দেশে ফের করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য সরকারকে দুষছেন বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন। তার মতে সরকারের অবহেলার কারণে চতুর্থবারের মতো করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, কয়েক মাস আগে চীনে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও সরকার তাতে কোনো গুরুত্ব দেয়নি। এখন আবার করোনা বৃদ্ধি পাচ্ছে আমাদের নেতৃবৃন্দ আক্রান্ত। এখানেও সরকারের ব্যর্থতা এবং অসাবধানতা।
আজ নয়াপটনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতৃবৃন্দের সুস্থতা ও ভয়াবহ বন্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি এই দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী আজকে একটি বানোয়াট মামলায় ফরমায়েশি রায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত। বর্তমানে প্রশাসনিক অর্ডারে সাময়িকভাবে মুক্ত। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। কিছুদিন আগে হাসপাতালে তার অস্ত্রোপ্রচার করা হয়েছে এখন তিনি অত্যন্ত খারাপ অবস্থার মধ্যে দিন পার করছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিএনপি মহাসচিবসহ বিভিন্ন নেতারা করোনাসহ অন্যান্য রোগে অসুস্থ। আমরা তাদের সুস্থতার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনার জন্য এখানে এসেছি।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমাদের নেত্রী আজ কেন অসুস্থ? কারণ তাকে নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছিল যেখানে কোনো মানুষ ছিল না। এমন একাকীত্ব অস্বাভাবিক পরিবেশে তাকে রাখা হয়েছিল। যে নেত্রী পায়ে হেঁটে গাড়িতে উঠে কারাগারে গিয়েছিলেন যখন তিনি সাময়িক মুক্তি হন তখন তিনি সম্পূর্ণ অসুস্থ। অর্থাৎ দেশনেত্রীকে কারাগারে রেখে তিলে তিলে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে।
‘তিনি এতটাই অসুস্থ তার চিকিৎসকরা বারবার বিদেশে চিকিৎসার করানোর জন্য বলেছেন। বাংলাদেশে সেই চিকিৎসা নেই। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন কিন্তু সরকার কোনো কর্ণপাত করেনি।-বলেন মোশাররফ।
বিএনপির অন্যতম এই নীতিনির্ধারক বলেন, আজকে বিএনপি নেতাকর্মীসহ সবার দাবি খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হোক। সরকারের তাকে পাঠানোর প্রয়োজন নেই। খালেদা জিয়া নিজেই চিকিৎসার জন্য যাবেন। কিন্তু তাকে সাময়িক মুক্তি দেওয়ার সময় যে শর্ত দেওয়া হয়েছে সেই শর্ত প্রত্যাহার করা হোক। সরকার সেই শর্ত প্রত্যাহার করবে না। তিলে তিলে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে চায়। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপি পরিবারকে দাবিয়ে রেখে সরকার ক্ষমতায় থাকতে চায়।
বন্যার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সিলেট বিভাগে আবার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পানিগুলো কোথা থেকে আসছে? আমাদের ওপারের দেশ (ভারত) থেকে পানিগুলো আসছে। ফারাক্কাসহ ৫৪টি বাঁধ দেওয়া রয়েছে। বর্ষাকালে যখন অতিবৃষ্টি হয় তখন তাদের (ভারত) স্বার্থে সবগুলো গেট একসঙ্গে খুলে দেওয়া হয়। আর এই পানি বাংলাদেশে চলে আসে। বাংলাদেশে শুষ্ক মৌসুমে পানি কম থাকার কারণে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ করে যখন পানি আসে তখন পানি সরার কোনো জায়গা পায় না। এ কারণেই বাংলাদেশ এতো বন্যা হচ্ছে। যখন আমাদের পানির প্রয়োজন নেই তখন আমাদের বন্যায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়। যখন পানির প্রয়োজন হয় তখন পানি না দেওয়ার কারণে নদীগুলো মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। আমাদের জীববৈচিত্র কৃষি দৃঢ়ভাবে বিপর্যস্ত এবং ভবিষ্যতে আরও বিপর্যস্ত।
সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে এমনটা হচ্ছে দাবি করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, এ কারণেই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না।
দোয়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু ও ঢাকা দক্ষিণ বিএনপি’র সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।