তুরস্কের ঐতিহাসিক হায়া সোফিয়া মসজিদে দীর্ঘ ৮৮ বছর পর ফের তারাবির নামাজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ৮ দশকের বেশি সময় পর মুসল্লিরা ওই মসজিদে তারাবি আদায় করতে পারবেন।
শুক্রবার প্রথম তারাবি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে গত ২০২০ সালের ২৪ জুলাই ওই মসজিদটি মুসল্লিদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
পবিত্র রমজানের পুরো মাস জুড়েই এখানে নানা আয়োজন থাকবে বলে জানিয়েছে হায়া সোফিয়া মসজিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা
এর আগে নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেওয়া হলেও করোনা মহামারি শুরুর পর স্বাস্থ্যবিধির অংশ হিসেবে গত দুই বছর ওই মসজিদে তারাবি নামাজ আদায় করা যায়নি। ফলে মুসল্লিরা অন্য সময় নামাজ আদায় করলেও তারাবি নামাজ আদায়ের সুযোগ পাননি। তবে বর্তমানে তুরস্কে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে এসেছে। তাছাড়া দেশটির অধিকাংশ মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে। সে কারণে হায়া সোফিয়া মসজিদ তারাবির নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এক সময় বিশ্বের সবচেয়ে বড় গির্জা থেকে মসজিদ পরে জাদুঘরে রূপান্তরিত হওয়া দেড় হাজার বছরের পুরনো মসজিদ এই হায়া সোফিয়া।
প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ৫৩২ সালে অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের প্রধান গির্জা (ক্যাথেড্রাল) হিসেবে হায়া সোফিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়। তুর্কি সুলতান মাহমুদ ফাতাহ ১৪৪৩ সালে ইস্তাম্বুল বিজয়ের পর এটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করেন। ১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন ধর্মনিরপেক্ষ তুর্কি সরকার। ১৯৮৫ সালে জাদুঘর হায়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনা ঘোষণা করে ইউনেস্কো।
২০২০ সালের ১০ জুলাই তুরস্কের আদালত হায়া সোফিয়াকে জাদুঘরের মর্যাদা বাতিল করে মসজিদে রূপান্তরের আদেশ দেন। মসজিদ ছাড়া অন্যকিছু হিসেবে এটির ব্যবহারকে অবৈধ বলেও জানান আদালত।
পরে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ এই স্থাপনাকে মসজিদে রূপান্তরে আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ২৪ জুলাই প্রথম জুমার নামাজের জন্য মসজিদটি খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
এদিকে মসজিদে রূপান্তর হলেও হায়া সোফিয়াতে থাকা খ্রিস্টীয় কারুকার্য ও প্রাচীর চিত্রগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। তবে নামাজের সময় এগুলো ঢেকে রাখা হয়। সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড