান, ড. বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com