রংপুরের বাজারে কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় অধিকাংশ সবজির দাম কমেছে। বিশেষ করে রোজার শুরুতে যে শসা ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে সেই শসা এখন খুচরা বাজারে ১৫-২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে সামান্য দাম বেড়েছে বেগুনের। এছাড়া মাছ, মাংস, তেল ও চালসহ অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রংপুর নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬০ টাকা, পাঁচ লিটার ৭৬০ এবং খোলা সয়াবিন গত সপ্তাহের মতোই ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগি ৫-১০ টাকা কমে খুচরা বাজারে ১৪০-১৫০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি গত সপ্তাহের মতো ২৬০-২৭০ এবং পাকিস্তানি লেয়ার ২৪০-২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি মুরগির দাম কমেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় ১০-২০ টাকা কমে আজ তা ৪৪০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া গরুর মাংসে তেমন কোনো হেরফের নেই। ৬৩০-৬৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮৫০-৯০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
আমতলা বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, বাজারে মুরগির আমদানি বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহের চেয়ে ৫-১০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে। তবে এ দাম স্থিতিশীল হবে না। ঈদের আগ মুহূর্তে দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে কেজিপ্রতি টমেটো আগের মতোই ২০-২৫ টাকা, গাজর ২৫ টাকা, করলা ৫৫-৬০ টাকা, উস্তে ৬০ টাকা, চিকন বেগুন গত সপ্তাহের মতোই ৩৫-৪০ টাকা, গোল বেগুন ১০-১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৫০-৬০ টাকা, শিম ২৫-৩০ টাকা, শসা ৩৫-৪০ টাকা থেকে কমে ১৫-২০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, লেবু প্রতিহালি ২০-২৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৭০-৮০ টাকা থেকে কমে ৪৫-৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ৩৫০ টাকা, লাউ প্রতিপিস ৪০-৪৫ টাকা, কাঁচকলা হালি ২০-২৫ টাকা, ঢেড়স ৩৫-৪০ টাকা, বরবটি ৪০-৪৫ টাকা, দুধকুষি ৪০-৫০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, সজনে ১০-২০ টাকা কমে ৪০-৫০ টাকা, প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া ১৫-২০ টাকা, সবধরনের শাক ১০ টাকা আঁটি এবং দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া চালকুমড়া আকারভেদে ৩৫-৪০ টাকা এবং ঝিঙ্গা গত সপ্তাহের তুলনায় ১০-১৫ টাকা কমে ৬০-৭০ টাকা, আদা ৭০-৮০ টাকা, রসুন ৫০-৬০ টাকা এবং পল্ট্রি মুরগির ডিমের হালি খুচরা বাজারে ৩২-৩৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে কার্ডিনাল আলু গত সপ্তাহের মতোই ১৪-১৫ টাকা এবং শিল আলু ২৫-২৬ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের কৃষক খায়রুল ইসলাম জানান, দেড় বিঘা জমিতে তিনি শসা আবাদ করেছেন। এখন ২০০ টাকা মণ দরে পাইকারি বাজারে শসা বিক্রি করতে হচ্ছে। তা না হলে ক্ষেতেই শসা পচে যাবে। সে হিসেবে প্রতি কেজি শসার দাম পড়ছে ৫ টাকা। এতে ভীষণ লোকসানের মুখে পড়ে এখন দিশেহারা কৃষক খায়রুল।
সিটি বাজারের সবজি বিক্রেতা মনজু মিয়া বলেন, রোজার শুরুতে বাজারে শসার আমদানি কম ছিল। তাই দাম ছিল বেশি। এখন ক্ষেত থেকে কৃষকরা শসা তুলছেন। বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই দাম কমে আসবে এটাই স্বাভাবিক।
এছাড়া খোলা চিনি ৮০ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ৮৫ টাকা, ছোলা ৮০ টাকা, মসুর ডাল মাঝারি ১০০ টাকা, চিকন মসুর ১৩০ টাকা, আটা প্যাকেট ৪০ টাকা ও খোলা ৩৬-৩৮ টাকা এবং ময়দা ৫৫-৬০ টাকা প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে চালের দামে তেমন একটা হেরফের নেই। আগের মতোই স্বর্ণা (মোটা) ৪৬-৪৮ টাকা, বিআর-২৯ তিন টাকা বেড়ে ৫৮ টাকা, বি-২৮ আগের মতোই ৫৮-৬০ টাকা, মিনিকেট ৬৮ টাকা এবং নাজিরশাইল ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায় সব ধরনের মাছ গত সপ্তাহের মতোই বিক্রি হচ্ছে। সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম