ওজন ২০০ টন, এমন বিশালদেহী প্রাণীর সন্ধান এর আগে মেলেনি

ছবি: সংগৃহীত

 

হাতি, গন্ডার, তিমি দেখলেই তাদের বিশাল দেহ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। স্বাভাবিকভাবেই এসব প্রাণীকে সবচেয়ে বেশি ওজনের মনে করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি ওজনের নতুন এক প্রাণীর সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে বর্তমানে পৃথিবীতে তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। অনেক আগেই তাদের বিলুপ্তি ঘটেছে।

নতুন প্রাণীটির বিচরণ স্থলে নয়, পানিতে ছিল। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন প্রাচীন এক বিশালদেহী তিমির জীবাশ্ম। দাঁড়িপাল্লায় যার ওজন ২০০ টনের কাছাকাছি। গবেষকরা বলছেন, শুধু পানিতে থাকা সবচেয়ে বড় নীল তিমিরাই এই নতুন ধরনের তিমির কাছাকাছি আসতে পারে।

নতুন প্রাণীটির  হাড়গুলো দক্ষিণ পেরুর মরুভূমিতে খনন করে পাওয়া গেছে। তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘পেরুসেটাস কলোসাস’। দেহাবশেষটি দেখে বোঝা যায়, এটি প্রায় ৩৯ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে বসবাস করত।

প্যালিওন্টোলজিস্ট ডা. মারিও আরবিনার নেতৃত্বে আবিষ্কার দলের একজন সহকর্মী ডা. এলি আমসন জানান, ‘জীবাশ্মগুলো আসলে ১৩ বছর আগে আবিষ্কৃত হয়েছিল। কিন্তু তাদের আকার এবং আকৃতির কারণে লিমায় (পেরুর রাজধানী) নিয়ে যেতে তিন বছর সময় লেগেছিল। সেখানে প্রাণীটির জীবাশ্মগুলো পরীক্ষা করা হয়েছে।’

সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী এই প্রাণীর ১৮টি হাড় উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাচীন এই তিমি ‘বেসিলোসরিড’ নামে পরিচিত। এদের রয়েছে ১৩টি কশেরুকা, চারটি পাঁজর এবং একটি নিতম্বের হাড়ের অংশ। খণ্ডিত অংশগুলো এবং তাদের বয়সের ওপর নির্ভর করে বিজ্ঞানীরা এখনো নানা ধরনের তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।

প্রাণীটির হাড়গুলো অত্যন্ত শক্ত। ‘অস্টিওস্ক্লেরোসিস’ নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়ার কারণে হাড়গুলো প্রচণ্ড শক্ত। এর ফলে হাড়ের মধ্যে অভ্যন্তরীণ গহ্বরগুলো ভরাট হয়ে যায়। হাড়গুলোও আকারে বেশ বড় ছিল। বাহ্যিক পৃষ্ঠে অর্থাৎ পিঠের দিকে অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়া অংশটিকে বলা হয় ‘প্যাকিওস্টোসিস।’ এটি তিমিটিকে অগভীর পানিতে ঘুরে বেড়াতে সাহায্য করত।

ধারণা করা হচ্ছে, পেরুসেটাসের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭-২০ মিটার হবে। তবে প্রাণীটির শুধু হাড়ের ওজনই ৫.৩ থেকে ৭.৬ টন। ফলে বাকি অঙ্গ, পেশি এবং ব্লাবার (ত্বকের নিচে ভাস্কুলারাইজড অ্যাডিপোজ টিস্যুর একটি পুরু স্তর) যোগ করে প্রাণীটির ওজন হতে পারে আনুমানিক ৮৫ টন থেকে ৩২০ টন।

এনএইচএম-এর সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীর তত্ত্বাবধায়ক রিচার্ড সাবিন বলেন, ‘আমরা যা বলতে চাই তা হলো পেরুসেটাস নীল তিমির মতোই একটি প্রাণী।’

নতুন আবিষ্কার নিয়ে তিনি বেশ রোমাঞ্চিত এবং লন্ডনে প্রদর্শনের জন্য ব্যবস্থা করতে চান তিনি। সূত্র : বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ডিজিএফআইয়ের নতুন ডিজি জাহাঙ্গীর আলম

» অপরাধী ও দুষ্টু লোকদের স্থান বিএনপিতে হবে না

» খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে না

» বাংলাদেশে তুর্কি বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান ড. ইউনূসের

» আব্দুর রাজ্জাক গ্রেফতার

» চাহিদার তুলনায় সরবরাহ না থাকায় ডিমের দাম বেড়েছে: উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

» তিন বিচারকের সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত পুনর্গঠন: আইন উপদেষ্টা

» সেপ্টেম্বরে মেট্রোরেলের দৈনিক আয় ১ কোটি ১২ লাখ টাকার বেশি

» নওগাঁর পৃথক স্থানে ট্রাক্টরের চাপায় দুইজনের মৃত্যু

» রিয়েলমি ১২-এর ব্যাপক চাহিদা, প্রি-অর্ডার ক্যাম্পেইনের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ওজন ২০০ টন, এমন বিশালদেহী প্রাণীর সন্ধান এর আগে মেলেনি

ছবি: সংগৃহীত

 

হাতি, গন্ডার, তিমি দেখলেই তাদের বিশাল দেহ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। স্বাভাবিকভাবেই এসব প্রাণীকে সবচেয়ে বেশি ওজনের মনে করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি ওজনের নতুন এক প্রাণীর সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে বর্তমানে পৃথিবীতে তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। অনেক আগেই তাদের বিলুপ্তি ঘটেছে।

নতুন প্রাণীটির বিচরণ স্থলে নয়, পানিতে ছিল। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন প্রাচীন এক বিশালদেহী তিমির জীবাশ্ম। দাঁড়িপাল্লায় যার ওজন ২০০ টনের কাছাকাছি। গবেষকরা বলছেন, শুধু পানিতে থাকা সবচেয়ে বড় নীল তিমিরাই এই নতুন ধরনের তিমির কাছাকাছি আসতে পারে।

নতুন প্রাণীটির  হাড়গুলো দক্ষিণ পেরুর মরুভূমিতে খনন করে পাওয়া গেছে। তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘পেরুসেটাস কলোসাস’। দেহাবশেষটি দেখে বোঝা যায়, এটি প্রায় ৩৯ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে বসবাস করত।

প্যালিওন্টোলজিস্ট ডা. মারিও আরবিনার নেতৃত্বে আবিষ্কার দলের একজন সহকর্মী ডা. এলি আমসন জানান, ‘জীবাশ্মগুলো আসলে ১৩ বছর আগে আবিষ্কৃত হয়েছিল। কিন্তু তাদের আকার এবং আকৃতির কারণে লিমায় (পেরুর রাজধানী) নিয়ে যেতে তিন বছর সময় লেগেছিল। সেখানে প্রাণীটির জীবাশ্মগুলো পরীক্ষা করা হয়েছে।’

সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী এই প্রাণীর ১৮টি হাড় উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাচীন এই তিমি ‘বেসিলোসরিড’ নামে পরিচিত। এদের রয়েছে ১৩টি কশেরুকা, চারটি পাঁজর এবং একটি নিতম্বের হাড়ের অংশ। খণ্ডিত অংশগুলো এবং তাদের বয়সের ওপর নির্ভর করে বিজ্ঞানীরা এখনো নানা ধরনের তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।

প্রাণীটির হাড়গুলো অত্যন্ত শক্ত। ‘অস্টিওস্ক্লেরোসিস’ নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়ার কারণে হাড়গুলো প্রচণ্ড শক্ত। এর ফলে হাড়ের মধ্যে অভ্যন্তরীণ গহ্বরগুলো ভরাট হয়ে যায়। হাড়গুলোও আকারে বেশ বড় ছিল। বাহ্যিক পৃষ্ঠে অর্থাৎ পিঠের দিকে অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়া অংশটিকে বলা হয় ‘প্যাকিওস্টোসিস।’ এটি তিমিটিকে অগভীর পানিতে ঘুরে বেড়াতে সাহায্য করত।

ধারণা করা হচ্ছে, পেরুসেটাসের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭-২০ মিটার হবে। তবে প্রাণীটির শুধু হাড়ের ওজনই ৫.৩ থেকে ৭.৬ টন। ফলে বাকি অঙ্গ, পেশি এবং ব্লাবার (ত্বকের নিচে ভাস্কুলারাইজড অ্যাডিপোজ টিস্যুর একটি পুরু স্তর) যোগ করে প্রাণীটির ওজন হতে পারে আনুমানিক ৮৫ টন থেকে ৩২০ টন।

এনএইচএম-এর সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীর তত্ত্বাবধায়ক রিচার্ড সাবিন বলেন, ‘আমরা যা বলতে চাই তা হলো পেরুসেটাস নীল তিমির মতোই একটি প্রাণী।’

নতুন আবিষ্কার নিয়ে তিনি বেশ রোমাঞ্চিত এবং লন্ডনে প্রদর্শনের জন্য ব্যবস্থা করতে চান তিনি। সূত্র : বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com