জন্মসনদ দিতে হয়রানি করলে কাউকে ছাড় নয় : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

জন্মসনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে জনগণকে হয়রানি করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী (এলজিআরডি) মো. তাজুল ইসলাম। আজ বেলা ১১টায় অনলাইনে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ হুশিয়ারি দেন।

 

মন্ত্রী বলেন, অটোমেশন হয়ে মানুষ যেভাবে জন্মনিবন্ধন পাচ্ছে সেখানে অনেক ত্রুটি আছে, সেগুলো আমরা চিহ্নিত করেছি। সেটি ওভারকাম করতেই আজকের সভা। একটি সভা করলেই সব সমাধান হয়ে যাবে পৃথিবীর কোথাও নেই। জন্মনিবন্ধনপ্রপ্তিতে যদি কোনো স্তরে জনগণকে হয়রানি করা হয়, তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। জন্মনিবন্ধনটা ইদানিং খুব বার্নিং ইস্যু হিসেবে আমরা দেখছি। তারপরও কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জন্মনিবন্ধন প্রাপ্তি কীভাবে আরও সহজ করা যায় সেজন্যই আমরা বসেছি। যাতে কাউকে হয়রানি করতে না পারে।

সার্ভার জটিলতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের এখানে সার্ভার নতুনভাবে রিরেশোনালাইজেশন হয়েছে। সেজন্য কিছুদিন শাটডাউন ছিল সার্ভার। এখন চালু হয়েছে। এখনও কোনো কমপ্লেইন আছে কি না আমি নিশ্চিত না। এটা অনেক টাকা বিনিয়োগ করে করা হয়েছে। ইউনিসেফ আমাদের আর্থিকভাবে সহায়তা করেছে। তারা নিজেরাই দেখভাল করছে যাতে সুন্দরভাবে এটি পরিচালনা করা যায়।

 

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জন্মনিবন্ধন হলো একজন মানুষের মূল ভিত্তি। গুড গভর্নেন্সের কমিটমেন্ট ফুলফিল করতে হলে এবং আদর্শ সমাজ গড়ে তুলতে জন্মনিবন্ধনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে আসতে হবে।

 

দুর্নীতির বিষয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিমুক্ত কোনো দেশ নাই, কমবেশি কিছু দুর্নীতি আছে। কিন্তু বিশাল আকারে দুর্নীতি এই মূহুর্তে সারাবিশ্বে খুবই কম।

 

তিনি বলেন, ইদানিংকালে আমরা সব বিষয়ে অটোমেশনের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু জন্মনিবন্ধনে এখন অসংখ্য ভুল থাকে। তাই বলে এটা বলা যাবে না যে তিনি (জন্মনিবন্ধনকারী) অশিক্ষিত বলে ভুল দিয়েছে। আপনি (কর্মকর্তা) তো শিক্ষিত। তিনি অশিক্ষিত বলেই তো আপনাকে এখনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রকে সার্ভিস দেওয়ার জন্য তো আপনি কমিটমেন্ট দিয়ে বসেছেন, আমি কমিটমেন্ট দিয়েছি। আমার কাজ যদি আমি না করি তাহলে আমি দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারবো না।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, জন্মনিবন্ধনে অসংখ্য ভুল। আপনি যেভাবে দরকার সেভাবে সেটি সমাধান করবেন। এই যে লোয়ার এনটিটি হলো ইউনিয়ন পরিষদ। সেখানকার মেম্বারদের সেখানে এই কাজে নিয়োগ করা যাবে কি না জানি না। একটি ইউনিয়নে ২৫ হাজার লোক, সেখানে অনেক দূরত্বও রয়েছে। অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে এসব জায়গায় যেতে পারে না। এখানে একটি ম্যাকানিজম থাকতে পারে, এখানে কার জন্ম হবে সঙ্গে সঙ্গে সেটি নিবন্ধন করা। সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যানদের একটিভ হতে হবে। চেয়ারম্যানরা যখন মাসিক মিটিং করবে তখন প্রত্যেকটি নাগরিকের খবর রাখতে হবে, কোনো ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেছে, কে মৃত্যুবরণ করেছে।

 

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, আমি কয়েকদিন আগে দুবাই গিয়েছি। সেখানে আমাদের কনস্যুলেট অফিসে গিয়ে দেখলাম, একটি সিরিয়াস কমপ্লেইন যে মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাদের নামের একটু এদিক-সেদিক হয়ে যায়। আমাদের মানুষ কিছু ভুল করে ফেলে, প্রথমে সেটি গুরুত্ব দেয় না, পরে গুরুত্ব দেয়। এটাকে কীভাবে সহজ এবং সমস্যা সমাধান করা যায় সেটি দেখতে হবে। আপনি আমি সাফার করছি না, কেউ কেউ তো করছে। এরা কিন্তু অসহায় মানুষ, বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় জায়গায় ঘুরে। সাধারণ একটি ভুল ভ্রান্তির জন্য হয়রানির শেষ নাই। আমি যদি তাকে হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে পারি তাহলে তো সে তার নিজের কাজে ঠিকভাবে মনোনিবেশ করতে পারে। হয়তো তিনি একটি চাকরি পেয়েছেন, সেখানে যোগ দিতে পারছেন না এই ভুলের জন্য। হয়তো এক সপ্তাহ বা ১৫ দিন তাকে ঘোরাচ্ছে। এদিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

 

তিনি আরও বলেন, কাউন্সিলররা অনেক সময় ডুপ্লিকেশনের কথা বলে। এটা কীভাবে হবে? আপনি যখন এন্ট্রি করবেন তখন একই নাম আসলে সেটা তো এন্ট্রি হবেই না। আমাদের জনসংখ্যা অনেক বেশি। দেখা যায় একটা ইউনিয়নে ২৫ হাজার মানুষ। কিন্তু দেখা গেছে কোনো কোনো দেশেই ২৫ হাজার মানুষ নাই।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা : খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে চলছে শুনানি

» পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া ছাত্রলীগ নেতা ফের গ্রেফতার

» মাহফুজ আলমের সঙ্গে এমন আচরণের জন্য আপনাদের ধিক্কার: সারজিস

» দেশের মানুষ চায় না বারবার ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটুক: আলী রীয়াজ

» কেন্দ্র দখল হলে পুরো নির্বাচন বাতিল করতে পারবে ইসি

» উপদেষ্টা মাহফুজের মাথায় বোতল নিক্ষেপকারী ওই ব্যক্তিকে চিহ্নিত

» পুনর্মিলনী আয়োজনের লক্ষ্যে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির সভা

» পুঁজিবাজারে প্রধান উপদেষ্টার ৫ টনিক, অপেক্ষায় ব্যবসায়ী-বিনিয়োগকারীরা

» ফেসবুক পে-আউট সেটআপে ভুল হলে যা করবেন

» ইশরাককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও নগরভবন অবরোধ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জন্মসনদ দিতে হয়রানি করলে কাউকে ছাড় নয় : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

জন্মসনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে জনগণকে হয়রানি করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী (এলজিআরডি) মো. তাজুল ইসলাম। আজ বেলা ১১টায় অনলাইনে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ হুশিয়ারি দেন।

 

মন্ত্রী বলেন, অটোমেশন হয়ে মানুষ যেভাবে জন্মনিবন্ধন পাচ্ছে সেখানে অনেক ত্রুটি আছে, সেগুলো আমরা চিহ্নিত করেছি। সেটি ওভারকাম করতেই আজকের সভা। একটি সভা করলেই সব সমাধান হয়ে যাবে পৃথিবীর কোথাও নেই। জন্মনিবন্ধনপ্রপ্তিতে যদি কোনো স্তরে জনগণকে হয়রানি করা হয়, তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। জন্মনিবন্ধনটা ইদানিং খুব বার্নিং ইস্যু হিসেবে আমরা দেখছি। তারপরও কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জন্মনিবন্ধন প্রাপ্তি কীভাবে আরও সহজ করা যায় সেজন্যই আমরা বসেছি। যাতে কাউকে হয়রানি করতে না পারে।

সার্ভার জটিলতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের এখানে সার্ভার নতুনভাবে রিরেশোনালাইজেশন হয়েছে। সেজন্য কিছুদিন শাটডাউন ছিল সার্ভার। এখন চালু হয়েছে। এখনও কোনো কমপ্লেইন আছে কি না আমি নিশ্চিত না। এটা অনেক টাকা বিনিয়োগ করে করা হয়েছে। ইউনিসেফ আমাদের আর্থিকভাবে সহায়তা করেছে। তারা নিজেরাই দেখভাল করছে যাতে সুন্দরভাবে এটি পরিচালনা করা যায়।

 

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জন্মনিবন্ধন হলো একজন মানুষের মূল ভিত্তি। গুড গভর্নেন্সের কমিটমেন্ট ফুলফিল করতে হলে এবং আদর্শ সমাজ গড়ে তুলতে জন্মনিবন্ধনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে আসতে হবে।

 

দুর্নীতির বিষয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিমুক্ত কোনো দেশ নাই, কমবেশি কিছু দুর্নীতি আছে। কিন্তু বিশাল আকারে দুর্নীতি এই মূহুর্তে সারাবিশ্বে খুবই কম।

 

তিনি বলেন, ইদানিংকালে আমরা সব বিষয়ে অটোমেশনের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু জন্মনিবন্ধনে এখন অসংখ্য ভুল থাকে। তাই বলে এটা বলা যাবে না যে তিনি (জন্মনিবন্ধনকারী) অশিক্ষিত বলে ভুল দিয়েছে। আপনি (কর্মকর্তা) তো শিক্ষিত। তিনি অশিক্ষিত বলেই তো আপনাকে এখনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রকে সার্ভিস দেওয়ার জন্য তো আপনি কমিটমেন্ট দিয়ে বসেছেন, আমি কমিটমেন্ট দিয়েছি। আমার কাজ যদি আমি না করি তাহলে আমি দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারবো না।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, জন্মনিবন্ধনে অসংখ্য ভুল। আপনি যেভাবে দরকার সেভাবে সেটি সমাধান করবেন। এই যে লোয়ার এনটিটি হলো ইউনিয়ন পরিষদ। সেখানকার মেম্বারদের সেখানে এই কাজে নিয়োগ করা যাবে কি না জানি না। একটি ইউনিয়নে ২৫ হাজার লোক, সেখানে অনেক দূরত্বও রয়েছে। অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে এসব জায়গায় যেতে পারে না। এখানে একটি ম্যাকানিজম থাকতে পারে, এখানে কার জন্ম হবে সঙ্গে সঙ্গে সেটি নিবন্ধন করা। সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যানদের একটিভ হতে হবে। চেয়ারম্যানরা যখন মাসিক মিটিং করবে তখন প্রত্যেকটি নাগরিকের খবর রাখতে হবে, কোনো ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেছে, কে মৃত্যুবরণ করেছে।

 

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, আমি কয়েকদিন আগে দুবাই গিয়েছি। সেখানে আমাদের কনস্যুলেট অফিসে গিয়ে দেখলাম, একটি সিরিয়াস কমপ্লেইন যে মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাদের নামের একটু এদিক-সেদিক হয়ে যায়। আমাদের মানুষ কিছু ভুল করে ফেলে, প্রথমে সেটি গুরুত্ব দেয় না, পরে গুরুত্ব দেয়। এটাকে কীভাবে সহজ এবং সমস্যা সমাধান করা যায় সেটি দেখতে হবে। আপনি আমি সাফার করছি না, কেউ কেউ তো করছে। এরা কিন্তু অসহায় মানুষ, বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় জায়গায় ঘুরে। সাধারণ একটি ভুল ভ্রান্তির জন্য হয়রানির শেষ নাই। আমি যদি তাকে হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে পারি তাহলে তো সে তার নিজের কাজে ঠিকভাবে মনোনিবেশ করতে পারে। হয়তো তিনি একটি চাকরি পেয়েছেন, সেখানে যোগ দিতে পারছেন না এই ভুলের জন্য। হয়তো এক সপ্তাহ বা ১৫ দিন তাকে ঘোরাচ্ছে। এদিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

 

তিনি আরও বলেন, কাউন্সিলররা অনেক সময় ডুপ্লিকেশনের কথা বলে। এটা কীভাবে হবে? আপনি যখন এন্ট্রি করবেন তখন একই নাম আসলে সেটা তো এন্ট্রি হবেই না। আমাদের জনসংখ্যা অনেক বেশি। দেখা যায় একটা ইউনিয়নে ২৫ হাজার মানুষ। কিন্তু দেখা গেছে কোনো কোনো দেশেই ২৫ হাজার মানুষ নাই।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com