যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে অনলাইনভিত্তিক একটি এমএলএম কোম্পানির পরিচালক মো. নাজমুল ইসলামকে (৩২) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
ওই কোম্পানিটির নাম ‘ভিশন-২০২৫ ডিজিটাল আইটি ওয়ার্ল্ড লিমিটেড’। এ প্রতিষ্ঠানটি ১১ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতারণা করে ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
নাজমুলকে গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল, তিনটি অটোসিল, সাতটি চেকবই, দুটি চুক্তিপত্র, একটি ট্রেড লাইসেন্স, দুটি টিন সার্টিফিকেটসহ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন নথিপত্র জব্দ করা হয়।
সোমবার রাতে র্যাব-৩-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও স্টাফ অফিসার (অপস্ ও ইন্ট শাখা) বীণা রানী দাস এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, একটি প্রতারকচক্র দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ‘ভিশন-২০২৫ ডিজিটাল আইটি ওয়ার্ল্ড লিমিটেড’ নামে ভুয়া এমএলএম কোম্পানি খুলে সাধারণ মানুষকে প্রলোভনে ফেলে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার বিকেলে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ কোম্পানির পরিচালক নাজমুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
‘গ্রেফতার নাজমুল গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদেরকে আর্থিকভাবে লাভবান করার প্রলোভন দেখাতেন। তিনি প্রচার করতেন- ১০ লাখ টাকা জমা দিলে লভ্যাংশ হিসেবে দুই মাস অন্তর তিন লাখ ৩৩ হাজার টাকা করে ছয় মাসে সর্বমোট ২০ লাখ টাকা দেওয়া হবে’ বলেও উল্লেখ করেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস আরও বলেন, ‘নাজমুলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, এ চক্রটি একটি ওয়েবসাইট খুলে সেখানে আইডি খোলার জন্য গ্রাহকদের বিভিন্ন লোভনীয় অফার দিতো। এমএলএম ব্যবসার অনুকরণে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে তাদেরকে গ্রাহক বানালে কমিশন পাওয়া যাবে এবং কিছু গ্রোসারি পণ্য বিক্রি করে দিলে কোম্পানি থেকে কমিশন পাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে তাদের লক্ষাধিক রেজিস্টার্ড গ্রাহক রয়েছেন এবং প্রায় ১১ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছেন। গ্রাহকরা তিন থেকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের কোম্পানির সদস্য হতে পারেন। বর্তমানে গ্রাহকদের প্রায় ১০ কোটি টাকা তাদের কাছে আটকা আছে। গত বছরের এপ্রিলে মৌচাক এলাকায় তাদের এ ভুয়া কোম্পানির অফিস খোলা হয়। তবে অক্টোবরে স্থায়ীভাবে অফিস বন্ধ করে দিয়ে তারা পালিয়ে যান। গ্রাহকরা বিভিন্নভাবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা টালবাহানা করতে থাকেন। এমনকি তারা গ্রাহকদের পাওনা টাকা দেবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন এবং বাড়াবাড়ি করলে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও জীবননাশের হুমকি দেওয়াও হয়।