অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে ‘মাতৃদুগ্ধ’, যেসব ক্ষতি হচ্ছে শিশুর

অনলাইনে আর সব পণ্যের মতো মাতৃদুগ্ধও কেনা-বেচা বাড়ছে। মাতৃদুগ্ধের বোতল ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে অর্ডারের পরক্ষণেই। এ ব্যবসা শুরু হয়েছে বহু দেশে।

 

কিন্তু এতে যে শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে, সে সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে দিলেন বিজ্ঞানীরা। জানালেন, অর্থের বিনিময়ে খুব সহজে মিলছে মাতৃদুগ্ধ। কেনা হচ্ছে শিশুদের জন্য। আর এতেই সর্বনাশ ডেকে আনা হচ্ছে। কারণ, অনলাইনে বিক্রি হওয়া মাতৃদুগ্ধের বোতলে থাকছে নানা ধরনের অপকারী ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক। শিশুদের পক্ষে ক্ষতিকর নানা ধরনের রাসায়নিক, ওষুধ। এমনকি, এডস ভাইরাসও। থাকছে সিফিলিস ও হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসও।

বডিবিল্ডারদের জন্য অনলাইনে মাতৃদুগ্ধ বিক্রি করে ব্রিটেনে এক নারী মাসে ১০ হাজার পাউন্ড রোজগার করছেন। সম্প্রতি এমন খবর সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার পরেই এ ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এর বিপদ-আপদ সম্পর্কে জানাতে উদ্যোগী হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

 

কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সারা স্টিলে বলেছেন, ‘গোড়ার দিকে এইভাবে অনলাইনে মাতৃদুগ্ধ বিক্রির বিজ্ঞাপনে নিচে খুব ছোট আকারে হলেও এর ব্যবহারের বিপদ-আপদ সম্পর্কেও বিধিসম্মত সতর্কীকরণ করা হতো। এখন সেই সবও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে, যারা অনলাইনে এই মাতৃদুগ্ধ কিনছেন তারা জানতে পারছেন না, এগুলো সদ্যোজাতের পক্ষে কতোটা ক্ষতিকর।

 

কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, অনলাইনে কার বিক্রীত মাতৃদুগ্ধ কার কাছ থেকে সংগৃহিত হচ্ছে, তা জানার কোনো উপায় নেই। যার স্তন্যদুগ্ধ কেনা হচ্ছে তার শরীরে কোন কোন রোগ রয়েছে তা জানা সম্ভব হচ্ছে না। আর এটিই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে যাদের জন্য মাতৃদুগ্ধ কেনা হচ্ছে সেই সদ্যোজাতদের পক্ষে।

 

বিজ্ঞানীরা এও জানিয়েছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অনলাইনে বিক্রি হওয়া মাতৃদুগ্ধের কাঙ্ক্ষিত গুণমান বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা থাকছে না। তার ফলে, সেই মাতৃদুগ্ধ অবাঞ্ছিত ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়ায় ভরে যাচ্ছে।

 

 

ব্রিটেনসহ কয়েকটি দেশে মাতৃদুগ্ধ বিনামূল্যে দেওয়ার ব্যাঙ্ক রয়েছে। কিন্তু সেখানে তা দেওয়ার আগে নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে যেমনটা হয়।

 

এই সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই বলে অনলাইনে বিক্রি হওয়া মাতৃদুগ্ধ শিশুদের পক্ষে খুব বিপজ্জনক হয়ে উঠছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। অনলাইনে বিক্রি হওয়া মাতৃদুগ্ধে সাইটোমেগালোভাইরাস অথবা সিএমভি-ও থাকছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বিড়ালের দেহে থাকা এই ভাইরাস সদ্যোজাতদের পক্ষে খুবই বিপজ্জনক। তাদের দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জন্মের পর থেকেই দুর্বল করে দেয়। তার ফলে, জন্মের ছমাসের মধ্যে বা তার সামান্য পরেই নানা ধরনের জটিল রোগের শিকার হয়ে পড়ছে শিশুরা। এই মাতৃদুগ্ধে থাকছে গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাক্টেরিয়াও। যা শিশুদের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব ক্ষতিকর।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জঙ্গিবাদের সন্দেহে বাংলাদেশি নাগরিকদের তদন্তে সহযোগিতা করবে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ

» এবার মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখলেন সাকিব

» মিটফোর্ডে ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় ৪জন গ্রেফতার

» ভাতিজার ছুরিকাঘাতে চাচা নিহত

» সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

» ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এক ব্যক্তিকে পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে হত্যা

» কখনো বিবর্তন

» সন্ত্রাস দমনে সরকারকে সহযোগিতায় সর্বদা প্রস্তুত বিএনপি : মাহদী আমিন

» সিরিয়ার বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে আগুন ধরিয়ে দিল ইসরায়েলি বাহিনী

» ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে ‘মাতৃদুগ্ধ’, যেসব ক্ষতি হচ্ছে শিশুর

অনলাইনে আর সব পণ্যের মতো মাতৃদুগ্ধও কেনা-বেচা বাড়ছে। মাতৃদুগ্ধের বোতল ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে অর্ডারের পরক্ষণেই। এ ব্যবসা শুরু হয়েছে বহু দেশে।

 

কিন্তু এতে যে শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে, সে সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে দিলেন বিজ্ঞানীরা। জানালেন, অর্থের বিনিময়ে খুব সহজে মিলছে মাতৃদুগ্ধ। কেনা হচ্ছে শিশুদের জন্য। আর এতেই সর্বনাশ ডেকে আনা হচ্ছে। কারণ, অনলাইনে বিক্রি হওয়া মাতৃদুগ্ধের বোতলে থাকছে নানা ধরনের অপকারী ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক। শিশুদের পক্ষে ক্ষতিকর নানা ধরনের রাসায়নিক, ওষুধ। এমনকি, এডস ভাইরাসও। থাকছে সিফিলিস ও হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসও।

বডিবিল্ডারদের জন্য অনলাইনে মাতৃদুগ্ধ বিক্রি করে ব্রিটেনে এক নারী মাসে ১০ হাজার পাউন্ড রোজগার করছেন। সম্প্রতি এমন খবর সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার পরেই এ ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এর বিপদ-আপদ সম্পর্কে জানাতে উদ্যোগী হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

 

কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সারা স্টিলে বলেছেন, ‘গোড়ার দিকে এইভাবে অনলাইনে মাতৃদুগ্ধ বিক্রির বিজ্ঞাপনে নিচে খুব ছোট আকারে হলেও এর ব্যবহারের বিপদ-আপদ সম্পর্কেও বিধিসম্মত সতর্কীকরণ করা হতো। এখন সেই সবও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে, যারা অনলাইনে এই মাতৃদুগ্ধ কিনছেন তারা জানতে পারছেন না, এগুলো সদ্যোজাতের পক্ষে কতোটা ক্ষতিকর।

 

কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, অনলাইনে কার বিক্রীত মাতৃদুগ্ধ কার কাছ থেকে সংগৃহিত হচ্ছে, তা জানার কোনো উপায় নেই। যার স্তন্যদুগ্ধ কেনা হচ্ছে তার শরীরে কোন কোন রোগ রয়েছে তা জানা সম্ভব হচ্ছে না। আর এটিই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে যাদের জন্য মাতৃদুগ্ধ কেনা হচ্ছে সেই সদ্যোজাতদের পক্ষে।

 

বিজ্ঞানীরা এও জানিয়েছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অনলাইনে বিক্রি হওয়া মাতৃদুগ্ধের কাঙ্ক্ষিত গুণমান বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা থাকছে না। তার ফলে, সেই মাতৃদুগ্ধ অবাঞ্ছিত ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়ায় ভরে যাচ্ছে।

 

 

ব্রিটেনসহ কয়েকটি দেশে মাতৃদুগ্ধ বিনামূল্যে দেওয়ার ব্যাঙ্ক রয়েছে। কিন্তু সেখানে তা দেওয়ার আগে নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে যেমনটা হয়।

 

এই সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই বলে অনলাইনে বিক্রি হওয়া মাতৃদুগ্ধ শিশুদের পক্ষে খুব বিপজ্জনক হয়ে উঠছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। অনলাইনে বিক্রি হওয়া মাতৃদুগ্ধে সাইটোমেগালোভাইরাস অথবা সিএমভি-ও থাকছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বিড়ালের দেহে থাকা এই ভাইরাস সদ্যোজাতদের পক্ষে খুবই বিপজ্জনক। তাদের দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জন্মের পর থেকেই দুর্বল করে দেয়। তার ফলে, জন্মের ছমাসের মধ্যে বা তার সামান্য পরেই নানা ধরনের জটিল রোগের শিকার হয়ে পড়ছে শিশুরা। এই মাতৃদুগ্ধে থাকছে গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাক্টেরিয়াও। যা শিশুদের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব ক্ষতিকর।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com