খোঁজ নেই মোস্ট ওয়ানটেড ৬৩ আসামির

পাঁচ বছরের বেশি সময়েও খোঁজ মিলছে না মোস্ট ওয়ানটেড ৬৩ আসামির। পুলিশের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা পলাতকদের বিষয়ে সেই সব দেশের পুলিশের কাছ থেকে যথাযথ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

 

ইন্টারপোলের ‘ওয়ানটেড পারসন্স’ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই সংস্থাটির ওয়েবসাইটে ঝুলছে বাংলাদেশের পলাতক ৬৩ শীর্ষ অপরাধীর নাম ও ছবি। এ তালিকায় রয়েছে-           যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, জাল নোট ব্যবসায়ী, পর্নো ছবির ব্যবসায়ী ও শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্তরা। মাঝেমধ্যে রেড নোটিস বা লাল তালিকাভুক্ত এসব ৬৩ অপরাধীর মধ্যে দু-একজন ভারত, দুবাই, নেপালে অবস্থানের খবর পেলে দেশ থেকে ফেরত আনতে পারেনি পুলিশ সদর দফতরের এনসিবি শাখা। তবে এদের কারও সুনির্দিষ্ট অবস্থান সম্পর্কে জানে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

 

২০২০ সালে লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যাকান্ডের পর মানব পাচারকারীদের ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেফতারে রেড নোটিস জারি করেছে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) এআইজি মহিউল আলম এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, পুলিশ বা তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কোনো ইউনিট যদি মনে করে তাদের আসামি বিদেশে পালিয়ে আছে এবং ফিরিয়ে আনা জরুরি, তখন তার বিষয়ে ইন্টারপোলের সহযোগিতা নেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ইন্টারপোলের কিছু নিয়ম আছে, সেগুলো মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হয়। ইন্টারপোলের রেড নোটিসে অপরাধীদের বিষয়ে সংস্থার পক্ষ থেকে প্রতি পাঁচ বছর পরপর তথ্য হালনাগাদ করা হয়। তবে ওই সব অপরাধীর সম্ভাব্য অবস্থান জানার পর সেই দেশের এনসিবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু সেই দেশের এনসিবি থেকে যথাযথ তথ্য পাওয়া যায় না।

 

ইন্টারপোলের রেড নোটিসভুক্ত ৬৩ আসামি হলেন- জাফর ইকবাল : জন্ম ১৯৮২ সালের ২ জুন। বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে মানব পাচারের। পাচারের পর হত্যারও অভিযোগ রয়েছে। তানজিরুল : জন্ম ১৯৮৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর। তারও বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ, ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে মানব পাচারের। পাচারের পর হত্যারও অভিযোগ রয়েছে।

 

স্বপন : জন্ম ১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর। এই ব্যক্তির বাড়িও কিশোরগঞ্জে। তার বিরুদ্ধেও ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচারের পর হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

 

মোল্লা নজরুল ইসলাম : জন্ম ১৯৭৭ সালের ৪ মে। বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। তার বিরুদ্ধেও ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচারের পর হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

 

মিন্টু মিয়া : জন্ম ১৯৭৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি। বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। তার বিরুদ্ধেও ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচারের পর হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এরা সংগঠিতভাবে পাচারের শিকার মানুষদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করতেন। পরে মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা করতেন।

 

খান মো. শহিদ উদ্দিন : জন্ম ১৯৬৪ সালের ৩ জানুয়ারি। বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদে মদদ দেওয়া, অস্ত্র ব্যবসা, প্রতারণা ও অর্থ পাচারের।

 

ওয়াসিম : জন্ম ১৯৮৪ সালের ১০ ডিসেম্বর। বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, পর্নোগ্রাফির ব্যবসা ও মুঠোফোনে পর্নো ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার।

 

খোরশেদ আলম : জন্ম ১৯৮৪ সালের ১১ নভেম্বর। বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায়। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর আঘাতের অভিযোগ রয়েছে।

 

মোহাম্মদ হানিফ : জন্ম ১৯৬২ সালের ১ জানুয়ারি। বাড়ি ঢাকার সাভারে। তিনি হানিফ পরিবহনের মালিক। তিনি হত্যা ও খুনের চেষ্টায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।

 

গিয়াস উদ্দিন : জন্ম ১৯৭০ সালে হলেও সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ এবং গ্রামের বাড়ির কোনো তথ্য জানতে পারেননি তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহার এবং আঘাত করার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

 

অশোক কুমার দাস : জন্ম ১৯৮১ সালের ১ জানুয়ারি। বাড়ি চট্টগ্রামে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সহিংসতা সৃষ্টি এবং শারীরিক্ত নির্যাতনের।

 

মিজান মিয়া : জন্ম ১৯৭৮ সালের ৮ মার্চ। বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। তার বিরুদ্ধে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

 

চন্দন কুমার রায় : জন্ম ১৯৭৮ সালের ২০ ডিসেম্বর। বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। হত্যা, ষড়যন্ত্র এবং কিছু ব্যক্তির অভিন্ন স্বার্থ রক্ষায় আইনবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার একাধিক অপরাধে অভিযুক্ত।

 

রাতুল আহমেদ বাবু : জন্ম ১৯৮১ সালের ২৭ জানুয়ারি। বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আওয়ামী লীগের জনসভায় হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটানো ও হত্যার।

 

লালু মো. সিরাজ মোস্তফা : জন্ম ১৯৯৬ সালের ৩ এপ্রিল। বাড়ি নাটোর জেলায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অভিবাসীদের পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার।

 

হারিছ চৌধুরী : ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি তিনি। ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে আত্মগোপনে চলে যান হারিছ চৌধুরী। এর পর থেকে তাকে ধরিয়ে দিতে ইন্টারপোলে রেড নোটিস জারি করা হয়। ১৪ বছর ধরে এই নোটিস ঝুলছে। তবে তার স্বজনরা দাবি করেছেন, গত বছর ৩ সেপ্টেম্বর হারিছ চৌধুরী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা গেছেন। তাকে ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের জালালাবাদের কমলাপুর এলাকায় জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যীন মাদরাসার কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

 

জাহিদ হোসেন খোকন : জন্ম ১৯৪২ সালের ১১ জানুয়ারি। বাড়ি ফরিদপুরের নগরকান্দায়। তিনি নগরকান্দার পৌর মেয়র ছিলেন এবং পলাতক বিএনপি নেতা। তার বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধসহ হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্মান্তর ও দেশত্যাগে বাধ্য করার মতো ১১টি অভিযোগ রয়েছে।

 

সৈয়দ মো. হোসেন : জন্ম ১৯৫১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। তার বিরুদ্ধে একাত্তরে ৬৮ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা এবং আড়াই শ’র বেশি ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া হত্যা, লুটপাট, নির্যাতনসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত তিনি।

 

সৈয়দ মো. হাচান আলী : জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৮ আগস্ট। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। এই ব্যক্তিও হত্যা, লুটপাট, নির্যাতনসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত।

 

আজিজুর রহমান : জন্ম ১৯৭৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। বাড়ি খুলনা জেলায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জাল নোট সরবরাহ, ব্যবসা ও তৈরির।

 

তরিকুল ইসলাম : জন্ম ১৯৮৬ সালের ২২ জুলাই। বাড়ি নওগাঁ জেলায়। তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ জাল নোট সরবরাহ, ব্যবসা ও তৈরির।

 

এ তালিকায় আরও আছেন- আবদুল জব্বার, অজয় বিশ্বাস, আবদুল জব্বার, হানিফ, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, মোহাম্মদ সবুজ ফকির, শফিক-উল, মোহাম্মদ মনির ভূঁইয়া, আমান উল্লাহ শফিক, যুদ্ধাপরাধী আবুল কালাম আজাদ, সাজ্জাদ হোসেন খান, জাহিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীর ওরফে ফেরদৌস, নাঈম খান ইকরাম, ইউসুফ, আবদুল আলিম শরিফ, নুরুল দীপু, আহমেদ মজনু, মোহাম্মদ ফজলুল আমিন জাভেদ, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, আরেক খুনি আবদুর রশিদ খন্দকার, খুনি শরিফুল হক ডালিম, খুনি এ এম রাশেদ চৌধুরী, মোসলেম উদ্দিন খান, আহমেদ শরিফুল হোসেন, নাজমুল আনসার, রউফ উদ্দিন, মোহাম্মদ আতাউর রহমান চৌধুরী, সালাহউদ্দিন মিন্টু, একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত মাওলানা মোহাম্মদ তাজউদ্দিন, গোলাম ফারুক অভি, হারুন শেখ, সুলতান সাজিদ, তৌফিক আলম, জাফর আহমেদ, আমিনুর রসুল, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, নবী হোসেন, তানভীর ইসলাম জয় ও জিসান আহমেদ।

সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের ফলাফল ভালো কিছু বয়ে আনে না: গয়েশ্বর

» ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত

» শিল্পপতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কৃতি, প্রেম জল্পনা তুঙ্গে

» সোহেল তাজকে প্রধান উপদেষ্টার ফোন

» অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করতে ষড়যন্ত্র চলছে: এ জেড এম জাহিদ

» দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বেলায়েত বাহিনীর প্রধানসহ চার সক্রিয় সদস্য আটক

» যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১১৭জন আটক

» অস্ত্র ও গুলিসহ রোহিঙ্গা যুবক আটক

» মাতৃভাষা না হলেও বিশ্বে আরবি প্রতিযোগিতায় শিশুদের অর্জন গৌরবের: ধর্ম উপদেষ্টা

» জি কে শামীমের জামিন বাতিল

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

খোঁজ নেই মোস্ট ওয়ানটেড ৬৩ আসামির

পাঁচ বছরের বেশি সময়েও খোঁজ মিলছে না মোস্ট ওয়ানটেড ৬৩ আসামির। পুলিশের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা পলাতকদের বিষয়ে সেই সব দেশের পুলিশের কাছ থেকে যথাযথ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

 

ইন্টারপোলের ‘ওয়ানটেড পারসন্স’ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই সংস্থাটির ওয়েবসাইটে ঝুলছে বাংলাদেশের পলাতক ৬৩ শীর্ষ অপরাধীর নাম ও ছবি। এ তালিকায় রয়েছে-           যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, জাল নোট ব্যবসায়ী, পর্নো ছবির ব্যবসায়ী ও শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্তরা। মাঝেমধ্যে রেড নোটিস বা লাল তালিকাভুক্ত এসব ৬৩ অপরাধীর মধ্যে দু-একজন ভারত, দুবাই, নেপালে অবস্থানের খবর পেলে দেশ থেকে ফেরত আনতে পারেনি পুলিশ সদর দফতরের এনসিবি শাখা। তবে এদের কারও সুনির্দিষ্ট অবস্থান সম্পর্কে জানে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

 

২০২০ সালে লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যাকান্ডের পর মানব পাচারকারীদের ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেফতারে রেড নোটিস জারি করেছে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। পুলিশ সদর দফতরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) এআইজি মহিউল আলম এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, পুলিশ বা তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কোনো ইউনিট যদি মনে করে তাদের আসামি বিদেশে পালিয়ে আছে এবং ফিরিয়ে আনা জরুরি, তখন তার বিষয়ে ইন্টারপোলের সহযোগিতা নেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ইন্টারপোলের কিছু নিয়ম আছে, সেগুলো মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হয়। ইন্টারপোলের রেড নোটিসে অপরাধীদের বিষয়ে সংস্থার পক্ষ থেকে প্রতি পাঁচ বছর পরপর তথ্য হালনাগাদ করা হয়। তবে ওই সব অপরাধীর সম্ভাব্য অবস্থান জানার পর সেই দেশের এনসিবির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু সেই দেশের এনসিবি থেকে যথাযথ তথ্য পাওয়া যায় না।

 

ইন্টারপোলের রেড নোটিসভুক্ত ৬৩ আসামি হলেন- জাফর ইকবাল : জন্ম ১৯৮২ সালের ২ জুন। বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে মানব পাচারের। পাচারের পর হত্যারও অভিযোগ রয়েছে। তানজিরুল : জন্ম ১৯৮৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর। তারও বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ, ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে মানব পাচারের। পাচারের পর হত্যারও অভিযোগ রয়েছে।

 

স্বপন : জন্ম ১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর। এই ব্যক্তির বাড়িও কিশোরগঞ্জে। তার বিরুদ্ধেও ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচারের পর হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

 

মোল্লা নজরুল ইসলাম : জন্ম ১৯৭৭ সালের ৪ মে। বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। তার বিরুদ্ধেও ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচারের পর হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

 

মিন্টু মিয়া : জন্ম ১৯৭৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি। বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। তার বিরুদ্ধেও ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাচারের পর হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এরা সংগঠিতভাবে পাচারের শিকার মানুষদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করতেন। পরে মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা করতেন।

 

খান মো. শহিদ উদ্দিন : জন্ম ১৯৬৪ সালের ৩ জানুয়ারি। বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদে মদদ দেওয়া, অস্ত্র ব্যবসা, প্রতারণা ও অর্থ পাচারের।

 

ওয়াসিম : জন্ম ১৯৮৪ সালের ১০ ডিসেম্বর। বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, পর্নোগ্রাফির ব্যবসা ও মুঠোফোনে পর্নো ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার।

 

খোরশেদ আলম : জন্ম ১৯৮৪ সালের ১১ নভেম্বর। বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায়। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর আঘাতের অভিযোগ রয়েছে।

 

মোহাম্মদ হানিফ : জন্ম ১৯৬২ সালের ১ জানুয়ারি। বাড়ি ঢাকার সাভারে। তিনি হানিফ পরিবহনের মালিক। তিনি হত্যা ও খুনের চেষ্টায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।

 

গিয়াস উদ্দিন : জন্ম ১৯৭০ সালে হলেও সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ এবং গ্রামের বাড়ির কোনো তথ্য জানতে পারেননি তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহার এবং আঘাত করার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

 

অশোক কুমার দাস : জন্ম ১৯৮১ সালের ১ জানুয়ারি। বাড়ি চট্টগ্রামে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সহিংসতা সৃষ্টি এবং শারীরিক্ত নির্যাতনের।

 

মিজান মিয়া : জন্ম ১৯৭৮ সালের ৮ মার্চ। বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। তার বিরুদ্ধে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

 

চন্দন কুমার রায় : জন্ম ১৯৭৮ সালের ২০ ডিসেম্বর। বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। হত্যা, ষড়যন্ত্র এবং কিছু ব্যক্তির অভিন্ন স্বার্থ রক্ষায় আইনবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার একাধিক অপরাধে অভিযুক্ত।

 

রাতুল আহমেদ বাবু : জন্ম ১৯৮১ সালের ২৭ জানুয়ারি। বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আওয়ামী লীগের জনসভায় হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটানো ও হত্যার।

 

লালু মো. সিরাজ মোস্তফা : জন্ম ১৯৯৬ সালের ৩ এপ্রিল। বাড়ি নাটোর জেলায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অভিবাসীদের পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার।

 

হারিছ চৌধুরী : ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি তিনি। ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে আত্মগোপনে চলে যান হারিছ চৌধুরী। এর পর থেকে তাকে ধরিয়ে দিতে ইন্টারপোলে রেড নোটিস জারি করা হয়। ১৪ বছর ধরে এই নোটিস ঝুলছে। তবে তার স্বজনরা দাবি করেছেন, গত বছর ৩ সেপ্টেম্বর হারিছ চৌধুরী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা গেছেন। তাকে ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের জালালাবাদের কমলাপুর এলাকায় জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যীন মাদরাসার কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

 

জাহিদ হোসেন খোকন : জন্ম ১৯৪২ সালের ১১ জানুয়ারি। বাড়ি ফরিদপুরের নগরকান্দায়। তিনি নগরকান্দার পৌর মেয়র ছিলেন এবং পলাতক বিএনপি নেতা। তার বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধসহ হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্মান্তর ও দেশত্যাগে বাধ্য করার মতো ১১টি অভিযোগ রয়েছে।

 

সৈয়দ মো. হোসেন : জন্ম ১৯৫১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। তার বিরুদ্ধে একাত্তরে ৬৮ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা এবং আড়াই শ’র বেশি ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া হত্যা, লুটপাট, নির্যাতনসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত তিনি।

 

সৈয়দ মো. হাচান আলী : জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৮ আগস্ট। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। এই ব্যক্তিও হত্যা, লুটপাট, নির্যাতনসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত।

 

আজিজুর রহমান : জন্ম ১৯৭৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। বাড়ি খুলনা জেলায়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জাল নোট সরবরাহ, ব্যবসা ও তৈরির।

 

তরিকুল ইসলাম : জন্ম ১৯৮৬ সালের ২২ জুলাই। বাড়ি নওগাঁ জেলায়। তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ জাল নোট সরবরাহ, ব্যবসা ও তৈরির।

 

এ তালিকায় আরও আছেন- আবদুল জব্বার, অজয় বিশ্বাস, আবদুল জব্বার, হানিফ, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, মোহাম্মদ সবুজ ফকির, শফিক-উল, মোহাম্মদ মনির ভূঁইয়া, আমান উল্লাহ শফিক, যুদ্ধাপরাধী আবুল কালাম আজাদ, সাজ্জাদ হোসেন খান, জাহিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীর ওরফে ফেরদৌস, নাঈম খান ইকরাম, ইউসুফ, আবদুল আলিম শরিফ, নুরুল দীপু, আহমেদ মজনু, মোহাম্মদ ফজলুল আমিন জাভেদ, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, আরেক খুনি আবদুর রশিদ খন্দকার, খুনি শরিফুল হক ডালিম, খুনি এ এম রাশেদ চৌধুরী, মোসলেম উদ্দিন খান, আহমেদ শরিফুল হোসেন, নাজমুল আনসার, রউফ উদ্দিন, মোহাম্মদ আতাউর রহমান চৌধুরী, সালাহউদ্দিন মিন্টু, একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত মাওলানা মোহাম্মদ তাজউদ্দিন, গোলাম ফারুক অভি, হারুন শেখ, সুলতান সাজিদ, তৌফিক আলম, জাফর আহমেদ, আমিনুর রসুল, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, নবী হোসেন, তানভীর ইসলাম জয় ও জিসান আহমেদ।

সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com