প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কৃষকের নিকট ভালো মানের বীজ সরবরাহ করে এবং কৃষির নতুন নতুন কৌশল প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের নিকট পৌঁছে দিতে হবে।
১১ ফেব্রুয়ারি ‘সিড কংগ্রেস- ২০২৩’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ বিপর্যয়, অন্যদিকে দেশের ক্রমহ্রাসমান জমি থেকে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কৃষির একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় টেকসই কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে সরকারি বীজ প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি বীজ প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে আসতে হবে। দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে। তাহলেই কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সিড এসোসিয়েশন কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘সিড কংগ্রেস- ২০২৩’ বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। এ উপলক্ষ্যে আমি বীজ শিল্প সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের মাধ্যমে ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ করে দেশের মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি ও কৃষকের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়ন এবং স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করতে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি কৃষি পেশার মর্যাদা ও গুরুত্ব বিবেচনা করে কৃষি কর্মকর্তাদের মর্যাদা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, কৃষি গবেষণা জোরদার করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট পুনর্গঠন করেন। এছাড়া তিনি অন্যান্য ফসলের গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ এবং উন্নয়ন বাজেটে কৃষিতে সর্বাধিক বরাদ্দসহ অনেক গণমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছিলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা কৃষি উন্নয়নে বীজকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেশে মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে ‘রাষ্ট্রপতি কৃষি পুরস্কার’ প্রবর্তন করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যা করার পর এদেশের কৃষির অগ্রযাত্রা থেমে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্যকে প্রাধান্য দিয়ে কৃষি প্রধান এ দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে কৃষিতে ভর্তুকি, প্রণোদনা প্রদান ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমাদের সরকার দেশের কৃষক ও কৃষি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে নিরলস কাজ করছে।
তিনি বলেন, উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকের লাভের কথা বিবেচনা করে সরকার কয়েক দফা সারের দামসহ কৃষি উপকরণের দাম কমিয়েছে। সেচের জন্য ডিজেলে ভর্তুকি ও গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার সাথে সাথে এ অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে চায়। এবারের সিড কংগ্রেস আমাদের এ ভিশন বাস্তবায়নে গতি সঞ্চার করবে বলে আমি মনে করি।
তিনি ‘সিড কংগ্রেস- ২০২৩’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
সূএ: বাসস।