জনগণের কাছ থেকে দেশের মালিকানা ছিনতাই হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, দেশের প্রকৃত মালিক হচ্ছেন জনগণ, তারা যাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন তারাই জনগণের মতামতের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করবেন। কিন্তু এখন দেশের মালিকানা সাধারণ মানুষের কাছে নেই। দেশের সাধারণ মানুষ যেন আবার ঊপনিবেশিক আমলের ন্যায় প্রজা হয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শোষণ থেকে মুক্তি পেতে একটি দেশের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়ে ছিলো। লাখো বীর শহীদের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশের জনগণ নিজেদের একটি দেশ অর্জন করেছিল। সংবিধান অনুযায়ী দেশের মালিক হচ্ছেন জনসাধারণ।
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাপা চেয়ারম্যান বলেন, বিভিন্ন দেশের সরকার পরিবর্তন হয় আবার শান্তিপূর্ণভাবে সরকার গঠন হয়। আবার সরকারের কেউ পদত্যাগ করলে, শান্তিপূর্ণ ভোটের মাধ্যমে তা পূরণ হয়। কিন্তু আমাদের দেশের বাস্তবতা ভিন্ন করা হয়েছে। এখানে নির্বাচন যেন যুদ্ধ, নির্বাচনে পরাজিত হলে তাকে মরতে হবে।
তিনি বলেন, এমন বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়নি। এমন বাংলাদেশের জন্য বীর শহীদরা আত্মত্যাগ করেননি।
জিএম কাদের আরো বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার বাস্তবতা অনেকটাই এক। শ্রীলংকায় দশ বছর গৃহযুদ্ধ চলেছে, সেখানে কোন পর্যটক যায়নি কিন্তু দেশটি দেউলিয়া হয়নি। জবাবদিহিতাহীণ সরকারের গোয়ার্তুমীর ফলে অর্থনৈতিকভাবে অকার্যকর ও অপরিকল্পিত মেগা প্রকল্প গ্রহণ ও সে জন্য গৃহিত সুদসহ বিদেশী ঋণ পরিশোধ করতে গিয়েই শ্রীলংকা দেউলিয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সাথে এর কিছুটা মিল রয়েছে। অভিযোগ আছে লুটপাটের কারণে, মেগা প্রকল্পগুলোতে অনেক বেশি ব্যায় হয়। ফলে, ওই প্রকল্পের আয় দিয়ে ঋণ শোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু যখন সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে হবে, তখন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ পেতে পারে এমন আশংকা বিশেষজ্ঞদের।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, এডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, মুহা: জহিরুল আলম রুবেল, যুগ্ম মহাসচিব মো. বেলাল হোসেন প্রমুখ।