তাদের নেত্রী নাকি এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা, হাস্যকর : ডিএমপি কমিশনার

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘একটি পার্টির সিনিয়র নেতা বলা শুরু করেছেন, তাদের নেত্রী নাকি এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা। এর চেয়ে হাস্যকর…। কী আর বলব। সত্য দিবালোকের মতো স্পষ্ট।’

 

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে আলোচনা সভা, প্রকাশিতব্য স্মারকগ্রন্থ ‘অনশ্বর পিতা’র মোড়ক উন্মোচন এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২২ উপলক্ষে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘রঙ তুলিতে আঁকি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ’ শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার ।

 

শনিবার বিকেলে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোষ হলো সত্য কথাটাও ঠিক মতো বলতে পারে না। অথচ একটা পার্টির সিনিয়র নেতারা মিথ্যে বলতে বলতে সত্যে পরিণত করতে চান।’

 

স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘রাজারবাগে পুলিশ কনস্টেবল প্রথম গুলি ছুড়েছিল। কে তাকে উজ্জীবিত করেছিল? অথচ একটি দলের নেতারা বলেন, মানুষ নাকি দিগভ্রান্ত হয়েছিল। তাহলে রাজারবাগের পুলিশ, সারাদেশের পুলিশ কীভাবে বুঝেছিল? জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণে যেভাবে বলেছেন, এরপর ফরমালি আর স্বাধীনতার ঘোষণার তেমন কোনো প্রয়োজন ছিল না। সেই ভাষণ পুলিশকে উজ্জীবিত করেছিল।

 

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ প্রমাণ করেছে যে, আমরা ৭ মার্চের ভাষণে শপথ নিয়েছিলাম দেশমাতৃকার জন্য প্রয়োজনবোধে রক্ত দেব, জীবন দেব এবং সেই সত্যের বহিঃপ্রকাশ কিন্তু সারা বাংলাদেশেই ঘটেছিল, শুধু রাজারবাগে নয়।’

 

কমিশনার বলেন, ‘রাজারবাগ থেকে ওয়ারলেসে সারাদেশে ঘোষণা হয়েছিল যে, আক্রমণ হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে ইপিআর, সব যায়গায় আক্রমণ হলো। যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতির চূড়ান্ত কাজটি পুলিশের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছিল। প্রায় প্রতিটি জেলায় পুলিশের অস্ত্র মানুষকে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের হাবিলদাররা দলে দলে ছাত্রদের নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে যত পুলিশ সদস্য জীবন দিয়েছে, আমার মনে হয় না বাংলাদেশের আর কোনো বাহিনীতে এত প্রাণহানি হয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা জানতে পারলে ভবিষ্যতে আমাদের সাহসী সন্তানরা, মেধাবী সন্তানরা এ বাহিনীতে যোগদান করতে আগ্রহী হবে এবং দেশে সেবার ব্রত নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করবে বলে আমি মনে করি।

 

ডিএমপি প্রধান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সাসটেইনেবল উন্নয়নের জন্য সাসটেইনেবল ল অ্যান্ড অর্ডার ও নিরাপত্তা দরকার। চিন্তা করুন, যদি হলি আর্টিজানের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতো, তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়ন কোথায় থাকতো? বাংলাদেশের সমস্ত মেগা প্রজেক্ট যেগুলো এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারতাম না। বিদেশি বিশেষজ্ঞরা এদেশে কাজ করতেন না। আমাদের যে দুজন পুলিশ সদস্য জীবন দিয়ে দেশকে এই জঙ্গি সন্ত্রাস থেকে যে মুক্ত করেছেন, আগুন সন্ত্রাস থেকে মুক্ত করেছেন, আমরা তাদের বীরত্বের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) ড. মইনুর রহমান, র‌্যাব মহাপরিচালক(ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) কৃঞ্চ পদ রায়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এক ব্যক্তিকে পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে হত্যা

» কখনো বিবর্তন

» সন্ত্রাস দমনে সরকারকে সহযোগিতায় সর্বদা প্রস্তুত বিএনপি : মাহদী আমিন

» সিরিয়ার বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে আগুন ধরিয়ে দিল ইসরায়েলি বাহিনী

» ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

» ২১ জেলায় পানিতে ডুবেছে ৭২ হাজার হেক্টর জমির ফসল

» পাশবিক এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে : আসিফ নজরুল

» আজ শনিবার রাজধানীর যেসব এলাকা-মার্কেট বন্ধ

» জামায়াতে ইসলামী কোনো চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীর সঙ্গে জোট করবে না

» নতুন বন্দোবস্ত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না: আখতার হোসেন

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

তাদের নেত্রী নাকি এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা, হাস্যকর : ডিএমপি কমিশনার

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘একটি পার্টির সিনিয়র নেতা বলা শুরু করেছেন, তাদের নেত্রী নাকি এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা। এর চেয়ে হাস্যকর…। কী আর বলব। সত্য দিবালোকের মতো স্পষ্ট।’

 

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে আলোচনা সভা, প্রকাশিতব্য স্মারকগ্রন্থ ‘অনশ্বর পিতা’র মোড়ক উন্মোচন এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২২ উপলক্ষে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘রঙ তুলিতে আঁকি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ’ শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার ।

 

শনিবার বিকেলে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দোষ হলো সত্য কথাটাও ঠিক মতো বলতে পারে না। অথচ একটা পার্টির সিনিয়র নেতারা মিথ্যে বলতে বলতে সত্যে পরিণত করতে চান।’

 

স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘রাজারবাগে পুলিশ কনস্টেবল প্রথম গুলি ছুড়েছিল। কে তাকে উজ্জীবিত করেছিল? অথচ একটি দলের নেতারা বলেন, মানুষ নাকি দিগভ্রান্ত হয়েছিল। তাহলে রাজারবাগের পুলিশ, সারাদেশের পুলিশ কীভাবে বুঝেছিল? জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণে যেভাবে বলেছেন, এরপর ফরমালি আর স্বাধীনতার ঘোষণার তেমন কোনো প্রয়োজন ছিল না। সেই ভাষণ পুলিশকে উজ্জীবিত করেছিল।

 

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ প্রমাণ করেছে যে, আমরা ৭ মার্চের ভাষণে শপথ নিয়েছিলাম দেশমাতৃকার জন্য প্রয়োজনবোধে রক্ত দেব, জীবন দেব এবং সেই সত্যের বহিঃপ্রকাশ কিন্তু সারা বাংলাদেশেই ঘটেছিল, শুধু রাজারবাগে নয়।’

 

কমিশনার বলেন, ‘রাজারবাগ থেকে ওয়ারলেসে সারাদেশে ঘোষণা হয়েছিল যে, আক্রমণ হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে ইপিআর, সব যায়গায় আক্রমণ হলো। যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতির চূড়ান্ত কাজটি পুলিশের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছিল। প্রায় প্রতিটি জেলায় পুলিশের অস্ত্র মানুষকে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের হাবিলদাররা দলে দলে ছাত্রদের নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে যত পুলিশ সদস্য জীবন দিয়েছে, আমার মনে হয় না বাংলাদেশের আর কোনো বাহিনীতে এত প্রাণহানি হয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা জানতে পারলে ভবিষ্যতে আমাদের সাহসী সন্তানরা, মেধাবী সন্তানরা এ বাহিনীতে যোগদান করতে আগ্রহী হবে এবং দেশে সেবার ব্রত নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করবে বলে আমি মনে করি।

 

ডিএমপি প্রধান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সাসটেইনেবল উন্নয়নের জন্য সাসটেইনেবল ল অ্যান্ড অর্ডার ও নিরাপত্তা দরকার। চিন্তা করুন, যদি হলি আর্টিজানের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতো, তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়ন কোথায় থাকতো? বাংলাদেশের সমস্ত মেগা প্রজেক্ট যেগুলো এখন বাস্তবায়িত হচ্ছে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারতাম না। বিদেশি বিশেষজ্ঞরা এদেশে কাজ করতেন না। আমাদের যে দুজন পুলিশ সদস্য জীবন দিয়ে দেশকে এই জঙ্গি সন্ত্রাস থেকে যে মুক্ত করেছেন, আগুন সন্ত্রাস থেকে মুক্ত করেছেন, আমরা তাদের বীরত্বের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) ড. মইনুর রহমান, র‌্যাব মহাপরিচালক(ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) কৃঞ্চ পদ রায়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com