আয়কর রিটার্ন দাখিল না করলে কী হবে?

আয়কর কর্তৃপক্ষের কাছে একজন করদাতার বার্ষিক আয়, ব্যয় ও সম্পদের তথ্য নির্ধারিত ফরমে উপস্থাপন করার মাধ্যম হচ্ছে আয়কর রিটার্ন। করযোগ্য আয় থাকলে কিংবা সরকারি বিভিন্ন সেবা পেতে রিটার্ন দাখিল না করার বিকল্প নেই।

 

আয়কর আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে বিলম্ব সুদ ও জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে করদাতাকে। শুধু জরিমানা নয়, আয়কর না দেওয়ার কারণে অনেক সময় করদাতাকে কঠোর সাজার মুখোমুখি হতে পারে। যেমনটা হয়েছিল করদাতা আহসান আলী নামের এক করদাতার সঙ্গে। কর ফাঁকি দিতে পুরাতন টিআইএন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে বছরের বেশি জেল খাটতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত জরিমানা ও আসল করসহ প্রায় ৮ লাখ টাকার মতো জরিমানা দিয়ে জেল থেকে বের হতে হয়েছে।

এর পাশাপাশি অন্তত যে ৪০ ধরনের সেবায় রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সেসব সেবা হতে বঞ্চিত হতে হবে করদাতাকে। যার মধ্যে রয়েছে-গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাবে না কিংবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া, বেতন-ভাতা প্রাপ্তিতে অসুবিধা, বিভিন্ন লাইসেন্সের রেজিস্ট্রেশন ও নবায়ন না হওয়া এবং ব্যাংকে ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঞ্চয়ের ওপর অতিরিক্ত কর দেওয়া ইত্যাদি।

 

যে কারণে ৩০ নভেম্বরের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার কথা বলছেন এনবিআরের আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা। আয়কর নির্দেশিকা অনুসারে ই-টিআইএন থাকা সত্ত্বেও রিটার্ন দাখিল না করলে যেসব সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা হলো-

 

 

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে তার ওপর আয়কর অধ্যাদেশের ১২৪ ধারা অনুযায়ী জরিমানা, ৭৩ ধারা অনুযায়ী সরল সুদ এবং ৭৩এ ধারা অনুযায়ী বিলম্ব সুদ আরোপযোগ্য হবে।

 

যে ক্ষেত্রে করদাতা রিটার্ন দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করে, উপ-কর কমিশনারের মাধ্যমে মঞ্জুরকৃত বর্ধিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করবেন, সেক্ষেত্রে করদাতার ওপর জরিমানা আরোপিত হবে না, তবে বিলম্ব সুদ আরোপিত হবে।

 

আর চলতি অর্থবছরের আয়কর নির্দেশিকা অনুযায়ী যেসব সেবায় রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে তা হলো-

• কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ লাখ টাকার বেশি টাকা ঋণ নিতে গেলে

• কোনো কোম্পানির পরিচালক বা স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার হতে হলে

• আমদানি নিবন্ধন সনদ ও রপ্তানি নিবন্ধন সনদ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন করতে গেলে

• সমবায় সমিতির নিবন্ধন পেতে হলে

• সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ার হতে এবং লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন করতে

• সিটি করপোরেশন, জেলা সদরের পৌরসভা ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় ১০ লাখের বেশি টাকার জমি, বিল্ডিং বা অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রয় বা হস্তান্তর বা বায়না নামা বা আমমোক্তারনামা নিবন্ধন করতে

• ক্রেডিট কার্ড প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট, প্রকৌশলী, স্থপতি অথবা সার্ভেয়ার হিসেবে বা সমজাতীয় পেশাজীবী হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হিসেবে লাইসেন্স প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• ট্রেড বা পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• ড্রাগ লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র প্রাপ্তি ও নবায়নে

• যেকোনো এলাকায় গ্যাসের বাণিজ্যিক ও শিল্প সংযোগ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় আবাসিক গ্যাস সংযোগ প্রাপ্তি এবং বহাল রাখতে

• লঞ্চ, স্টিমার, মাছ ধরার ট্রলার, কার্গো, কোস্টার, কার্গো ও ডাম্ব বার্জ্যসহ যেকোনো প্রকারের ভাড়ায় চালিত নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেট প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• পরিবেশ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে ইট উৎপাদনের অনুমতি প্রাপ্তি ও নবায়নে

• সিটি করপোরেশন, জেলা সদর বা পৌরসভায় অবস্থিত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিশু বা পোষ্য ভর্তিতে

• সিটি করপোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি বা বহাল রাখতে

• ২০ কোম্পানির এজেন্সি বা ডিস্ট্রিবিউটরশিপ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• আমদানির উদ্দেশ্যে ঋণপত্র খোলায়

• পাঁচ লাখের বেশি টাকার পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়

• দশ লাখের বেশি টাকার ক্রেডিট ব্যালেন্স সম্পন্ন ব্যাংক হিসাব খোলা ও বহাল রাখতে

• পাঁচ লাখের বেশি টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে

• পৌরসভা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন বা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে

• মোটরযান, স্পেস/স্থান, বাসস্থান অথবা অন্যান্য সম্পদ সরবরাহের মাধ্যমে শেয়ারড ইকোনমিক অ্যাক্টিভিটিজে অংশ নিতে

• উৎপাদন কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনা বা প্রশাসনিক বা তত্ত্বাবধানকারী অবস্থানে কর্মরত ব্যক্তির বেতন-ভাতাদি প্রাপ্তিতে

 

• সরকার অথবা সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, ইউনিটের বা প্রচলিত কোনো আইন, আদেশ বা দলিলের মাধ্যমে গঠিত কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, ইউনিটের কর্মচারীর ১৬ হাজার টাকা বা তদূর্ধ্ব পরিমাণ মূল বেতন প্রাপ্তিতে

 

• মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেক্ট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে

 

• অ্যাডভাইজরি বা কনসালটেন্সি সার্ভিস, ক্যাটারিং সার্ভিস, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস, জনবল সরবরাহ ও নিরাপত্তা সরবরাহ সেবা বাবদ নিবাসী কর্তৃক কোনো কোম্পানি থেকে অর্থ প্রাপ্তিতে

 

• মাসিক পেমেন্ট অর্ডার বা এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে মাসিক ১৬ হাজার টাকার বেশি কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে

 

• বিমা কোম্পানির এজেন্সি সার্টিফিকেট নিবন্ধন বা নবায়নে

 

• দ্বি-চক্র বা ত্রি-চক্র মোটরযান ব্যতীত অন্যান্য মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নকালে

 

• এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোতে নিবন্ধিত এনজিওতে বা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটি থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থায় বিদেশি অনুদান ছাড়ে

 

• বাংলাদেশে অবস্থিত ভোক্তাদের নিকট ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পণ্য বা সেবা বিক্রয়ে

 

• কোম্পানি আইন ও সোসাইটিজ রেজিস্ট্রেশনের অধীন নিবন্ধিত কোনো ক্লাবের সদস্যপদ লাভের আবেদনের ক্ষেত্রে

 

• পণ্য সরবরাহ, চুক্তি সম্পাদন বা সেবা সরবরাহের উদ্দেশ্যে নিবাসী কর্তৃক টেন্ডার ডকুমেন্টস দাখিলকালে

 

• পণ্য আমদানি বা রপ্তানির উদ্দেশ্যে বিল অব এন্ট্রি দাখিলকালে

 

এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), চিটাগাং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) বা সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমোদনে ভবন নির্মাণের নকশা দাখিলকালে রিটার্ন দাখিলের প্রাপ্তি স্বীকার জমা দিতে হবে। না  হলে ওইসব সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হবে করদাতাকে।

 

চলতি অর্থবছরের সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি-করদাতার আয় যদি বছরে তিন লাখ টাকার বেশি হয়, তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি, নারী ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের করদাতার আয় যদি বছরে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি হয়, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় যদি বছরে চার লাখ ৭৫ হাজার টাকার বেশি হয় এবং প্রতিবন্ধী করদাতার আয় সাড়ে চার লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হলে তার রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জুলাই-আগস্টের চেতনা হারিয়ে যাচ্ছে: উপদেষ্টা নাহিদ

» পূজায় অপ্রীতিকর ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: আইজিপি

» সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ : ইশরাক

» ধর্মের উপর আঘাত সহ্য করা হবে না

» কুচক্রী মহলের হীন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে : র‍্যাব মহাপরিচালক

» গণহত্যার বিচার শুরু হলে অনেক দ্বিধা-প্রশ্ন দূর হবে : আসিফ নজরুল

» ১৩ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

» মঙ্গলবার ফল প্রকাশ যেভাবে জানবেন এইচএসসি ও সমমানের রেজাল্ট

» জামালপুরে সেফটিক ট্যাংক থেকে নৈশ্যপ্রহরীর মরদেহ উদ্ধার

» এভারকেয়ার হসপিটালে কালেকশন সার্ভিস দেবে ব্র্যাক ব্যাংক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আয়কর রিটার্ন দাখিল না করলে কী হবে?

আয়কর কর্তৃপক্ষের কাছে একজন করদাতার বার্ষিক আয়, ব্যয় ও সম্পদের তথ্য নির্ধারিত ফরমে উপস্থাপন করার মাধ্যম হচ্ছে আয়কর রিটার্ন। করযোগ্য আয় থাকলে কিংবা সরকারি বিভিন্ন সেবা পেতে রিটার্ন দাখিল না করার বিকল্প নেই।

 

আয়কর আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে বিলম্ব সুদ ও জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে করদাতাকে। শুধু জরিমানা নয়, আয়কর না দেওয়ার কারণে অনেক সময় করদাতাকে কঠোর সাজার মুখোমুখি হতে পারে। যেমনটা হয়েছিল করদাতা আহসান আলী নামের এক করদাতার সঙ্গে। কর ফাঁকি দিতে পুরাতন টিআইএন ও সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে বছরের বেশি জেল খাটতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত জরিমানা ও আসল করসহ প্রায় ৮ লাখ টাকার মতো জরিমানা দিয়ে জেল থেকে বের হতে হয়েছে।

এর পাশাপাশি অন্তত যে ৪০ ধরনের সেবায় রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সেসব সেবা হতে বঞ্চিত হতে হবে করদাতাকে। যার মধ্যে রয়েছে-গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাবে না কিংবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া, বেতন-ভাতা প্রাপ্তিতে অসুবিধা, বিভিন্ন লাইসেন্সের রেজিস্ট্রেশন ও নবায়ন না হওয়া এবং ব্যাংকে ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঞ্চয়ের ওপর অতিরিক্ত কর দেওয়া ইত্যাদি।

 

যে কারণে ৩০ নভেম্বরের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার কথা বলছেন এনবিআরের আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা। আয়কর নির্দেশিকা অনুসারে ই-টিআইএন থাকা সত্ত্বেও রিটার্ন দাখিল না করলে যেসব সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা হলো-

 

 

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে তার ওপর আয়কর অধ্যাদেশের ১২৪ ধারা অনুযায়ী জরিমানা, ৭৩ ধারা অনুযায়ী সরল সুদ এবং ৭৩এ ধারা অনুযায়ী বিলম্ব সুদ আরোপযোগ্য হবে।

 

যে ক্ষেত্রে করদাতা রিটার্ন দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করে, উপ-কর কমিশনারের মাধ্যমে মঞ্জুরকৃত বর্ধিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করবেন, সেক্ষেত্রে করদাতার ওপর জরিমানা আরোপিত হবে না, তবে বিলম্ব সুদ আরোপিত হবে।

 

আর চলতি অর্থবছরের আয়কর নির্দেশিকা অনুযায়ী যেসব সেবায় রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে তা হলো-

• কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ লাখ টাকার বেশি টাকা ঋণ নিতে গেলে

• কোনো কোম্পানির পরিচালক বা স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার হতে হলে

• আমদানি নিবন্ধন সনদ ও রপ্তানি নিবন্ধন সনদ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন করতে গেলে

• সমবায় সমিতির নিবন্ধন পেতে হলে

• সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ার হতে এবং লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন করতে

• সিটি করপোরেশন, জেলা সদরের পৌরসভা ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় ১০ লাখের বেশি টাকার জমি, বিল্ডিং বা অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রয় বা হস্তান্তর বা বায়না নামা বা আমমোক্তারনামা নিবন্ধন করতে

• ক্রেডিট কার্ড প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট, প্রকৌশলী, স্থপতি অথবা সার্ভেয়ার হিসেবে বা সমজাতীয় পেশাজীবী হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• নিকাহ্ রেজিস্ট্রার হিসেবে লাইসেন্স প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• ট্রেড বা পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• ড্রাগ লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র প্রাপ্তি ও নবায়নে

• যেকোনো এলাকায় গ্যাসের বাণিজ্যিক ও শিল্প সংযোগ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় আবাসিক গ্যাস সংযোগ প্রাপ্তি এবং বহাল রাখতে

• লঞ্চ, স্টিমার, মাছ ধরার ট্রলার, কার্গো, কোস্টার, কার্গো ও ডাম্ব বার্জ্যসহ যেকোনো প্রকারের ভাড়ায় চালিত নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেট প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• পরিবেশ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে ইট উৎপাদনের অনুমতি প্রাপ্তি ও নবায়নে

• সিটি করপোরেশন, জেলা সদর বা পৌরসভায় অবস্থিত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিশু বা পোষ্য ভর্তিতে

• সিটি করপোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি বা বহাল রাখতে

• ২০ কোম্পানির এজেন্সি বা ডিস্ট্রিবিউটরশিপ প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রাপ্তি ও বহাল রাখতে

• আমদানির উদ্দেশ্যে ঋণপত্র খোলায়

• পাঁচ লাখের বেশি টাকার পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়

• দশ লাখের বেশি টাকার ক্রেডিট ব্যালেন্স সম্পন্ন ব্যাংক হিসাব খোলা ও বহাল রাখতে

• পাঁচ লাখের বেশি টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে

• পৌরসভা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন বা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে

• মোটরযান, স্পেস/স্থান, বাসস্থান অথবা অন্যান্য সম্পদ সরবরাহের মাধ্যমে শেয়ারড ইকোনমিক অ্যাক্টিভিটিজে অংশ নিতে

• উৎপাদন কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনা বা প্রশাসনিক বা তত্ত্বাবধানকারী অবস্থানে কর্মরত ব্যক্তির বেতন-ভাতাদি প্রাপ্তিতে

 

• সরকার অথবা সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, ইউনিটের বা প্রচলিত কোনো আইন, আদেশ বা দলিলের মাধ্যমে গঠিত কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, ইউনিটের কর্মচারীর ১৬ হাজার টাকা বা তদূর্ধ্ব পরিমাণ মূল বেতন প্রাপ্তিতে

 

• মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেক্ট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে

 

• অ্যাডভাইজরি বা কনসালটেন্সি সার্ভিস, ক্যাটারিং সার্ভিস, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস, জনবল সরবরাহ ও নিরাপত্তা সরবরাহ সেবা বাবদ নিবাসী কর্তৃক কোনো কোম্পানি থেকে অর্থ প্রাপ্তিতে

 

• মাসিক পেমেন্ট অর্ডার বা এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে মাসিক ১৬ হাজার টাকার বেশি কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে

 

• বিমা কোম্পানির এজেন্সি সার্টিফিকেট নিবন্ধন বা নবায়নে

 

• দ্বি-চক্র বা ত্রি-চক্র মোটরযান ব্যতীত অন্যান্য মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নকালে

 

• এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোতে নিবন্ধিত এনজিওতে বা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটি থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থায় বিদেশি অনুদান ছাড়ে

 

• বাংলাদেশে অবস্থিত ভোক্তাদের নিকট ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পণ্য বা সেবা বিক্রয়ে

 

• কোম্পানি আইন ও সোসাইটিজ রেজিস্ট্রেশনের অধীন নিবন্ধিত কোনো ক্লাবের সদস্যপদ লাভের আবেদনের ক্ষেত্রে

 

• পণ্য সরবরাহ, চুক্তি সম্পাদন বা সেবা সরবরাহের উদ্দেশ্যে নিবাসী কর্তৃক টেন্ডার ডকুমেন্টস দাখিলকালে

 

• পণ্য আমদানি বা রপ্তানির উদ্দেশ্যে বিল অব এন্ট্রি দাখিলকালে

 

এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), চিটাগাং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ), রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) বা সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমোদনে ভবন নির্মাণের নকশা দাখিলকালে রিটার্ন দাখিলের প্রাপ্তি স্বীকার জমা দিতে হবে। না  হলে ওইসব সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হবে করদাতাকে।

 

চলতি অর্থবছরের সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি-করদাতার আয় যদি বছরে তিন লাখ টাকার বেশি হয়, তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি, নারী ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের করদাতার আয় যদি বছরে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি হয়, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় যদি বছরে চার লাখ ৭৫ হাজার টাকার বেশি হয় এবং প্রতিবন্ধী করদাতার আয় সাড়ে চার লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হলে তার রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com