এক বছরের ইজারা নিয়ে দেড়যুগ দখল

এক বছরের জন্য জায়গা ইজারা নিয়েছিলেন তারা। এরপর আর ইজারা নবায়ন করেননি। দেড় যুগ ধরে চলছিল দখলদারিত্ব। সিলেট জেলা পরিষদের জায়গার ওপর রীতিমতো দোকানপাট ও মার্কেট তৈরি করে কেউ আদায় করছিলেন ভাড়া। কেউ নিজেই পরিচালনা করছিলেন ব্যবসা। অবশেষে সে দখলদারিত্বের অবসান ঘটেছে। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে প্রায় ২০ কোটি টাকার জায়গা দখলমুক্ত করেছে জেলা পরিষদ। উচ্ছেদ করা হয়েছে শতাধিক স্থাপনা। দখলমুক্ত করা জায়গায় নিজস্ব বহুতল মার্কেট করার পরিকল্পনা নিয়েছে জেলা পরিষদ।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেড় যুগ আগে সিলেট সদর উপজেলার বাদাঘাট এলাকায় পাকা রাস্তার পাশে চার একর জায়গা ইজারা নেন বিভিন্ন ব্যক্তি। এক বছর পর ওই জায়গা জেলা পরিষদকে বুঝিয়ে দেওয়া অথবা ইজারা নবায়ন করা নিয়ম থাকলেও কেউই সেটা করেননি। পাকা ও আধা পাকা স্থাপনা তৈরি করে কেউ ভাড়া দেন স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। আবার কেউ নিজেরা ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন দেড় যুগ ধরে। বর্তমানে ওই স্থানে প্রতি ডেসিমেল জায়গার মূল্য ৫ লাখ টাকার ওপরে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সে হিসাবে দখল করা জায়গার মূল্য ২০ কোটি টাকার ওপরে। মূল্যবান এই জায়গার ওপর বিভিন্ন ব্যক্তি গড়ে তুলেন ১৩৭টি স্থাপনা।

 

এদিকে, জেলা পরিষদও তাদের মালিকানাধীন জায়গার কথা ভুলে গিয়েছিল! দখলদারদের উচ্ছেদ করে জায়গা উদ্ধারে কখনো উদ্যোগ নেয়নি জেলা পরিষদ। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর পরিষদের দখল করা জায়গা খুঁজে বের করে উদ্ধারের উদ্যোগ নেন। এর অংশ হিসেবে তিনি বাদাঘাট এলাকার রাজনীতিবীদ, ব্যবসায়ী ও বিশিষ্টজনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর দখলদারদের নোটিস দেওয়া হলে অনেকেই তাদের মালপত্র সরিয়ে নেন। দখলদার হিসেবে থেকেও যান অনেকে। এই অবস্থায় গতকাল সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযানে নামে জেলা পরিষদ। বুলডোজার লাগিয়ে সকাল ৯টা থেকে দিনভর চলে উচ্ছেদ অভিযান। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় অবৈধ স্থাপনা।

 

সিলেট জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ পলাশ জানান, ‘একসনা ইজারা নিয়ে অনেকে বিধি লঙ্ঘন করে স্থায়ীভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। ওই জায়গার ওপর ১৩৭টি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল। গতকাল রাস্তার এক পাশের স্থাপনা উচ্ছেদ করে জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছে। এই জায়গায় জেলা পরিষদ একটি মার্কেট তৈরি করবে। রাস্তার অন্য পাশের স্থাপনাগুলোও উচ্ছেদ করা হবে।

 

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান জানান, দীর্ঘদিন ধরে জেলা পরিষদের মূল্যবান জায়গা দখল করে সেখানে অনেকে স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করছিলেন। জেলা পরিষদের নজরে আসার পর স্থাপনা উচ্ছেদ করে জায়গা দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাদাঘাটের মতো সিলেটের বিভিন্ন স্থানে জেলা পরিষদের মালিকানাধীন অনেক জায়গা দখল হয়ে আছে। পর্যায়ক্রমে সব জায়গা দখলমুক্ত করা হবে।   সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আমাদের সবাইকে সহনশীল হতে হবে : রিজভী

» সাংবাদিকদের সত্য উদ্ঘাটন ও প্রকাশে নির্ভীক হতে হবে: কাদের গনি চৌধুরী

» জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সবাইকে কাজ করার আহ্বান তারেক রহমানের

» ঐকমত্য কমিশনের ১১৩ প্রস্তাবের সঙ্গে একমত এনসিপি

» প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে চুক্তি নয়, সমঝোতা স্মারক সই হবে

» ‘দারিদ্র্য নিরসনে জাকাত সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা’

» জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মানে সেনাবাহিনীর ইফতার

» নতুন বাংলাদেশ গড়তে সঠিক তথ্য জানতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

» বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় জামালপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের দোয়া মাহফিল

» ডিসি এসপি পরিচয়ে মোবাইল কোর্ট প্রতারক মনির হোসেন জুইস পুলিশের হাতে আটক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

এক বছরের ইজারা নিয়ে দেড়যুগ দখল

এক বছরের জন্য জায়গা ইজারা নিয়েছিলেন তারা। এরপর আর ইজারা নবায়ন করেননি। দেড় যুগ ধরে চলছিল দখলদারিত্ব। সিলেট জেলা পরিষদের জায়গার ওপর রীতিমতো দোকানপাট ও মার্কেট তৈরি করে কেউ আদায় করছিলেন ভাড়া। কেউ নিজেই পরিচালনা করছিলেন ব্যবসা। অবশেষে সে দখলদারিত্বের অবসান ঘটেছে। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে প্রায় ২০ কোটি টাকার জায়গা দখলমুক্ত করেছে জেলা পরিষদ। উচ্ছেদ করা হয়েছে শতাধিক স্থাপনা। দখলমুক্ত করা জায়গায় নিজস্ব বহুতল মার্কেট করার পরিকল্পনা নিয়েছে জেলা পরিষদ।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেড় যুগ আগে সিলেট সদর উপজেলার বাদাঘাট এলাকায় পাকা রাস্তার পাশে চার একর জায়গা ইজারা নেন বিভিন্ন ব্যক্তি। এক বছর পর ওই জায়গা জেলা পরিষদকে বুঝিয়ে দেওয়া অথবা ইজারা নবায়ন করা নিয়ম থাকলেও কেউই সেটা করেননি। পাকা ও আধা পাকা স্থাপনা তৈরি করে কেউ ভাড়া দেন স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। আবার কেউ নিজেরা ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন দেড় যুগ ধরে। বর্তমানে ওই স্থানে প্রতি ডেসিমেল জায়গার মূল্য ৫ লাখ টাকার ওপরে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সে হিসাবে দখল করা জায়গার মূল্য ২০ কোটি টাকার ওপরে। মূল্যবান এই জায়গার ওপর বিভিন্ন ব্যক্তি গড়ে তুলেন ১৩৭টি স্থাপনা।

 

এদিকে, জেলা পরিষদও তাদের মালিকানাধীন জায়গার কথা ভুলে গিয়েছিল! দখলদারদের উচ্ছেদ করে জায়গা উদ্ধারে কখনো উদ্যোগ নেয়নি জেলা পরিষদ। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর পরিষদের দখল করা জায়গা খুঁজে বের করে উদ্ধারের উদ্যোগ নেন। এর অংশ হিসেবে তিনি বাদাঘাট এলাকার রাজনীতিবীদ, ব্যবসায়ী ও বিশিষ্টজনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর দখলদারদের নোটিস দেওয়া হলে অনেকেই তাদের মালপত্র সরিয়ে নেন। দখলদার হিসেবে থেকেও যান অনেকে। এই অবস্থায় গতকাল সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযানে নামে জেলা পরিষদ। বুলডোজার লাগিয়ে সকাল ৯টা থেকে দিনভর চলে উচ্ছেদ অভিযান। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় অবৈধ স্থাপনা।

 

সিলেট জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ পলাশ জানান, ‘একসনা ইজারা নিয়ে অনেকে বিধি লঙ্ঘন করে স্থায়ীভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। ওই জায়গার ওপর ১৩৭টি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল। গতকাল রাস্তার এক পাশের স্থাপনা উচ্ছেদ করে জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছে। এই জায়গায় জেলা পরিষদ একটি মার্কেট তৈরি করবে। রাস্তার অন্য পাশের স্থাপনাগুলোও উচ্ছেদ করা হবে।

 

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান জানান, দীর্ঘদিন ধরে জেলা পরিষদের মূল্যবান জায়গা দখল করে সেখানে অনেকে স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করছিলেন। জেলা পরিষদের নজরে আসার পর স্থাপনা উচ্ছেদ করে জায়গা দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাদাঘাটের মতো সিলেটের বিভিন্ন স্থানে জেলা পরিষদের মালিকানাধীন অনেক জায়গা দখল হয়ে আছে। পর্যায়ক্রমে সব জায়গা দখলমুক্ত করা হবে।   সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com