নওগাঁয় এক কেজি গরুর মাংসের দামে দেড় মণ আলু

নাদিম আহমেদ অনিক,প্রতিনিধি: উত্তরাঞ্চলের শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে চলতি রবিশষ্য মৌসুমে এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার প্রতিটি হাট-বাজারে এখন প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। আর এখানকার কৃষকরা প্রতি মণ আলু বিক্রি করেছেন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়।

চলতি মৌসুমে আলুর ভালো ফলন পেলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেনা জেলার আলু চাষিরা। অনেক পরিশ্রমের ফসল আলু বিক্রি করে খরচের টাকাই উঠছে না তাদের। দাম না থাকায় তাই এক কেজি গরুর মাংস কিনতে দেড় মণ আলু বেচতে হচ্ছে।

আত্রাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবিশস্য মৌসুমে এবারে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে আলু চাষিদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে আলু ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলার শাহাগোলা, ভোঁপাড়া, মনিয়ারী ও আহসানগঞ্জ ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক আজাদ প্রামানিক বলেন, চলতি মৌসুমে আলুর দাম একেবারেই কম। ভালো মানের আলু ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হলেও অধিকাংশ আলু ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষকের উৎপাদন খরচই উঠছে না।

উপজেলার রাইপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, একসময় প্রতি মণ আলু সাত শত থেকে আট শত টাকা দরে বিক্রি করেছি। তখন প্রতি হাটেই আলু বেচে মাংস কিনে মনের আনন্দে বাড়ি ফিরতাম। এক মণ আলু না বেচেই এক কেজি মাংস কেনা যেত। অথচ এখন এক কেজি মাংস কিনতে দেড় মণ আলু বেচতে হচ্ছে। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে কৃষক সর্বস্বান্ত হয়ে যাবে।

এক মণ আলু নিয়ে হাটে এসেছেন আব্দুল ছামাদ নামে এক কৃষক। বাড়িতে মেয়ে আর নাতিরা এসেছে। আলু বিক্রি করে মাংস কিনে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু বাজারে আলুর দাম দেখে তিনি হতাশ। কেননা দেড় মণ আলুর দাম এক কেজি গরুর মাংসের সমান।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন বলেন, চলতি রবিশষ্য মৌসুমে আত্রাই উপজেলায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে আলুর দাম কম থাকায় কৃষকেরা একটু হতাশায় রয়েছে। তবে আশা করা যায় আগামীতে আলুর দাম বৃদ্ধি পাবে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» অনেক সচিব এখনও নাশকতার চেষ্টা করছেন: রিজভী

» জাতিসংঘে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের কথা তুলে ধরবেন ড. ইউনূস

» শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে : এ্যানি

» ইসলামপুরে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা শিবির উদ্বোধন

» অতিরিক্ত তেল-মসলাদার খাবার খেলে শরীরে যা ঘটে

» বিএনপির ত্রাণ তহবিলে এখনও ৭ কোটি টাকা জমা রয়েছে : ডা. জাহিদ

» ট্রাকের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত অটো রিকশার দুই যাত্রী নিহত

» বসতবাড়িতে ঢুকে তিনজনকে কুপিয়ে জখম

» উপদেষ্টা নাহিদ সারাদেশে যে মামলা হয়েছে, এর অনেকগুলোই গ্রহণযোগ্য নয়

» আমরা কারও ওপর অন্যায়-অত্যাচার করবো না:সেলিমা রহমান

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নওগাঁয় এক কেজি গরুর মাংসের দামে দেড় মণ আলু

নাদিম আহমেদ অনিক,প্রতিনিধি: উত্তরাঞ্চলের শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে চলতি রবিশষ্য মৌসুমে এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার প্রতিটি হাট-বাজারে এখন প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। আর এখানকার কৃষকরা প্রতি মণ আলু বিক্রি করেছেন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়।

চলতি মৌসুমে আলুর ভালো ফলন পেলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেনা জেলার আলু চাষিরা। অনেক পরিশ্রমের ফসল আলু বিক্রি করে খরচের টাকাই উঠছে না তাদের। দাম না থাকায় তাই এক কেজি গরুর মাংস কিনতে দেড় মণ আলু বেচতে হচ্ছে।

আত্রাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবিশস্য মৌসুমে এবারে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে আলু চাষিদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে আলু ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলার শাহাগোলা, ভোঁপাড়া, মনিয়ারী ও আহসানগঞ্জ ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক আজাদ প্রামানিক বলেন, চলতি মৌসুমে আলুর দাম একেবারেই কম। ভালো মানের আলু ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হলেও অধিকাংশ আলু ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষকের উৎপাদন খরচই উঠছে না।

উপজেলার রাইপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, একসময় প্রতি মণ আলু সাত শত থেকে আট শত টাকা দরে বিক্রি করেছি। তখন প্রতি হাটেই আলু বেচে মাংস কিনে মনের আনন্দে বাড়ি ফিরতাম। এক মণ আলু না বেচেই এক কেজি মাংস কেনা যেত। অথচ এখন এক কেজি মাংস কিনতে দেড় মণ আলু বেচতে হচ্ছে। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে কৃষক সর্বস্বান্ত হয়ে যাবে।

এক মণ আলু নিয়ে হাটে এসেছেন আব্দুল ছামাদ নামে এক কৃষক। বাড়িতে মেয়ে আর নাতিরা এসেছে। আলু বিক্রি করে মাংস কিনে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু বাজারে আলুর দাম দেখে তিনি হতাশ। কেননা দেড় মণ আলুর দাম এক কেজি গরুর মাংসের সমান।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন বলেন, চলতি রবিশষ্য মৌসুমে আত্রাই উপজেলায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে আলুর দাম কম থাকায় কৃষকেরা একটু হতাশায় রয়েছে। তবে আশা করা যায় আগামীতে আলুর দাম বৃদ্ধি পাবে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com