জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) দিবসটি উপলক্ষ্যে সকালে বিজিবি সদর দপ্তরসহ অন্যান্য সকল ইউনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বেলা ১১টায় বিজিবি সদর দপ্তরসহ অন্যান্য সব ইউনিটে বঙ্গবন্ধুর জীবনীর ওপর বিশেষ আলোচনা এবং ১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) এর তৃতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রদত্ত ভাষণ ও ‘সতীর্থ এসো সত্যাশ্রয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
বিজিবি সদর দপ্তর, পিলখানাস্থ সীমান্ত সম্মেলনকেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি মহাপরিচালক তার বক্তব্যের শুরুতে বিজিবি’র সকল সদস্যের পক্ষ থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুর জন্ম একটি ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর জন্মের সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধুর জন্মের মধ্য দিয়ে একজন রূপকারের জন্ম হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও বাংলাভাষা একইসূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ১৯৪৮ সালে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন, ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যূত্থান,৭০’র সাধারণ নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান অবিস্মরণীয়।
‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ছিল বাঙালির মুক্তির দিশা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। এ ভাষণ UNESCO-এর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এটা আমাদের জন্য পরম পাওয়া ও অত্যন্ত গর্বের বিষয়। বঙ্গবন্ধুর রয়েছে দীর্ঘ কারাবরণের ইতিহাস। বাঙালি জাতিকে মুক্তির স্বাদ এবং স্বাধীনতা দেওয়ার লক্ষ্যে আজীবন সংগ্রাম করেছেন। অকাতরে জেল-জুলুম সহ্য করেছেন।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন সহজসাধ্য ছিল না। বঙ্গবন্ধু অতি অল্প সময়ে বাংলাদেশের সংবিধান রচনাসহ পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, শিল্পনীতি, খাদ্য ব্যবস্থা, ব্যাংক ব্যবস্থা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক করে বাংলাদেশের পুনর্গঠন কাজে ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছিলেন। তিনি দেশে দেশে ঘুরে বাংলাদেশের স্বীকৃতি আদায়ের পাশাপাশি দেশকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করেছেন। তিনিই প্রথম জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ প্রদান করে বাংলাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু একটি সুখি-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এ লক্ষ্যে তিনি কাজও শুরু করেছিলেন কিন্তু শেষ করে যেতে পারেননি। তাঁর স্বপ্ন পূরণে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ অদম্য অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে বাদ যোহর পিলখানার কেন্দ্রীয় মসজিদসহ সব রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিট কর্তৃক বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের জন্য দোয়া এবং দেশ ও মানুষের সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। অনুষ্ঠানে বিজিবি’র সকল পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা, সৈনিকসহ সকল বেসামরিক কর্মকর্তা কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। সূএ:রাইজিংবিডি.কম